সংগ্রাম বেঁচে থাকে
সংগ্রাম বেঁচে থাকে
আমি রোজ দেখি তার ঝুলে থাকা
নতজানু দেহের ভারে,
অনিশ্চিত কংক্রিটের ফাঁকে জন্ম নেওয়া
লোহার অন্ধকূপে আটকে থাকা
তার বেওয়ারিশ দেহের ভগ্নাবশেষ,
কোনোরকমে হাত পা ছুঁড়ে বেরিয়ে এসে
তার অন্তিম শ্বাস নেওয়ার প্রচেষ্টা,
মেঘের ভারে গা বেয়ে নেমে আসা
টিপ টিপ রোদনের শব্দ,
যখন সে আঁকড়ে ধরে গোধূলির শেষ আলোটুকু
আমি দেখি তার শুকিয়ে যাওয়া জীর্ণ পাতার খসে পড়া।
তবু জেনো জন্ম নেয় প্রাণ তারই গভীরে
ফুলের কুঁড়ি দোলে একেবারে নুইয়ে পড়া ডালে,
কচি পাতায় ধরে সবুজ রঙ,
নতুন জীবনের আহ্বান সে শুনিয়ে যায় কানে কানে।
কারণ, সংগ্রাম বেঁচে থাকে
উত্তপ্ত রক্তকণিকায় আর নিষিক্ত ভ্রুণে,
সংগ্রাম বেঁচে থাকে, অভুক্ত শরীরের
পাকস্থলির জারক রসে
প্রতিটি স্বেদগ্রন্থিতে আর শূন্য মাতৃজঠরে,
সংগ্রাম বেঁচে থাকে নিষিদ্ধ পল্লীতে
ধর্ষিতার শাড়ির আঁচলে,
বিচারের প্রহসনে আর আত্মহত্যার গ্লানিতে,
পাল্টায় শুধু মুখাবয়ব, নাম চরিত্র ঠিকানা।
তবু সে বেঁচে থাকে
মৃতবৎ শরীরের নিঃশ্বাসে প্রশ্বাসে,
রাজনীতির প্রহসনে আর
সভ্যতার চেতনায়।।