রোমানিয়ার দিনগুলোতে
রোমানিয়ার দিনগুলোতে
রোমানিয়ার প্রচন্ড ঠাণ্ডার দিনগুলো আমার কাটত প্রুট নদীর কাছেই,
থিওডোরা কাঁপতে কাঁপতে আমার পশমে ঢাকা হাত ধরে বলত,
‘তুমি এত নদী দেখ কেন? এতে দেখার কি আছে?’
‘তুমি বৃষ্টি ভালোবাসো না? জল? ভালো লাগে না তোমার?’
‘হুম, তেষ্টা পেলে তো বটেই.....
থিওডোরা ট্যাক্সি চালাতো। থাকত আশেপাশের কোন শহরতলীতেই।
ওকে বোঝানো যাচ্ছিল না প্রুট কিভাবে দানিয়ুব নদীর মুখে চুম্বন করে।
(তবে) থিওডোরা চুম্বন বুঝত, (যদিও) নদী বুঝত না।
একেক দিন এমন গেল, যখন সারারাত কবিতা শুনিয়েও ওকে তুষ্ট করতে;
পারি নি, বুঝতাম থিওডোরা বৃষ্টি ভালোবাসে না। তাই ওর তেষ্টা অনেক।
ডেলিটিন থেকে নোভোসেলিৎশিয়া অবধি ওর সাথে ঘুরেছি অক্লান্ত।
দুকামরার ঘরে রাত্রিবাস, নিশিযাপন.... প্রুট নদী জানত সবটাই।
‘জানো আমাদের গ্রামের বাড়িতে মুড়ি খেতে খেতে বৃষ্টি দেখি আমরা’
এবার থিওডোরা চুপ করে ওর নীলচে চোখের তারা উপহার দিল।
রোমানিয়ার শেষ দিনে ওর নরম চুল প্রশ্ন ছুঁড়ে দিল, -
‘যদি তুমি কবিই, তবে নদী দেখ কেন?’
বুঝলাম থিওডোরা নদী চায়নি, নিজেই বৃষ্টি হতে চেয়েছিল।

