Ananya Podder

Classics Inspirational

3  

Ananya Podder

Classics Inspirational

আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা

আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা

8 mins
315


" সারাদিন কানের পাশে বকবক করো না তো মা !!... যাও এখান থেকে "

" একটু আমার কথা শোন্ মা | সারাদিন এই বন্ধ ঘরে তুই কী পাস, বলতো?? একটু তো ঘরের বাইরেও আসতে পারিস |"

" আমার ভালো লাগে না বাইরে বেরোতে | তুমি যাও না !! কেন বকাচ্ছ আমায় | যাও, চলে যাও | পরে এসো | "

গীতাদেবী আর কিছু বলেন না | বেরিয়ে আসেন মৌয়ের ঘর থেকে | গীতাদেবী ভয় পান | এ ভাবেই কী চলবে সব কিছু??

" হা ঈশ্বর, আমার মৌকে দেখো তুমি |"

গীতাদেবী মনে করেন, যে দিন প্রথম দেখেছিলেন মৌপিয়াকে | একটা কাঁচা হলুদ সালোয়ার কামিজে কী সুন্দরই না দেখাচ্ছিল ওকে | কলিং বেলের আওয়াজে দরজা খুলে কয়েক সেকেন্ডের জন্য হাঁ হয়ে গিয়েছিলেন |

মৌয়ের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ঋষি বলেছিল, " কী মা?? কেমন সারপ্রাইস দিলাম বলো !!! "

সেদিন মঙ্গল ঘট ছুঁয়ে মৌ প্রবেশ করেছিল শুধু গীতাদেবীর ঘরেই নয়, ও সেদিন ঋষির মায়ের হৃদয়ের ঘরেও জায়গা করেছিল ওর ব্যবহার দিয়ে |

ছোটোবেলা থেকেই ঋষিকে স্বাধীন চিন্তা ধারায় বড়ো করে তুলেছিলেন গীতাদেবী | ছেলেকে পুরুষ হওয়ার শিক্ষা না দিয়ে মানুষ হওয়ার শিক্ষা দিয়েছিলেন | ঋষি তার শিক্ষার অমর্যাদা করেনি কখনো | মায়ের মুক্ত মনের স্পর্শে সেও সদা প্রাণ চঞ্চল ছিলো, চিন্তাশক্তিতে ছিল আধুনিকতার ছোঁয়া |

তাই যেদিন ঋষির মুখে প্রথম মৌয়ের কথা শোনেন গীতাদেবী, সেদিনই তাকে দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন | গীতাদেবীর শ্বশুরবাড়ির লোকের সাথে গীতাদেবীর চিরকালই মানসিকতার ব্যবধান | বিশেষ করে ছোটো ননদ, মিতু, সুযোগ পেলেই খোঁচা টা, গুঁতো টা দিয়েই থাকে কথার জালে | গীতাদেবীর মিশুকে স্বভাবও তাদের কাছে লোক ঠকিয়ে নিজেকে বড়ো করার মতো | শান্ত স্বভাবের গীতা কখনো এই প্রকার লোকেদের বিরোধ করেনি | নিশ্চুপে সাদা ধ্বজা উড়োনোর পথেই হেঁটেছে চিরকাল |

ঋষি বুঝতো পরিবারে মায়ের অবস্থান | মায়ের এত বছরের সংসার জীবনের পরেও সংসারে পিসিদের মাতব্বরি সহ্য হতো না ঋষির | প্রতিবাদ করতে চাইলেও মায়ের কাছে বাধা পেতো | ঋষি বুঝতো, সবার মাঝে থেকেও তার মা কত একা !!!

তাই মৌপিয়াকে দেখে ঋষি বুঝেছিলো, যে, মৌ হয়তো বা কোথাও মায়ের বন্ধু হয়ে উঠতে পারবে | হয়েও ছিল তাই | বিয়ের আগেই ঋষির বাড়িতে নিরন্তর যাতায়াত ছিল মৌপিয়ার, সেটা ঋষির সাথে দেখা করার জন্য নয় | কারণ ছিল মামনি, ঋষির মা | হ্যাঁ, ওই নামেই ডাকতো মৌপিয়া গীতাদেবীকে | কত ছুটির দিন মৌ, মা আর মামনিকে নিয়ে সিনেমা দেখে, বাইরে খাওয়া দাওয়া করে কাটিয়েছে | এমনও হয়েছে, ঋষি শহরের বাইরে থাকলে, গীতাদেবী বাড়িতে মৌয়ের প্রিয় কিছু বানালে নিজেই দিয়ে আসতেন মৌয়ের বাড়িতে | অফিস থেকে এসে খেয়ে মামনিকে জানাতে হতো ফোন করে, কেমন হয়েছে রান্না |

