মানুষ হয়েও পক্ষী
মানুষ হয়েও পক্ষী
"লেট মি গো ওরে দ্বারী, আই ভিজিট টু বংশীধারী।
এসেছি ব্রজ হতে, আমি ব্রজের ব্রজনারী,
বেগ ইউ ডোরকিপর লেট মি গেট,
আই ওয়ান্ত সি ব্লক হেড,
ফর হুম আওয়ার রাধা ডেড,
আমি তারে সার্চ করি.... ।"
রূপচাঁদ পক্ষী।
সত্যিই তো কে এই লোক যিনি মানুষ হয়েও পক্ষী?
কথাটা আমার একটু জানতে ইচ্ছে করে বইকি!
তাই তো আমিও যখন তখন গুগল সার্চ করি, পড়ি,
সময়ের সিঁড়ি বেয়ে পিছিয়ে গিয়েও এভাবে মন ভরি।
খুব আমুদে লোক পক্ষী,খগরাজ,খগবর বা খগপতি,
এসব নামেই চিনত তাঁকে তখনকার বাঙালি জাতি।
বাঙালীর বাংলা ভাষা তখন যেন খোলস ছাড়ছে,
সাধুভাষা থেকে চলতি বাংলায় লেখা শুরু হয়েছে।
গঙ্গার পুল বা কোম্পানির রেল, যে কোনও ঘটনা,
হুজুগে মেতে তা নিয়ে গান বাঁধতে তিনি ছাড়তেননা।
যদিও হেয়ার স্কুলের ছাত্র ছিলেন, তবু গান বাঁধতেন,
ছুঁটিখাঁর কাছে রীতিমত গানের তালিম নিয়েছিলেন।
"পক্ষীর জাতিমালা" নামে একটি দল তৈরী করেন,
ব্যঙ্গ করে তিনি সময়োপযোগী প্রচুর গান লেখেন।
এছাড়া লেখেন আগমনী,টপ্পা,বাউল,দেহতত্বের গান!
থাকতেন কলকাতায়, নাম রূপচাঁদ দাস মহাপাত্র,
তিনি উড়িষ্যার এক দেওয়ান গৌরহরি দাসের পুত্র।
ছিলো যে তাহার অনেক বন্ধু, বয়স্য, পাত্র ও মিত্র !
বাগবাজারের ধনী বাবু শিবকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়,
পক্ষীদল বেড়ে ওঠে তার পৃষ্ঠপোষকতায়।
তখনকার দিনে ধনীদের বাইজি গানের জলসায়,
চন্ডুর লোভে গড়ে উঠেছিল এক বাবু সম্প্রদায়।
এঁনারা মোটে খেতেন না বিলিতি কিংবা দিশি মদ,
তবু নেশার ঘোরে তাদের যেন করতো ডানা ঝটপট।
গন্জিকা সেবন করে মনে মনে যে তারা উড়তেন !
দলের সকলেই আলাদা আলাদা পাখির নাম পেতেন,
পাখির সাজ-পোষাক পড়ে, আচরন নকল করতেন।
রূপচাঁদ পক্ষীকে দলের সকল লোক রাজা মানতেন!
এক খাঁচার আকারের ঠেলা গাড়িতে তিনি চড়তেন।
চৈত্র সংক্রান্তীতে জেলেপাড়ার সঙে,মিছিলে,গাজনে,
লোকেরা ভালোবেসে গাইতো তাঁর গান খুশী মনে।