তুই নারী
তুই নারী
তুই কি জানিস তুই সেই নারী—
যে নিজের গর্ভে ধারণ করিস,
আগামী প্রজন্মের বীজ।
তুই কি জানিস তুই সেই নারী—
যে নিজের স্তন্যপান করিয়ে,
নিবারণ করিস সন্তানের ক্ষুধা।
তুই কি জানিস তুই সেই নারী—
যে বেহুলা হয়ে যমের দুয়ার থেকে,
ফিরিয়ে এনেছিস লক্ষীন্দরের জীবন।
তুই কি জানিস তুই সেই নারী—
যে দ্রৌপদী হয়ে নিজের বস্ত্রহরণের
চরম লজ্জার পরও ধৃতরাষ্ট্রের কাছে চেয়েছিস,
দুর্যোধনের দাসত্ব থেকে স্বামীদের মুক্তি।
তুই কি জানিস তুই সেই নারী—
যে সীতা হয়ে হাসিমুখে বেছে নিয়েছিস,
স্বামীর সাথে চৌদ্দ বছরের বনবাস।
তবুও তোকে জোরে হাঁটতে নেই,
জোরে কথা বলতে নেই, হাসতে নেই,
খেতে বসতে নেই পুরুষের আগে।
বারবার নিজের সতীত্ব প্রমাণের জন্য,
তোকে দিতে হয় অগ্নিপরীক্ষা।
নিজেকে বেআব্রু করতে নেই,
যতই না রাতের অন্ধকারে,
তোর স্বামী হওয়ার দাবীতে কেউ,
আধিপত্য জমাক তোর শরীরে।
তুই কি জানিস তুই সেই নারী—
যে স্নেহময়ী, সর্বংসহার সাথে সাথে,
শক্তিময়ী, অসুরনাশিনী,
আদিশক্তি মহামায়ার রূপ।
নতুন দিনের নতুন সূর্যের আলোয়,
নতুন তেজ সঞ্চারিত হোক তোর অন্তরে।
দুহাতে আঁকড়ে ধর নিজেকে।
প্রতিবাদ ও লড়াই দিয়ে,
বাঁচিয়ে রাখ নিজের অস্তিত্বকে।
বাঁচিয়ে রাখ তোর মধ্যে সুপ্ত থাকা,
আগামী প্রজন্মের অস্তিত্বকেও।
তুই জন্মদাত্রী, প্রেয়সী, সখী, সহোদরা,
তুই যে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ সম্পদ,
তুই যে শক্তি, তুই যে নারী।