চোরাবালি ও ক্যাকটাস রাত
চোরাবালি ও ক্যাকটাস রাত
নিষ্প্রাণ লজ্জা মেখে আছো মুখে,
চোখের তলায় কয়লাখনি!
দেহে অজস্র এলোমেলো নদী,
বাঁকা বুকে ভেসে আছে অসংখ্য দ্বীপকুঞ্জ!
অদৃশ্য ভেজা চোরাবালি তৈরী হয় সমুদ্রের বিশালতায়!
তোমার চোখের ভেতর মহাসাগর তোলপাড় করে যায়,
ঢেউ দিয়ে ঘর সাজায়|
চোখ মেলে রাতের রং দেখেছো কখনো?
নিৰ্ভেদ্য কালো ওই রঙের মধ্যে,
অসংখ্য জোনাকি টিমটিমে আলোর মেলা সাজায়|
অজস্র বুদ্বুদ তৈরী হয়ে নিমেষে ফেটে মিশে যায় -
কালো রঙের গাম্ভীর্যে!
একরাশ রামধনু ছটফট করে সেই কালোয়!
ভেজা ঠোঁট, চামড়ার অলিতে-গলিতে ক্ষুদ্র চোরাবালি চিৎকার করে!
শরীরের ভাঁজে সোঁদা গন্ধ পাওয়া যায়!
প্রকৃতির সমস্ত সাদা রং চুরি করে আজ তুমি শুধুই আকাশ|
পৃথিবীর কেন্দ্রে আকৃষ্ট সারা শরীর,
শুঁয়োপোকা লুকোচুরি খেলে মাটির ভেতর|
খানিক দূরে আরেক চোরাবালি নিমন্ত্রণ করে যায়,
খামখেয়ালি বালির কণা তখন বেজায় নরম হয়ে বিগলিত হয়|
সরে গেলে অদৃশ্য চিহ্নহীন মসৃন,
সহজ জন্ম-মৃত্যুর হিসেব মেরুদন্ডহীন চোরাবালির!
রণভূমিতে সমুদ্রের বিজয়গান অনবরত|
একগুচ্ছ ভেজা মাটি চোরাবালিতে কুঁকড়ে যায়,
অজানার সন্ধান পেতে নিখোঁজ হয় বালির কোণে|
গাঢ় একাকী বিশ্রাম প্রায় মৃত্যু!
খয়েরী রঙের পাহাড় পক্ষাঘাতগ্রস্ত,
কয়েকশো লক্ষ বছর নির্বিকার!
মৃত পাহাড়ে নির্জীব পাথর,
কাঁটা ক্যাকটাস তৃষ্ণার্ত!
ধুলির কণা বাতাসে ক্ষুদ্র ঘূর্ণি আবছা দৃশ্য|
হৃদয় যেন মরুভুমি,
শরীরের শীতল যন্ত্রণা মৃত্যুর প্রতীক!
নিষ্প্রাণ বেরসিক খাঁ-খাঁ শূন্যের শিরায়!
ক্যাকটাসের ছুঁচোলো লোমের সমাগম বিঁধছে বুকে!
ঘেমো বাষ্প নয়,
হলুদ আগুন ভিক্ষে করছে!

