ভেজা মাটি
ভেজা মাটি
"ও আমার দেশের মাটি, তোমার পরে ঠেকাই মাথা"
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তৈরী করেছিলেন এই গাথা।
বাংলার মানুষের কাছে মাতৃস্বরূপ এই মাটি,
তারা অনুভব করেছে বারবার এই কথাটা কত খাঁটি।
স্বাধীনতা পেতে গিয়ে এই বাংলার বহু প্রাণ,
হয়েছে রক্তাক্ত, নিজেদের জীবন দিয়েছে বলিদান।
কিন্তু স্বাধীনতার অজুহাতে যখন,
এই মাতৃসমা মাটিকেও ভাগ করা হলো,
পাকিস্তানের উর্দু ভাষা বাঙালির ঘাড়ে চাপানো হলো,
ভাষা বাঁচাতে কতই না আন্দোলন, কতো প্রাণ গেল !
তারপরেও তুষের আগুনের মতো মানুষের মনে,
ধিকি ধিকি একরকমের চাপা আগুন জ্বলছিলো।
এই সোনার বাংলার মাটি শুধু বাঙালির,
কোনো পাকিস্তানের মানুষের এখানে নেই দরকার।
সাগর পেরিয়ে, আকাশ ডিঙিয়ে চাই মাটির দখল?
এমন কেন হলো, ঈংরেজ বিদেশীদের এ কেমন ছল!
যাবার আগে দেশটাকে তিন টুকরো করে দিয়ে গেল।
তাই তো আয়ুব খানের অত্যাচারের বিরুদ্ধে,
ধীরে ধীরে গনবিক্ষোভ শুরু হলো।
পাকিস্তানী নিজেদের দেশে ফেরত যাও,
বাঙালির মাটি বাঙালিকে দিয়ে দাও।
সবার আগে কার্ফু ভাঙতে ছাত্ররা এগিয়ে এলো।
আসাদুজ্জামান, মতিউর, রুস্তম তিন জনের দেহ ,
পাকিস্তানী সেনার গুলিতে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো।
বাংলার কোমল মাটি রক্তে ভিজে উঠেছিলো,
বাঙালী মায়েদের কোল খালি হয়েছিলো।
এরপর রেগে গিয়ে সকলে হাতে অস্ত্র তুলে নিলো,
ভারতের সহায়তায় আসল যুদ্ধ শুরু হলো।
কত শরণার্থী নিজেদের মাটি ছেড়ে এপারে এলো,
অত্যাচারের ফলে আরও কত প্রাণ যে গেল!
এখনো কাঁটা তারের বাঁধা পেরিয়ে মেঘেদের দল,
এসব কথা ভেবে যখন তখন ফেলে যে চোখের জল।