এই ছিল গীতা আর মৌপিয়ার সম্পর্ক | মৌয়ের বাড়ি আসা নিয়ে মিতু কম কথা শোনায়নি গীতাকে | গীতা সব হাসি মুখে শুনতো | মাঝে মাঝে মৌও দু চারটে কথার উত্তর দিতে চাইতো, কিন্তু মামনি আটকে দিতো | গীতা বলতেন, " বাড়ির মেয়ে ওরা ; বাড়ির কোনো বিষয় ওদের খারাপ লাগলে ওদের বলতে দে না | উত্তর করিস না | বৌ হয়ে এসে পরে কোমর বেঁধে ঝগড়া করিস, এখন না | বুঝলি?? "

মৌপিয়া গীতাদেবীর বাড়িতে বৌ হয়ে আসার পর গীতার জীবনটাই বদলে যায় | অষ্টমঙ্গলায় মায়ের কাছে একা যায়নি | বাবা মানে ঋষির বাবা কর্মসূত্রে সাতদিনের জন্য বাইরে যাওয়ায় মৌ জোর করে মামনিকে নিয়ে গিয়েছিলো ওদের সঙ্গে | গীতা তো ভীষণ লজ্জা পেয়েছে | অনুপমা মানে মৌপিয়ার মা বলেছে, " তাতে কী হয়েছে | অতো লোকজনের পরে হঠাৎ ওই ফাঁকা বাড়িটা তোমার ভালো লাগবে নাকি?? তার চেয়ে এই ভালো, তুমিও চলে এসো মৌ আর ঋষির সাথে | "

মিতু আর নিতু বলেছিল, " এটা একটু বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে গেল নাকি বৌদি !! একেবারে ছেলের শ্বশুরবাড়িতে এভাবে নির্লজ্জের মতো হানা দেওয়া, তাও আবার ছেলের সদ্য বিয়ের পরে |"

" দেখছো তো তোমরা, মেয়েটা কিছুতেই ছাড়ছে না | এমন জেদ না মেয়েটার | কারোর কথা যদি শোনে | "

" তোমার নিজের না হয় কোনো সম্মান নেই, তাই বলে কী আমাদের এই বাড়িরও কোনো সম্মান নেই নাকি?? "

" তুমি নিজে যেমন ধিরিঙি, বউও এনেছো সেরকম আরেক ধিরিঙি | "

" আমাকে যা বলতে চাও বলো, ওই মেয়েটাকে কিছু বলো না | মৌ তো তোমাদের ঋষিরই বউ | আসলে ও আমাকে এত ভালোবাসে, যার জন্য এই রকম আবদার করছে |"


" রাখো তো তোমার ওইসব আবদার | এগুলিকে না ; আবদার নয়, আদিখ্যেতা বলে | মা যদি বেঁচে থাকতো, তবে বউ মানুষ হয়ে এ রকম ধিরিঙ্গিপনা করার জন্য কেমন শাস্তি পেতে, তুমি জানো? "


গীতা ভাবেন, " সত্যিই তো, তোমাদের কাছে তো চিরকাল বউ হয়েই থেকে গেলাম | মানুষ আর হলাম কৈ?? "

স্বামীর কাছে গিয়ে গীতা বললেন ওদের দুটিকে বোঝাতে | কিন্তু স্বামীও যখন বললেন, " যাও না ; ঘুরে এসো না ওদের সাথে | এত করে বলছে যখন | " তখন আর গীতার কোনো ওজর আপত্তি চলল না |

সেবার মিতু, নিতুর হাজার গঞ্জনা শোনার পরেও গীতা গিয়েছিলো মৌয়ের বাড়িতে | এ ভাবে ভালোই কাটছিলো দিনগুলি | কিন্তু প্রথম ছন্দপতন ঘটে যখন মৌপিয়ার মা ক্যান্সারে মারা যায় | সে সময় খুব মানসিক ভাবে ভেঙে পরে মৌ | তখন গীতাই মা হয়ে সামলায় সদ্য মা হারা মেয়েটাকে | নিজের মাতৃ স্নেহে সে একদিন মৌয়ের কাছে মামনি থেকে মা হয়ে উঠল |

মৌয়ের বর্তমান মা মৌকে অফিস যাওয়ার সময় মাঝে মধ্যে খাইয়ে দেয়, জন্মদিনে ঋষির উপহার দেওয়ার আগে নিজে উপহার দিয়ে দেয়, নতুন শাড়ী কিনলে মৌকেই আগে পড়াবে ; মৌ পড়তে না চাইলেও শুনবে না গীতা - পড়তে তাকে হবেই | ভালোবাসার জেদে মা মেয়ের ভালোই লড়াই চলে, আর সেই লড়াইকে প্রাণ ভরে উপভোগ করে ঋষি আর ওর বাবা |

