চাকার দাগ
চাকার দাগ


ফাঁকা রাস্তা : কতকাল কতক্ষণ স্তব্ধ নিরালায় !
আসলো না দহনক্ষণ , আমি অপেক্ষায় ।
চাকা তুমি আসবে কবে পিষবে এই বুক ?
তোমা বিনে আমি আর পাই না যে সুখ ।
ট্রাক ড্রাইভার : ওয়াইগুরু জি , রাস্তে হ্যায় খতরনাক !
ক্যায়সে চলেঙ্গে রাস্তে সে পুরা ঠিকঠাক ?
রাস্তা : ওই তো , ওই তো দেখা যায় কিছু ,
যাক শেষে এলো চাকা দিয়ে রাস্তা উঁচুনীচু !
ক্রমাগত ভেঙ্গে গড়ে মোর চেহারাই বিকৃত ,
সব গাড়ি যে ফিরেই যায় কারে করি উপকৃত ?
তবু যদি ক্ষয়িত বুকে দর্পের সাথে এসে ,
করলো সমান ভারী চাকা ভালোবেসে ...
( ভগবান স্মরণে ট্রাক ড্রাইভার এগোচ্ছেন ক্রমে ,
বীভৎস ঝাঁকুনির চোটে মনে ভয় যাচ্ছে জমে ।
ওদিকে অনেককালের কামনা বুকে পুষে পথ ,
আরও একবার কি সে বিফল মনোরথ ? )
চাকা : পথ তোমার বিকৃতি যেন অপার ভালোবাসা ,
মসৃণ চাকা যে প্রেম চাইছিলোই সর্বনাশা ।
এদিক ওদিক রবারের মন ভেদ করবে সুড়কি সব ,
দস্তুর মতো কামনায় মনে উঠবে যে কলরব ।
রাস্তা : এসো সখা এসো মিলিয়ে দাও উথালপাথাল ,
ছিন্ন করো বন্ধন সব , জড়াও মনে মায়াজাল ।
( নিবিড় সে প্রণয় , হয় না বর্ণনা তার ,
রাস্তা সইছে বুকে চাকার প্রেমের ভার ।
বহু মেহনতে শেষে ট্রাক রাস্তা করলো পাড় ,
রাস্তার বুক হতে লাঘব হলো যে ভার ।
চাকার ভারে অসমান পথ হলো স্থানমতো সমান ,
কিন্তু সেই চাকার দাগ দুদিনেই গেলো মিলিয়ে ,
পৌরসভার লোক এসে ক্রমে রাস্তা করলো সমান ,
কিন্তু সেই চাকার দাগ , সে তো দিলো মুছিয়ে । )
নতুন ফাঁকা রাস্তা :
হা ঈশ্বর , কতকাল পর আমার বিকৃতি নিয়ে
খুশি হয়েছিলো ভারী কোনো এক চাকা ,
আবার কবে আসবে গাড়ি এ পথ দিয়ে ;
ক্ষণিকের চাকার দাগ তাও পড়লো যে ঢাকা !