ঘোমটা
ঘোমটা
এক সময়ে ভারতে স্বয়ম্বর সভার হতো আয়োজন।
কন্যাদান বা গৌরীদান ছিলো সাময়িক প্রয়োজন,
শরীর খারাপ হলে যেমন রোগীর হয় পথ্যের দরকার,
তেমনই নবাব আর দুষ্ট লোকের নজর থেকে প্রায়
সহস্র বছর প্রয়োজন হয়েছিলো মেয়েদের বাঁচাবার।
ইসলামী আইন বিশেষজ্ঞরা এমনিতেই করেছিলেন
চালু, হিন্দু প্রজাদের ছেলেমেয়ের বিয়েতে কর।
তার ওপর সিন্ধুকী রা অবিবাহিত সুন্দরী ও রূপসী,
কন্যার খোঁজে গ্রামে গন্জে করতো ঘুরঘুর।
লোভ জমি, জিরেত, তালুকদারি, জায়গীর পাবার,
এমন জঘন্যতম কাজে উৎসাহ দিতো তাদের।
ক্রমে ক্রমে অবস্থা টা এমন দাঁড়ায়,
সম্পন্ন পরিবারের বৌ ঝি রাও রেহাই না পায়।
অবস্হা দিনে দিনে হয়ে উঠলো বেগতিক,
কন্যা সন্তানকে রক্ষা করার কথা ভেবে চতুর্দিক
হিন্দু সমাজপতিরা বাধ্য হয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেন,
ঋতুমতী হবার আগেই পাত্রস্হ করার উপদেশ দেন,
মেয়েকে সারাজীবন কাছে রাখতে,
নামমাত্র বিয়ের তরে কূলীন প্রথা উদ্ভাবন করেন।
বহু বিবাহ আগেই ছিলো, বাল্য বিবাহ শুরু হলো।
সমাজ রক্ষার কারণে ছোটো ছোটো মেয়েদের জীবন বলি দেয়া হলো,
খেলাধূলার পাট চুকলো,
মেয়েরা বাড়িতে একরকমের বন্দী হলো।
অপালা, মৈত্রেয়ী, গার্গী, লোপামুদ্রার উত্তরসূরীরা,
লেখাপড়ায় জলান্জলি দিয়ে মাথায় ঘোমটা টানলো।
রাঁধা, বাড়া আর সন্তান মানুষ করা,
এর মধ্যেই জীবন সীমিত হয়ে পড়লো।
কন্যা শিশুর ভবিষ্যৎ এভাবেই
কয়েক যুগ পিছিয়ে গিয়েছিলো।
একটা জাতির পক্ষে যে মায়েদের শিক্ষা কত জরুরী,
এই কথাটা প্রণম্য কিছু মণিষী সহজেই বুঝেছিলেন।
অনেক লড়াই করে, গৌরীদান, সতীদাহ বন্ধ করেন।
বাল্যবিবাহ বন্ধের সাথেই বাল্যবিধবাদের কথা ভেবে,
বিধবা বিবাহ প্রচলন করেন, মেয়েদের মুক্তি দেন।