সোঁদা গন্ধ
সোঁদা গন্ধ
সময়ের সাথে সাথে জীবন থেকে কি করে যেন,
নিঃশব্দে দূরে সরে গেছে মাটি ধীরে ধীরে।
আগেকার মতো মস্ত সেই উঠোন নেই আর,
নেই বারান্দা, সমস্ত ঘরের অর্দ্ধেক জায়গা জুড়ে।
খর দাবদাহে মাঠ ফেটে যখন হতো চৌচির,
চৈত্রে তখন উঠোনটাও খটখট করতো শুকিয়ে,
বৃষ্টির আশায় ব্যাঙের বিয়ে দেবার অজুহাতে,
হৈ হৈ করে "মেঘ দে,পানি দে" গান করতে করতে,
বাড়ি বাড়ি ছাদা বা সিধা নিতে যেতো ছেলেমেয়ে।
আর আশ্চর্য এটাই! যে তার পরপরই হুড়মুড়িয়ে,
হঠাৎ করেই কালবৈশাখি ঝড় আসতো ধেয়ে।
নিদেন পক্ষে চড়বড়িয়ে বড় বড় ফোঁটায় বৃষ্টি কিছুটা,
মাটির উঠোন থেকে উঠতো ভাপ, সোঁদা গন্ধ নিয়ে।
বুক ভরে, শ্বাস নিতে গিয়ে ভরে উঠতো মনটা,
মাটির সাথে সাথে আজ সোঁদা গন্ধটাও,
এমনি করেই কখন যেন গেছে হারিয়ে।
গাছেদের কল্যাণে বৃষ্টি এখন আসে বেশ তাড়াতাড়ি,
মাঠে ঘাটেও যেন আজকাল সবুজের বাড়াবাড়ি।
কৃষকের ফসল ফলছে আগের চেয়ে অনেক ভালো,
ওদের ঘরেও ঢুকেছে বিদ্যুতের আলো।
সোঁদা গন্ধটা থাকলো কি গেল কি আসে যায় !
খেয়ে লোকের জীবন বাঁচুক, মনের খবর রাখা দায়।
ক-জনের মনেই বা ঐ সোঁদা গন্ধের সুবাস টা রয়েছে,
ক-জন আর চিনেছে বা অনুভব করেছে !
তবু মাটি ভালো থাকুক, নাহয় হৃদয় ফাটুক,
যাক্ না হৃদয়টা হয়ে ফাটাফাটি,
নাহয় একটু রক্তক্ষরণ হবে মনের ভেতরে ভেতরে,
কিন্তু তাতে, রক্ত কমল ফুটলেও ফুটতে পারে।
প্রত্যেক মানুষের ঘরে ঘরে অন্ন জুটলে,
তবেই মানুষের মন আনন্দ করতে পারে ফুল ফুটলে।