সংস্কৃতি নাকি বেড়ি
সংস্কৃতি নাকি বেড়ি
"যেখানে আসিয়া এক হয়ে গেছে সব বাধা-ব্যবধান
যেখানে মিশছে হিন্দু-বৌদ্ধ-মুস্লিম-ক্রীশ্চান।
গাহি সাম্যের গান!............
.........................
তোমাতে রয়েছে সকল ধর্ম, সকল যুগাবতার
তোমার হৃদয় বিশ্ব দেউল , সকল দেবতার।"
কাজী নজরুল মুসলিম হয়েও লেখেন শ্যামাসঙ্গিত,
রামকৃষ্ণ মূর্তি পূজা করলেও প্রিয় তাঁর জীবজগত।
বহু যুগ ধরে বহু দেশ থেকে মানুষ এসেছেন বাঙলায়,
তাঁদের নানা দেশের সংস্কৃতি, এসে মিশেছে হেথায়।
নতুন করে নব রূপে সেজেছে তা নতুন ভাবধারায়।
মানুষের নানান ধর্ম ও জীবনযাত্রার বিভিন্ন ধরণ,
বিচিত্র অভ্যাস ও জীবন প্রনালীর নানা উপাদান,
সবকিছু মিলে মিশে ঘটেছে মানসিক আদান-প্রদান!
বহিরাগত উপকরণের সাথে মিশে দেশজ উপাদান,
মিলন মেলায় যেন হয়েছে সংস্কৃতির সমন্বয় সাধন।
বাংলার মানুষের জীবনধারা ও সংস্কৃতির এই কর্ষন,
মানুষের মনে করেছে যেন মানবধর্মের বীজ বপন ।
বরাবর তথাকথিত শাস্ত্রজ্ঞ সমাজপতিদের নিরিখে,
বাংলায় বিনাতীর্থে ভ্রমনকেও দেখা হতো নিচু চোখে।
শুধুমাত্র এই কারণেই প্রায়শ্চিত্য ছিলো যে নির্ধারিত,
আসলে শুরু থেকে বাংলার মানুষ ছিল সংস্কারমুক্ত।
হিন্দু,জৈন,বৌদ্ধ,পার্শী,মুসলিম সকলেই হেথা স্বাগত!
তবে মৌলবাদীদের চেয়ে এখানে সুফী কিংবা বাউল,
মনে সহজেই জায়গা করে নিয়েছে, পেয়েছে আমল।
অনেক বাঙালিই আরবী, ফার্সী বা সংস্কৃত, ল্যাটিন,
ফরাসী,জার্মানি,ঈংরেজীর সাথে সাথে শিখে নিতেন।
শুধু তাই নয় , এসেছে নতুন নানা খাবারের রেসিপি,
পরিমার্জিত হয়েছে তারাও, ছাপা হয়েছে নানা লিপি।
পাল্টে গেছে দিনে দিনে পুরুষ ও নারীদের বেশভূষা,
নানাবিধ পরিধান যুগিয়েছে মনে নানা রূপ আশা।
আজও পথে ঘাটে দেখা যায় বাংলার বিবাহিত নারী,
হাতে শাঁখা-পলা, পরনে এখনও কারো কারো শাড়ি।
কেন যেন কেউ কেউ শাঁখাকেও আজ ভাবে বেড়ি !