অনাথের আর নামের কি দরকার ?
অনাথের আর নামের কি দরকার ?


চায়ের দোকানে কাজ করে খায় বুড়ো ,
বয়েস তার এখন সবে আট |
জানিনা কে দিয়েছে এমন নাম ,
অনাথের আর নামের কি দরকার ?
খেতে দুবেলা দিচ্ছে তো সরকার |
বুড়ো ভীষণ বাধ্য কর্মচারি ,
সকাল সাতটায় হাজিরা জরুরি |
নাহলে আবার মালিকের মুখ ভাড় ,
কুড়িটা টাকা দিনে তার রোজগার |
বুড়ো কিন্তু অংকতে বেশ ভালো ,
হিসেব করে যদিও কর গুনে ,
অনাথের তো এটাই গর্বের ,
বুড়ো তো কখনো যায়নি ইস্কুলে |
দুপুরবেলা এক ঘন্টা ছুটি ,
বাবুদের তখন ভাত ঘুমের বেলা ,
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে আবার ভীড় ,
বুড়ো তো বোঝেনা সময়ের মায়াবি খেলা |
বুড়ো তো চেনেনা রঙিন পৃথিবীটাকে ,
আধ পেটা খেয়ে বেঁচে থাকাটাই বড় ,
ছোট্ট ছেলেটার হাতে পড়েছে কড়া ,
অনাথের কি আর এতে দুঃখ করতে আছে ?
প্রশ্ন এসেছে বুড়োর মনে বহুবার ,
সে কি একাই অনাথ গোটা পৃথিবীতে ?
উত্তর তাকে দিতে পারেনি কেউ ,
কেউ কি জানেনা তার পরিবারের খোঁজ ?
এইভাবেই কেটে গেছে দশটা বছর ,
বুড়ো আর করেনা আগেকার চিন্তা ,
বুড়ো আর করেনা চায়ের দোকানে কাজ ,
ভিড় বাসে পকেট কাটাই সোজা |
সমাজ চেনালো অনাথের পরিচয় ,
সমাজ হারালো নিষ্পাপ দুটো চোখ ,
কঠিন বাস্তব ঢোক গিলে নিয়ে বুড়ো ,
পা বাড়ালো অন্ধকারের পথে |
কাল যা হবে তাতে দায়ী হবে না বুড়ো ,
দায়ী হবে আমাদের রাজনীতি ,
ছেলেটা যদি সহানুভূতিটুকুও পেতো ,
হয়তো এমন বদলে যেত না বুড়ো !