ভালো থেকো সে দেশে
ভালো থেকো সে দেশে
তুমি চলে গেছো তবু সব খানে তোমার পরশ মাখানো,
তুমি ছোটবেলায় বকতে কিন্তু তাতেও থাকতো আদর জড়ানো,,
তুমি কত কথা বলতে কিন্তু সেসব ছিল স্বপ্ন আঁকতে শেখানো।
রান্না ঘরে চাটাই পেতে
রান্না করতে করতেই তুমি আমাদের পড়াতে মনে আছে এখনো,,,
আমাদের মধ্যে যার লেখা অঙ্ক কষা অথবা আঁকানো
কিংবা বই গোছানো সবার আগে হয়ে যেতো তাকে তুমি সাব্বাসি দিতে।
পড়া শেষে উনুন ধারেই অপেক্ষা করা আমাদের
কখন যে বাটি করে একটু তরকারি দিয়ে বলবে
দেখতো মুখে দিয়ে কেমন হয়েছে?
জানো মা সেসব রান্না গুলো অমৃতের মতন ছিল এখনও মুখে লেগে আছে।
বৃষ্টির দিনে কাঁদা জল ভেঙ্গে আমাদের স্কুল যেতে এগিয়ে দিয়ে আসা।
এইতো আজ পৌষ সংক্রান্তি কত কি তৈরি করতে তুমি
তোমার তৈরি পাটিসাপটা রসবড়ি ভাপা পিঠে খীর পুলি
খেজুর গুড়ের পায়েস এসবের স্বাদ এখনো যেনো জিভে লেগেই আছে।
এই শীত কালেই তো তুমি কত রকমের সোয়েটার টুপি মোজা আমাদের জন্য তৈরি করেছো
বিকেল বেলায় ক্রস স্টিচের টেবিল ক্লথ বেড কভার বুনা
কিংবা কাপড় কেটে আমাদের জন্য ফ্রক স্কার্ট বানিয়েছো।
শ্রাবন মাসে একমাস ধরে মনসা মঙ্গল গীত গাওয়া প্রতি বিকেলে।
বাকি দিন গুলোতে রামায়ণ মহাভারত ভাগবত কিংবা অন্য কোনো গ্রন্থ পাঠ,মাঝে মাঝে আমাদেরও বলতে দেখিতো
তোরা কেমন পারিস একটু শোনাতো পাঠ করে!
তুমি কখনো স্কুলে যাওনি কিন্তু আমরা ভুল পড়া করলে তুমি ঠিক ধরে ফেলতে,,,
তুমি জানো কিনা জানিনা তুমি আর বাবা আমার থেকে কখনো দূরে থাকোনি অনেক দূরে থাকলেও তোমাদের সাথে পেয়েছি প্রতিটা মুহূর্তে।
ছোটবেলায় কখনো কখনো তোমার হাত ধরে পিসিমাদের বাড়ি গিয়েছি,,,
সেখানে যাওয়া মানে অনেক আনন্দ
তোমার পরিপাটি করে শাড়ি পড়া আলতা পড়া পা পান খাওয়া ঠোঁট শ্যাম্পু করা চুল সব সব খুব মনে পড়ছে মা।
তোমার হাসির তো তুলনাই হয়না করো সাথে
মুক্ত দানার মত দাঁত গুলো আমার চোখের সামনে ভেসে উঠছে।
তোমায় হাসাতে কত দুষ্টুমি করেছি মা
আর তুমিও হেসে লুটুপুটি খেতে।
তুমি ভালো থেকো মা সে দেশে
তুমি ভালো থেকো।