পান
পান
অগ্নি সাক্ষী, পুরোহিতের মন্ত্রপাঠ, পংক্তিভোজন,
ভিয়েন, সানাই আর বাড়ি ভরা যত আত্মীয় স্বজন।
সবার মুখেই ছিল আলো, লাইট যদিও একটু কম,
নানারকম কথা বার্তায় বিয়ে বাড়ি হতো সরগরম।
কেটে আনা আস্ত কলাগাছ মাটির উঠোনে পোতা,
রঙিন কাগজের শেকলে লাগানো হতো আমপাতা।
পাড়ার মেয়েরা সকালে ফুল তুলে বসাতো ফুলমেলা,
বর ও কনের জন্যে ভালোবেসে বসে গাঁথতো মালা।
সব এয়োরা মিশে দেশী ঢাক ঢোল সানাইয়ের দলে,
গঙ্গাকে নিমন্ত্রণ করতে যেতো নদী বা পুকুরের জলে।
পেতলের কলসি ও ঘটিতে করে আনতো জল ভরে,
একটা মাটির ভারে করে সোহাগ জল রাখতো ধরে।
বিয়ের পরে বাসর রাতে কড়িখেলা হতো স্ত্রী আচারে,
মুকুটের টুকরো ছিঁড়ে সোহাগজল ঘুরিয়ে দিত ছেড়ে।
এ পরীক্ষা, বর না কনে কে বেশী ভালোবাসবে পরে!
কনে দিতো ধান ছড়িয়ে বসে শীতল পাটির উপরে,
বর খুঁটে খুঁটে ধান তুলে রাখতো ঢেকে এক ভারে।
দেখা, বর কেমন সব গোছাতে পারে পরিপাটি করে,
মনোমালিন্য, ঝগড়া পারবে কি ঢেকে রাখতে,
কোনো রকম অশান্তি পারবে কি ধামা চাপা দিতে!
এতো নিয়মের ফাঁকে ফাঁকে কখন যে জুড়তো হৃদয়,
ঠিক সেই ক্ষণটি, সকলের পক্ষেই ছিলো বোঝা দায়।
বৈদিক মন্ত্রের পাশাপাশি এইসব স্ত্রী আচার,
শুভ বিবাহে এসবের গুরুত্ব অসীম, জুড়ি মেলা ভার।
আগেকার দিনে নাকি হলুদ কোটাতেও হতো গান,
আর বিয়ে বাড়িতে অবশ্যই থাকতো উপস্থিত_____ ভালোবাসার প্রতিক সেই পাতা, হৃদয়াকারের পান।
কাগজে সই করা বিয়েতে কি লোকেরা আনন্দ পান?