বিচিত্র ঘর
বিচিত্র ঘর
হিমের ঘোলাটে ঘনত্ব ঘিরে থাকে মাথা,
আবছা ছেঁড়া কুয়াশায় পুরোনো ঠিকানার জমাট;
চাপা নিঃশ্বাস ছুটে বেড়ায় বাষ্পের উষ্ণতায়,
ভাঙা মেঘ আকাশে লজ্জিত হয়ে কালো গন্ধ মাখে|
শুঁয়োপোকা কুঁকড়ে মাটির ভেতর শিকড় খুঁজে জল চুষে খায়,
নরম কেন্নো কেন্দ্রে বিন্দু সাজায়;
কালো কালী মুখে মেখে ক্লান্তি ঘুমোয়,
তোমার কোলে মাথা রেখে|
মাথার ভেতর মৌমাছির দল,
অসংখ্য বসন্ত-ফুলের মধু সংগ্রহ করে,
বয়ে আনে হৃদয়ের বিচিত্র ঘরে;
সেখানে বোকা ভ্রমরের মো-মো শব্দ,
হলদে বহ্নিশিখা তৈরী করে প্রত্যেক রাতের নিঝুমে|
সেই ঘরে থাকে কিছু মানুষ,
অধিকাংশই চরিত্র;
কয়েকটা সুতোয় অদৃশ্য টান পড়ে;
সুতো আঁকড়ে বেঁচে থাকে মানুষ,
টানাপোড়েনে ছিঁড়ে যায় সুতো;
সুতোয় গিঁট দিয়ে ফের টান|
তাই তো দর্জি ব্যস্ত চিরকাল;
হৃদয়ের কূপে আজ মাকড়সার জাল,
বাষ্পে শুধু নরম সুতো এবং ধূলিকণার শূন্যতা;
নরম লালার নকশা ছেয়ে থাকে সমস্ত হৃদয় জুড়ে,
এতকাল যেখানে নিঃশব্দ থেকেছে নিঃশব্দে|
মাকড়সার দল নিশ্চিন্তে তাদের জটিল বাসা গড়ে সেই কালো কূপে;
হৃদয়ের ওই বিচিত্র ঘরে,
আঁকা হয় মাকড়সার লালা দিয়ে জটিল নকশি-কাঁথা,
তাহলে দর্জি কে?
চ্যাটচ্যাটে টিকটিকি গোপন ঘরে এখনো ভীষণ একা;
বাসি দেহ ভুলে-যাওয়া ঠিকানা হয়ে থাকে;
শুন্যে ভেসে আছে এলোমেলো সুতো,
সুতোর মেলায় রঙের নকশি-কাঁথা|
সুতোর গোড়ায় দৈবহস্ত,
ভগবান-ই দর্জি! গাঢ় সুতো,
নয়তো লীন বাঁকা রেখা;
সুতো-মানুষের খেলা পুতুল নাচের মতো|
