বয়ে যাও
বয়ে যাও


সময়ের নদী থেকে শুধু ভালো লাগে না বলে,
যদি দুঃসময়ের পল গুলো বেছে দেওয়া হয় ফেলে,
সেই নিস্তরঙ্গ জলকে কি আর জীবন বলা চলে?
ও নদী, তোমার সাথে যখন আমার হয়েছে পরিচয়,
তোমার ঐ হাসি কান্নার ঝিকমিকে স্রোতকেই আমি,
তোমার চেয়েও বেশী ভালোবেসেছি বলে মনে হয়।
আমাদের বন্ধুত্বের অনেকটা সময় গেছে পেরিয়ে,
অযথা কথা, ছোটো হাসি-কান্না যেন গেছে হারিয়ে !
আপাত নিস্তরঙ্গ তোমাকে আজ বড়ই শান্ত মনে হয়,
তুমি তো জানো, যে স্মৃতিতে আমার সব তোলা রয়।
তাই মাঝে মাঝে ভাবি স্রোতের উল্টো দিকে যাই,
সাঁতার শিখতে গিয়ে নাহয় হাত পা ব্যাথা হবে,
ডুবতে নিলে, জানি নিশ্চয়ই খড়কুটো পেয়ে যাবো,
এ ব্যাপারে আছে আমার অতিরিক্ত বিশ্বাস নেই ভয়।
তোমার উৎস কোথায় তা আমার দেখতে সাধ হয়,
বরফ গলা নাকি বৃষ্টির জমা জলে তুমি তৈরী হলে,
সে কথা তো কখনও তুমি আমায় দাওনি বলে।
তখনও কি তুমি এতটাই চুপ ছিলে ?
>কলকল করে কথা বলে আমাকে পাগোল করেছিলে,
আমার মনে হয় আগে নিশ্চিত অনেক হেসেছিলে !
উচ্ছল তোমার সেই সুমধুর রূপ আমার দেখা বাকি,
এভাবে আমাকে তুমি কিছুতেই দিতে পারনা ফাঁকি।
আমি জানি, তুমি আজো চুপিসারে ভেতরে ভেতরে,
ঠিক আগের মতোই কুল কুল করে বয়ে যাও।
শুধু নিজের দুঃখ আড়াল করতে চুপ করে রও !
বুঝে গেছ, দুধের মতো টগবগ করে ফোঁটা চলবেনা,
উথলে উঠলে বোকা কেউ উৎসাহে জল ঢেলে দেবে,
তবু বুদ্ধি করে আগুনের জ্বাল টেনে নেবেনা ।
তোমার ঢেউয়ের মাথার মাখন চুরি করতে লোকের,
জুটে যায় সময়, তখন ওদের অখন্ড অবসর !
দুঃখের পলি জমে বুক ভরে গেলে কে খোদাই করে,
কে আর বালি খুঁড়ে তোমাকে নির্মল করে!
কাজে নয়, মুখেই বলে সকলেই আমরা পরের তরে ।
ও সময়ের নদী থেমোনা, শুধু একটু ধীরে বয়ে যাও,
নাহয় স্রোতের দিকেই যাবো, শুধু আমায় সাথে নাও।