সম্পর্ক
সম্পর্ক
এক বৌ, তার বরকে একটা কৌটো পাঠিয়ে ছিলো,
তাতে না ছিলো পরোটা-আলুর দম, না ঘটি-গরম ।
পতি অন্ত প্রাণ, নবকিশোরীর হয়েছিলো অভিমান !
হাতের শাঁখা নিজেই ভেঙে করেছিলো খানখান।
শাঁখার ভাঙা টুকরোগুলো কৌটোয় পুরে, পাঠিয়েছিলো স্বামী যদুর ঘরে।
যদু জালালুদ্দিন মহম্মদ শা হয়েছে, মেনে নিয়েছে।
কিন্তু তাইবলে আশমানতারা কে বিয়ে !
ধাওয়া করে, শাশুড়ি ত্রিপুরাদেবীকে সাথে নিয়ে।
ভাতুয়ার রাজা গনেশের স্ত্রী ত্রিপুরাসুন্দরী দেবী!
রাজা তখন নেই, তবু তার তেজ কিছু কম নয়।
জালালুদ্দিন-আশমানতারা দুজনেই পেয়েছিল ভয়।
অথচ সব জায়গায় তো তখন জালালুদ্দিনের প্রতাপ,
বিদেশের রাজাদের সাথেও ছিলো তার ভাব।
আফগানিস্তান এর হেরাত, চিন, ইজিপ্ট,
সকলের সাথেই ছিলো সুসম্পর্ক, সুলতান নন কপট।
বাণিজ্যের খাতিরে বহু আগেই করতোয়ার জল সরাতে,
শুরু হয়েছিলো কোদাল দিয়ে খনন,
উদ্দেশ্য নৌকা গমনের জন্য কাটা এক বড় সড় খাল।
যতো মাটি উঠেছিলো তাই দিয়ে রাজপথ বানালেন ,
গুরুর নামে পথটিকে উৎসর্গ করলেন ।
"মুকদমের আল পথে দিল্লী যাওয়া যায়"
রায়গঞ্জে এখনও প্রচলিত এই প্রবাদ।
বক্তিয়ার খিলজী এই পথেই যে এসেছিলেন !
সৈন্য সামন্তদের এপারে আসতে,
কুলিক নদী একটুও সাধেনি বাদ।
খরার দিনে যে নদী পার হওয়া যায় হেঁটে হেঁটে,
বেচারা কুলিক চুপ করে ছিলো, কথা কয়নি মোটে।
ব্রাহ্মণেরা তো ঠকিয়েছিলো যদুকে,
ষাঁড়ের ওজনের সোনা নিয়ে কথার খেলাপ
করেছিলো রাজা গনেশের মৃত্যুর পরেতে।
ভুলেছিলো বোধহয় তখন তারা,
প্রায়শ্চিত্য যে করিয়েছিলো হিন্দুমতে!
তাই তো জালালুদ্দিন হয়ে উঠেছিলো শেষে ত্রাস!
বাঙলা, বিহার, উড়িষ্যার বামুনেরা জানে ইতিহাস।
তবে মক্কায় গেছে বাঙালির টাকা দান হিসেবে,
একলাখিতে মক্কার আদলে হয়েছে তৈরী মসজিদ।
হিন্দু বাঙালিই তৈরী করেছে এক শক্ত পোক্ত ভিত।
দনুজমর্দনের বাঙ্গালা শহর ও বন্দর!
সে তো তেঁতুলিয়া নদী কবেই গ্রাস করেছিলো।
বঙ্গ তো আগেই ছিল, অনেক জায়গাতেই,
কুড়ি গজ চওড়া দশ গজ উঁচু আল পথ তৈরী হলো।
বঙ্গ র সাথে আল জুড়েই আবার, হলো বাঙ্গাল!
জালালুদ্দিন এর সু কার্যের জোরেই
বাঙ্গালা নামটি শেষে পুনরায় পরিচিতি পেলো।
