পিছনের সিট
পিছনের সিট
বাইকের পিছনের সিটকে আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম - তুমি পিছন দিকে কেন থাকো?
আমার দিকে অবাক বিস্ময়ে তাকিয়েছিল সে-
জানতে চেয়েছিল এমন অদ্ভুত প্রশ্নের কারণ।
আমি মুচকি হেসে নিজের বুদ্ধিমত্তার প্রমাণ দিতে চেয়েছিলাম তাকে।
কিন্তু সে বারবারই ধরে ফেলেছে আমার অজ্ঞতা।
সে আমায় যতবার স্পর্শসুখ দিতে চেয়েছিল, সন্তর্পণে এড়িয়ে গেছি
পিঠে হেলান দেবার জন্য যে একটা অবলম্বন খুঁজতাম, তা আর জানাতে পারিনি তাকে।
কারণ এই অবলম্বনটা তখনই খুঁজতাম, যখন ক্রশিংএ আমার দিকে একজন ভিখিরি হাত বাড়াত-
কিছু দেবার বদলে বাইকের খালি সিটটায় তুলে নিতাম তার বিচারহীন অন্ধত্ব।
তাকে দেখে আমিও অন্ধ হবার কথা ভেবেছি বারবার-
পিছনের সিটে হেলান দেবার খুঁটিটাকে বলতামও সেই কথা
কিন্তু আমার ভালনারেবল থিয়োরেমকে বারবার নাকচ করে দিত সে
বরং সে বলতো,
আমি অন্ধ হয়ে গেলে সিগনালে ঘুণের জমে যাবে ঘুণের বাসা।
সে মনেপ্রাণে বিশ্বাসও করত এই দৃষ্টিসুখটুকু।
আজকে আবার বাইকের সিটটাকে প্রশ্ন করলাম
আজ কাকে বইতে ইচ্ছে করছে তোমার?
সে কোনো উত্তর দিলো না-
পরিবর্তে আমার হাতে ধরিয়ে দিল একটা মৌন মিছিলের নোটিশ-
মৌনতাকেই দাবী ধরে নিয়ে বরাবর বাইক চালিয়েছি গন্তব্যের দিকে।
আজ আবার সিটটা অবাক চোখে প্রশ্ন করে-
আমি আসলে পিছনের সিটে কার স্পর্শসুখ চাই?
উত্তরের পরিবর্তে তার হাতে ধরিয়ে দিলাম অনির্দিষ্টকাল ধর্মঘটের হলফনামা।