আমি এক সৈনিক
আমি এক সৈনিক


(১)
আমি এক সৈনিক
শেষ রাতের যুদ্ধের সৈনিক
ক্ষত বিক্ষত লাশ সরিয়ে ধীরে ধীরে হেটে চলেছি
যুদ্ধ জয়ের দিকে হাতের তলোয়ার রক্তে লাল
শত্রূদের আঘাতে জর্জরিত আমি
অগুনতি নারী হারিয়েছে তাদের স্বামী কত অবোধ শিশু হারিয়েছে তাদের পিতা
কিন্তু তাতে কি হয়েছে এমনটাই তো হওয়ার ছিল
আমার রাজা তো এইটাই চেয়েছিলেন সাম্রাজ্য বিস্তার আর শত্রূর নিধন
এইটাই তো বিধির বিধান
ধর্মগুরু শিখিয়েছিলেন আমাদের
অবিচারের বিচার চাই ঈশ্বরের নামে
ঈশ্বরের রাজ্যে পাপ পুণ্যের বিধান দেবেন রাজা
আর রাজার আদেশ পালন করে ধন্য হবো আমরা
শৌর্য বীর্যের আস্ফালন আর বীরত্বের পুরস্কার
এটাই আমাদের প্রাপ্তি
(২)
কিন্তু বিশ্বাস করো জয়া আমি কিন্তু চাইনি এই দুর্বল সৈনিক হতে
যে এতটাই দুর্বল যে হত্যার আনন্দ
তাকে গ্রাস করেছে
যে এতটাই দুর্বল যে মনুষ্যত্বের
থেকেও গুরুত্ব বেশি তার বীরত্বের
কিন্তু বিশ্বাস করো জয়া আমি কিন্তু চাইনি এই দুর্বল সৈনিক হতে
আমি চেয়েছিলাম তোমার সাথে ঘর বাঁধতে সংসার করতে আর একটু সুখ
বাধ সাধলো বিচারের মুখোশে রাজার মুখ
আর ধর্মের মোড়কে যুক্তিবাদ তার সঙ্গে রাজনীতির নামে সাম্রাজ্যবাদ
আমরা জিতে গেছি জয়া ওরা আর কেউ বেঁচে নেই
একজনেরও চিৎকার শুনতে পাচ্ছিনা
সেনাপতি হুঙ্কার দিছ্যে সম্পূর্ণ বিজয়ের বিজয়ধ্বনিতে মুখরিত যুদ্ধের ময়দান
(৩)
কিন্তু বিশ্বাস করো জয়া আমি কিন্তু চাইনি এই বিনাশ পর্ব
শকুন আর হায়নার দল চারিদিক থেকে ধেয়ে আসছে
রাতের আকাশে আলো ফুটছে
ভোর হতে চলেছে জয়া লাশের পাহাড়ের ফাঁক দিয়ে রক্তিম সূর্যোদয়
লাল আলোর ছটা আমার মুখে
তোমার কি মনে আছে জয়া অনেক বছর আগে আমরা সাক্ষী ছিলাম
এক অন্যরকম সূর্য ওঠার
কিন্তু তার আলোর রং ছিল সোনালী
আজকের মতো গাঢ় লাল নয়