চিঠির ঘুড়ি
চিঠির ঘুড়ি
ন্যাড়ামাথা, টিঙটিঙে, বছর খানেকের একটা মেয়ে,
ঘুরঘুর করে ঘোরাঘুরি করতো তোমার পায়ে পায়ে।
না মনে তো নেই আমার কিছুই, ছবিতে দেখেছি।
বড় হবার পর বাবার কাছ থেকে,
কোনোমতে ঠিকানাটা জোগাড় করেছি।
হলুদ খামে চিঠি লিখে যোগাযোগ করতে চেয়েছি।
রক্তের সম্পর্ক থাকলেও তুমি যে বিদেশী, দাদা!
সেটা তুমি বুঝলেও আমি বুঝিনি, আমি যে হাঁদা ।
অনেকগুলো হলুদ খামের উত্তরে একটা নীলখাম !
হ্যাঁ, একবার আমি তোমার উত্তর পেয়েছিলাম।
কি জানি, কি যে ছিলো তাতে লেখা,
গুরুগম্ভীর কিছুই হবে, গিয়েছি তো এক্কেবারে ভুলে,
কিন্তু তোমার হাতের লেখাখানি
আজ ও যেন আমার চোখের সামনে দোলে।
আমার হাতের লেখা যে খারাপ সে তো আমি জানি,
কিন্তু তোমার লেখা দেখার পর,
ভালো করে লেখার আর চেষ্টা করিনি।
লেখা তো নয় সে যেন চিঠির বুকে হাতে আঁকা,
সত্যিকারের একটি ছবি ! সাথে নিয়ে,
কিছু কালির আঁচর অথবা কিছু রেখা।
বড় হতে হতে হয়নি দেখা তোমার ঘুড়ি তৈরী করা,
মান্জা দেওয়া জড়ানো সুতোর লাটাই,
হয়নি আমার ছোঁয়া, অথবা তা হাতে ধরা।
বাকি থেকেই গেলো তোমার হাতের গাট্টা খাওয়া,
ভাইফোঁটাতে কপালেতে চন্দনের টিপ দেওয়া।
হয়নি আমার রাখি দেওয়া, হয়নি তোমার হাতে পরা!
চিঠিটাও সেই ফাইল থেকে,কি করে যে হলো হাওয়া,
কেমন করে, একাই সে যে, কোথায় গেলো উড়ি,
হয়েছিলো সাধ, হয়তো ওরও ইচ্ছে হতে ঘুড়ি!
সময় যে আজ গেছে বয়ে, অনেক বছর ধরে,
ঠিকানাটাও যে পাল্টে গেছে, হারিয়েছে তার দিঠি!
হলুদ খামে উড়িয়ে দিলেম আবার একটি চিঠি,
মনে পড়ে! ও উজুদা, আমি যে তোমার পাকা বুড়ি!
সুতো ছাড়াই কথা নিয়ে উড়লো আমার চিঠির ঘুড়ি।
