কাগজের নৌকৌ
কাগজের নৌকৌ
কাগজের নৌকৌ বানাতে শিখেছিলাম,
আমার ছোটোমামার কাছে।
আমি একটু বড় হতে না হতেই সে তো
না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছে।
শুনেছি ছোটোমামা গিয়েছিলো পড়ে,
ইঁদারার জলে একটু উঁকি দিতে গিয়ে।
কিন্তু তাতেও ডোবেনি, দুই পা দেয়ালে ঠেকিয়ে,
একদম ছিল খাড়া দাঁড়িয়ে।
সে কথাটা সবাইকে মেজোমামা খবর দেওয়ায়,
মোটা দড়ি ফেলে বড়রা ছোটোমামাকে টেনে ওঠায়।
মনে হয় তখনই লেগেছিলো মাথায়,
কিছু বছর পরে উপসর্গ দেখা যায়।
প্রচন্ড মাথা ব্যথা কে তাড়াতে,
সান্টা মেশিন বসাতে হয় মাথাতে।
মেধাবী ছোটো মামার পড়াশোনা যায় বন্ধ হয়ে,
কাগজের নৌকার মতই ছোটোমামার জীবনটা
জলে ভিজে যেন যায় নেতিয়ে।
তিনবার অপারেশন করার পর ডাক্তার হাল ছাড়ে,
বলে এভাবেই চলতে হবে সাবধানে,
মাথায় যেন আর আঘাত না লাগে জীবনে !
কিন্তু যে মানুষ পড়তে ভালো বাসে ?
পড়াটাই যদি হয় বারণ, সে বাঁচবে কিসের আশে?
একদিন হাঁফিয়ে উঠে সন্ধ্যা বেলাতে,
চলছিলো বেড়াতে পাশেই তার ফুলদির বাড়িতে।
গাছের মোটা ডাল কেটে ফেলা ছিলো পথে।
হোঁচট খেয়ে ছোটোমামা পড়ে গিয়েছিলো মাটিতে,
ডাক্তার বৃন্দাবন বাগচি দেখতে এসেছিলেন বাড়িতে।
না, কোনো মিথ্যে আশা উনি দেননি,
বিধির বিধান সকলেই মেনে নিই।
এরপরেও বানিয়েছি কাগজের নৌকো বহুদিন,
কিন্তু পরিণতি যে কি হবে তা তো জানি !
তাই প্রাণে ধরে আর কাউকে জলে ভাসাতে পারিনি ।