আনন্দের মধ্যে আরও আনন্দ আসে যখন মৌয়ের প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট টা লাল সংকেত দেয় | বাড়িতে মৌয়ের প্রতি আদর যেন আরও দ্বিগুন বেড়ে গেল | মৌ বলে, " জানো মা, আমার আরেক কলিগও প্রেগন্যান্ট | but ওর ইন -লস ওর অতো যত্নই করে না | একটু বেশি ঘুমোয় বলে সব সময় নাকি উপহাস করে | "

গীতাদেবী মজা করে বলেন, " সে ইন -লস রা ওরকম ব্যবহার করতেই পারে | কিন্তু আমি তো তোর মা রে | মা হয়ে মেয়েকে এই সময়ে কষ্ট দিই কী করে, বল?? "

" অফিসে আমার অন্যান্য বন্ধুরা কত শাশুড়ির নিন্দা করে, জানো?? ..... আমি আমার শাশুড়ির একটাও নিন্দা করতে পারিনা | যার ফলে ওদের দলে আমি কেমন বেমানান হয়ে থাকি | "

" বেশ তো, তুইও না হয় আমার নামে দু চারটে নিন্দে করে দিবি | অসুবিধা তো নেই কিছু | "

" কী যে বলো মা !! তোমার নামে নিন্দে করলে যে ভগবানও ক্ষমা করবেন না আমায় !! " বলে গীতাকে জড়িয়ে ধরে মৌ|

ভগবান কিন্তু ক্ষমা করেননি মৌকে | মৌয়ের কনসিভের তিন মাসের মাথায় যখন প্রথম ইউ.এস. জি. করা হয়, তখন তার ওভারিতে একটা বড়ো সরো টিউমার নজরে আসে ডাক্তারের | ডাক্তার ঠিক করেন, টিউমারটাকে রেখেই বাচ্চার ডেলিভারি হবে | হয়ও তাই | মৌপিয়া একটি মিষ্টি পরীর মা হয় | ওই সময়েই বাচ্চা হওয়ার পরে মৌয়ের টিউমার বাদ দেওয়া হয় | সাথে বাদ দেওয়া তার ওভারি দুটোকেও | তাতে মৌ, ঋষি, বা বাড়ির আর কারোরই কোনো দুঃখ ছিল না | ওভারি বাদ গিয়েছে তো কী আছে?? এখন বেশিরভাগ দম্পতিই তো একটি সন্তানে খুশি থাকে | ঋষি মৌও পরীকে নিয়ে আনন্দে বেঁচে থাকবে | পরীকে সুন্দর করে মানুষ করে তুলবে |

কিন্তু ওই যে !! ভগবান অলক্ষে ক্ষমা করেননি মৌপিয়াকে | চারমাসের পরী কঠিন জ্বর নিয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি হলে বিভিন্ন টেস্টের নামে বেশ কয়েক ঘন্টা তাকে খেতে দেওয়া হয় না | ফল, পরী, পরীর দেশে যাত্রা করে | আর শূন্য হয়ে পড়ে মৌয়ের কোল |

এই আঘাত মেনে নিতে পারে না মৌ | ঈশ্বরের এই পরিহাস তাকে খন্ড বিখণ্ড করে দেয় | সন্তান শোকে বিভোর হয়েও সে নিষ্ঠুর সমাজ থেকে মুক্তি পায় না | এই সমাজ মৌ ঋষির দুঃখকে কমাবার জন্য আসে, আর মনে করিয়ে দিয়ে যায় যে মৌ আর কখনো মা হতে পারবে না | মৌয়ের মানসিক অবসাদ এমন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়, যে মৃত্যুও তার কাছে সহজ মনে হয় |

এখন গীতা দেবী সারাক্ষন মেয়েটাকে চোখে চোখে রাখেন | অফিস তো অনেক দিন আগেই ছেড়ে দিয়েছে, এখন সারাদিন নিজেকে ঘরবন্দী করে রাখে | কারোর সাথে কথা বলে না | যেই মেয়েটা সারাদিন বকর বকর করে কান মাথা খেয়ে ফেলতো, আজ সেই মেয়েই মুখে কুলুপ এঁটেছে | ভালো করে খায় না, মাথা আচড়ায় না | নিজের প্রতি যেন প্রবল অনীহা !!


