নীল মা
নীল মা


চোখে কি বেঁধেছো কালো রেশমী কাপড়, ঠিক গান্ধারীর মতো, মা গো,
কুন্তী হয়ে ঠেলে ফেলেছো আমাকে, দ্বিধাদ্বন্দ্বহীন
একবুক ঘৃণায়, মা গো,
অস্বীকার করেছো নিজ নাড়ীর বন্ধন কোন সে দুর্দম
অপ্রতিরোধ্যতায়, মা গো,
জন্ম কেন দিলে ওগো মা, অন্ধকার গর্ভে নয়মাসের
যন্ত্রণাভার বয়ে, মা গো,
বিশ্ব সংসার তন্ন তন্ন করে খুঁজে এনেছি যে এই শাড়ী নীলাম্বরী, মা গো,
কারণ নীলেই যে মানাবে তোমাকে সঠিক, হলাহল ভরা হৃদয়ে যে, মা গো,
চিনি না তো মা তোমায় আমি, তবে চিনে নেবো
ঠিকই তোমায়, মা গো,
তুমি কি পদ্মগন্ধা মা, না কি যুঁই বা বেলগন্ধী, না কি
পূতিগন্ধময়ী তুমি, মা গো,
নর-নারীর মাংসাশী খেলায় বুঝি জন্ম আমার, না কি ধর্ষিতা ছিলে, মা গো,
আমি তো আসতে চাই নি একা এ পৃথিবীতে, আমি পারিও নি আসতে একা, মা গো,
স্থাবর জঙ্গম সঙ্গম বেয়ে আসা ছোট সে এক ভ্রূণ কোরকরূপী, মা গো,
সিঞ্চন না করে সে জারজ কোরক ফেলা কি যেতো না ছিঁড়ে ছুঁড়ে, মা গো,
ছিন্ন নাড়ী শ্বাসবায়ু ভরে যে প্রাণের করালে পরিচয়
জীবনের সাথে, মা গো,
ত্যাজ্য তাকে করেছো কিবা অপরাধে কিসের সে দুস্তর লজ্জায়, মা গো,
যদি কখনো দেখা হয় তোমার আমার কোনো কোণে পৃথিবীর আবার, মা গো,
তোমার শপথ, তোমার চোখের ছায়া থেকে ঠিক খুঁজে নেবো, নেবোই মা গো,
তোমার সব অপরাধের জীবন্ত দলিল, আমার দৃষ্টি থেকে লুকোতে পারবে না, মা গো।