‘মানুষ’- এর সংজ্ঞা
‘মানুষ’- এর সংজ্ঞা
আমি পরিবর্তন চাই, পরিবর্তন চাই নিজের মধ্যে
আমার আত্মার অবাধ্য অনুভূতিগুলিকে খুন করতে চাই,
সমাজের প্রাচীন গ্রন্থে দামী এ মন, দুর্লভ এ মন
তবে আমার বাস্তবকে ভালো রাখে না
তাই আমিও আর অপরিবর্তিত হয়ে থাকতে পারবো না।
মুছিয়েছিলাম তো অন্যের দুঃখে তার চোখের কোনে জমা জল
শুনিয়েছিলাম তাকে দ্বিতীয় সুযোগের মানে,
বলেছিলামতো থাকবো তার পাশে সখা হয়ে
বিনিময়ে তার থেকেও তো এক চিলতে সময় পাওনা আমার
তবে পেলাম না, পেলাম শুধু দমকা ঝড়ের মতো উপেক্ষা।
যুগযুগ ধরে বলা বানী মাথা পেতে মেনেছিলাম
সংবেদনশীল হৃদয় নিয়ে সময় দিয়েছিলাম সবারে
গড়তে চেয়েছিলাম নিজেকে মানুষের মতো মানুষ হবার আদর্শে,
তবে লাভ কি হলো পুরোনো পন্থা মেনে?
তাই পরিবর্তন করতেই হবে নিজেকে।
দূর থেকে দেখলে সবার মুখে ফোটে সংবেদনশীল মনের ছবি
মনে হয়, কতোইনা সুন্দর যেন এই পৃথিবী
ভিতরে আসলে বইছে হিংসা-প্রতিদ্বন্দ্বিতার খরস্রোতা নদী,
যে নদীর জলের রঙ কালচে লাল
যে জলে শান্তি নয়, মেলে শুধু শিরা ছিঁড়ে গড়িয়ে পরা কাঁচা রক্ত।
আমিও হতে চাই সেই স্বার্থপরসুলভ দলের পন্থী
দূর থেকে দেখি ভালোইতো আছে ওরা, সুখে আছে
ঠাণ্ডা মাথায় মানুষের আত্মার খুন করে বেশ আছে
দুঃখ নেই, কষ্ট নেই, কাউকে হারিয়ে ফেলার ভয় নেই
ওরা শুধু মত্ত, মত্ত ওরা হত্যালীলায়।
খুনের এই সুন্দর শান্ত পথটা ভারী ভালো লাগছে
শর্ত একটাই, স্বার্থপর হতে হবে
অন্যের চোখের জল না মুছিয়ে নিজেকে সময় দিতে হবে
সবাইকে পিছনে ফেলে রেখে শুধু দৌড়োতে হবে
তাতে কারোর প্রান যাক; আমার কি? আমাকে যে মানুষ হতে হবে।
সময় বদলাচ্ছে, যুগের পর যুগ পার হয়ে গেছে
আর ‘মানুষ’-এর সংজ্ঞা পাল্টাবে না? তা হয় নাকি?
পাশে দাঁড়ানোর মতো মর্মস্পর্শী কথা আর সংজ্ঞায় নেই,
অর্থবলে বিলাসী, অনুভূতির হত্যাকারী সফল ব্যক্তিকেই মানুষ বলে
তাই আমিও নিজের মধ্যে পরিবর্তন চাই।
বন্ধু নয়, বিত্তবান হতে চাই
‘মানুষ’-এর পরিবর্তিত সংজ্ঞায় মানুষ হতে চাই
প্রেমে পরাজিত পুরুষ না হয়ে পরকীয়ায় সুখ চাই
সাহায্য নয়, পয়সার পিশাচ হয়ে লুঠতে চাই
খুনির মতো নারকীয় হাসি হাসতে চাই, আমি বাঁচতে চাই।