STORYMIRROR

Paula Bhowmik

Fantasy Inspirational

4  

Paula Bhowmik

Fantasy Inspirational

নদীর তীরে

নদীর তীরে

2 mins
417

চলো বেরু বেরু যাই, এই কথাটা প্রথম কবে শুনেছি,

বা আমিও যে কতবার বলেছি, তা কি মনে রেখেছি !

তবে বাবা-মায়ের যে কোনো কাজে বাইরে যাওয়া,

আমার কাছে মানেটা ছিলো, বেড়ানো আর খাওয়া।

রসগোল্লা,পান্তুয়া, সিঙারা, সন্দেশ, রসকদম্ব, চমচম!

না, না সবগুলো একদিনে মোটেও নয়, দু-তিন রকম। 

তাড়াতাড়ি নয়, খুব ধীরে একটু একটু করে খাওয়া, 

তার চেয়েও মজা ছিলো ভাজা মৌরী উপরি পাওয়া।

প্রথম যখন একটু দূরে মায়ের সাথে বেড়াতে গেলাম, 

নতুন দুটো নদী আত্রেয়ী আর পুনর্ভবা দেখলাম। 

ভয়ে কাঁপা পায়ে বাঁশের সাঁকো পেরোতে পারলাম। 

এরপর একদিন বাবা মায়ের হাত ধরেই বেরোলাম, কুলিকের চেয়েও বড় নদী মহানন্দায় এলাম,

বিহারী মাঝিদের বড় নৌকা করে নদীটা পেরোলাম।

জীবনে প্রথম টমটম নামে ঘোড়ার গাড়িতে চড়লাম,

অন্যরকম বাংলায় লোককে কথা বলতে শুনলাম।

তারপর একদিন রেলগাড়ি করে রাতের আঁধারে,

আলোর মালা দেখে দেখে ফারাক্কা ব্রীজ পেরোলাম।

না। গঙ্গা, ভাগীরথী বা পদ্মা কাউকেই চোখে পড়েনি,

গঙ্গা নদীটা যে কত বড় তা একটুও বুঝতে পারিনি।

ঠিক তেমনই কলকাতা শহরের আকারটাও বুঝিনি,

কালিঘাটে গিয়েও মা কালীকে দেখতে পাইনি।

কেউ উঁচু করে তুলে ধরাতে দেখেছি শুধু সারি সারি,

এতো এতো কালো কালো মানুষের মাথার ভিড়, 

যেন চলেছে মায়ের পায়ে দিতে গড়গড়ি।

সুখচর ঘাটে দেখি গঙ্গা নদীকে, সাঁতার শিখিনি, 

হয়তো তাই স্নান করে খুব একটা মজা পাইনি।

অনেক বেশী ভালো চুপচাপ দেখা নদীর বয়ে চলা,

অন্যদের কথা শোনা বা নতুন কাউকে কিছু বলা। 

ভালো অবশ্য লেগেছে গান্ধীঘাটে গঙ্গার হাওয়া,

আর চিড়িয়াখানায় বসে আইসক্রিম খাওয়া।

"বনে থাকে বাঘ" একথাটাই শুনে এসেছিলাম,

এখানে তো বাঘকে খাচায় একেবারে বন্দি দেখলাম।

বাঘ-সিংহকে এভাবে দেখে কিন্তু একটু কষ্ট পেলাম!

একই রকম বাড়ির ভিড়ে বরিষায় কদিন ছিলাম,

চুপিচুপি একা বেড়াতে গিয়ে তো বিপদে পড়লাম ! নিজেকে একেবারে হারিয়েই ফেলেছিলাম।

যেখানেই কড়া নাড়ি, দেখি অচেনা মুখ,

চোখ ছলোছলো, শুকিয়ে উঠেছিলো বুক।

মনে মনে তখন শুধু ভাবি, অচেনা জায়গায় একা 

বেড়ানোর চেয়ে তো দেখি বাড়িতে থাকাই সুখ।


Rate this content
Log in

Similar bengali poem from Fantasy