কিন্তু যেখানে ঈশ্বর কিছু করতে পারেন না, সেখানে তিনি মাকে পাঠান, সন্তানের জীবন সুন্দর করতে | তাই আজ ঋষি বাড়ি ফিরে আসলে প্রস্তাবটা ছেলের কাছে রাখেন গীতাদেবী |

" কিন্তু, সবাই কী বলবে মা? "

" সবাই কী মৌয়ের দুঃখকে ভাগ করে নিতে আসছে?? সবার কথা ভাবিস না | আগে মৌয়ের কথা, নিজের কথা ভাব | এ ভাবে চলতে থাকলে আমরা বোধহয় একদিন মৌকে হারিয়েই ফেলবো | সময় থাকতে সিদ্ধান্ত নে বাবা | "

" কিন্তু..... "

" আবার কিসের কিন্তু? আজ মৌয়ের ভালো ছাড়া আর কিছু ভাবার সময় নয় তোর |"

" বাবা মানবে কী?? "

" তোর বাবাকে এত বছরে যত টুকু চিনেছি, তাতে তোর এই সিদ্ধান্তে তিনি খুশিই হবেন |"

এরপর মৌ আর ঋষি দুজন মিলে 'আপনজন' এ যায় একটা ছোট্ট পরীর খোঁজে | ছোট্ট পরীর সন্ধান মৌকে বদ্ধ ঘর থেকে বের করে আনে | নতুন স্বপ্ন দেখার আশায় নিজেকে একটু একটু করে সাজাতে থাকে মৌপিয়া | মৌপিয়ার এই প্রত্যাবর্তনটাই তো চেয়েছিলেন গীতা দেবী |

কিন্তু সমাজ বড়ো নিষ্ঠুর আর রূঢ় | মানুষের কষ্টকে উপশম করার বদলে তাকে আরও ক্ষত দেওয়াই তার কাজ | এমন একটা সমাজের প্রতিভূ হলো ঋষির দুই পিসি, মিতু আর নিতু | একটা অনাথ আশ্রমের বাচ্চা এই বংশের উত্তরাধিকারী হবে, এটা কখনোই দিতে হওয়া যায় না |

আজ মৌ আর ঋষি গিয়েছে পরীকে ঘরে ফিরিয়ে আনতে সব পরীদের দেশ থেকে | সকাল থেকেই পরীর আগমনের জন্য গীতাদেবী নিজে হাতে বাড়িটাকে পরীর জন্য পরীলোক করে তুলেছেন | বার বার যেন আজ নিজেকে হারিয়ে ফেলছেন মনের আনন্দে | পরীলোকে ছুটে যাচ্ছে মন অচিন পাখি হয়ে |

এমন সময় কলিং বেলের আওয়াজে ঋষির মা ছুটে গিয়ে দরজা খোলেন | কিন্তু পরীর বোধহয় এখনো আসতে একটু দেরি আছে | সেখানে দাঁড়িয়ে আছে মিতু আর নিতু |

" ও তোমরা !! আমি ভেবেছিলাম আমার পরী !! "

" আর আদিখ্যেতা করো না বৌদি | কার না কার পাপ বাড়িতে ঢোকাচ্ছো, তোমার লজ্জা করে না | "

" শিশু ভগবান হয়, পাপ নয় | আর যার স্পর্শে মৌ আবার পুনর্জীবন পাচ্ছে, সে কখনোই পাপ হতে পারে না |"

" মা বেঁচে থাকলে তুমি এটা করতে পারতে?? "

" তিনি বেঁচে থাকলে কী পারতাম আর কী পারতাম না আমি জানিনা | তবে তিনি যখন নেই, তখন আমার সিদ্ধান্তটাই শেষ কথা নয় কী?? "

" তুমি এই অনিষ্ট করলে, আর তাহলে এ বাড়িতে আমাদের আসা হবে না |"

" বেশ তো ; এসো না তাহলে | তোমাদেরও বয়স হয়েছে | সংসার বড়ো হচ্ছে | আর কতদিন বাপের বাড়ি আসবে বলো?? সেই বেশ ভালো... ছেলে -ছেলে বউ, মেয়ে -জামাই, নাতি নাতনি নিয়ে ভালো থাকো | "

গীতাদেবীর মুখে এ হেনো কথা কস্মিন কালেও শুনবে বলে ভাবেনি ওরা | আর ওরা কেন, গীতাদেবী নিজেই কী জানতেন যে কোনো কিছু পাওয়ার আনন্দে নিজের মন যে এ ভাবে হারিয়ে যেতে চাইবে | এই ভাবে মুখে ফুটে উঠবে প্রতিবাদের ভাষা |

আজ পরীর প্রত্যাবর্তন | সেই ছোট্ট পরীর পাদস্পর্শে এই বাড়ি আবার হাসবে, আবার মুখর হবে | আবার মৌ গলা ছেড়ে গান গাইবে, "কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা মনে মনে |" সেই সুরের সাথে গীতা মায়ের মনও আজ হারিয়ে যাবে - দূরে, সুদূরে, আরও দূরে | 


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Classics