Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Sayandipa সায়নদীপা

Drama Fantasy

5.0  

Sayandipa সায়নদীপা

Drama Fantasy

মং দাদুর দাবানল

মং দাদুর দাবানল

5 mins
1.5K


দুরুম করে একটা আওয়াজ হতেই ঘুমটা ভেঙে গেলো গং এর। ওর এই এক সমস্যা, ঘুমটা বড় পাতলা। একটু শব্দ হলেই তাই ভেঙে যায়। এই নিয়ে তো প্রায় তিন চারদিন হয়ে গেল রাতে একফোঁটা ঘুম হয়নি ওর। আসলে ব্যাপারটা হল গং এর দাদু মং এই কয়েকদিন হলো চোখে শুধু দাবানল দেখতে পাচ্ছেন। কোনো মানুষ নয়, কোনো গাছ নয়, কোনো পশু নয়… শুধুই দাবানল। আবার ঠিক দাবানলও নয়, ধোঁয়াটা খালি। সব কিছু কালো কালো, আবছা আবছা। এই নিয়ে তো দাদুর পাগল পাগল অবস্থা। সারাদিনটা তাও স্থির হয়ে থাকেন কিন্তু রাত হলেই সবাই যখন ঘুমিয়ে পড়ে তখন শুরু হয় তার দৌরাত্ম্য। এদিক সেদিক ছুটে বেড়ান খালি। ধাক্কা খেয়ে পাথরের অস্ত্রগুলো পড়ে যায় দুদ্দাড়। আর এতেই গং এর ঘুম ভেঙে যায়। গং ভাবে বাকিদের ঘুম কত্তটা ভয়ানক, এতো আওয়াজেও ভাঙে না। আজ গং উঠে বসে চোখ দুটো কচলে দেখল দাদু যথারীতি ছোটাছুটি করছেন আর গুহার দেওয়ালে ঠোক্কর খাচ্ছেন। মুখ দিয়ে একটা অদ্ভুত শব্দ করলো গং, তারপর যেই ভাবলো আবার শুয়ে পড়বে তখনই বাইরে থেকে একটা বীভৎস আওয়াজ ভেসে এলো। ভয় পেয়ে গেলো গং, প্রথমে ভাবল কোনো পশু বুঝি আক্রমন করতে এসেছে। কিন্তু পরক্ষণেই মনে হল গুহার সামনে তো আগুন জ্বলছে তাহলে পশু তো আসবে না। আর তাছাড়া আওয়াজটাও ঠিক যেন পশুর গর্জনের মত নয়, অন্য রকম যেন। ভয়ের মধ্যেই একটা কৌতূহলও ঘিরে ধরল গং কে। সে ভাবল দেখাই যাক না, ব্যাপার খানা কি। গুহার মেঝেতে সোজা করে পুঁতে রাখা একটা মশাল তুলে দুরুদুরু বুকে সে বেরিয়ে এলো বাইরে। অন্ধকারে কিছু ঠাহর হয়না পরিষ্কার ভাবে। তবুও গং এর মনে হল যেন দাবানল লেগেছে। প্রথমে ঘাবড়ে গেল সে, ভাবল দাদুর মতো তারও ব্যামো হল নাকি! পরমুহূর্তেই মনে হল নাহ… দাবানল সত্যিই লেগেছে। দাদু তো দাবানল ছাড়া আর কিছু দেখতেই পাননা কিন্তু এই তো গং বেশ দেখতে পাচ্ছে ওর হাতে ধরা মশালটা, ওর নিজের হাত দুটো, ওদের গুহাটা… সব…


  নিশ্চিন্ত মনে গুহায় আবার ঢুকতে যাচ্ছিল সে, হঠাৎ খেয়াল হলো যে জায়গাটায় দাবানল লেগেছে সে জায়গাটায় তো কোনো জঙ্গল নেই….! ওই জায়গাটা তো বৈঠক করার জন্য ফাঁকা করা হয়েছিল। তাহলে ওটা কিসের আগুন…! একটা ঢোঁক গিলল গং। আবার ভয়ে ভয়ে পেছন ফিরে দেখলো কই আগুন, কিচ্ছু তো নেই! শুধু ওই জায়গার অন্ধকারটা যেন একটু বেশিই জমাট বাঁধা। তাহলে কি ও একটু আগে ভুল দেখলো! কে জানে! গুহার ভেতর ঢুকে গং দেখলো দাদু ঘুমিয়ে পড়েছে। তাই এবার ও নিশ্চিন্ত মনে ঘুমোতে গেল।


  সকালে ঘুম ভাঙলো চিৎকার চেঁচামেচির আওয়াজে। ধড়ফড় করে উঠে বসতেই মা ওকে বললেন, “শিগগির একটা মশাল নিয়ে বাইরে যা গং, একটা দানো এসেছে কাল রাতে।” 

মায়ের কথায় চমকে উঠল গং, “দানো!”

“হ্যাঁ রে, আমাদের বৈঠক করার জায়গাটায় দানোটা দাঁড়িয়ে আছে। একটা দানো নড়ছে, আরেকটা যেটা খুব বড় দানো সে মনে হয় মরে গেছে। সে নড়ছে না।”

মায়ের কথা শেষ হতেই আচমকা গং এর কাল রাত্তিরের কথা মনে পড়ে গেল। কাল রাতে কি তাহলে ও ওই দানোটাকেই দেখেছিল!

“শিগগির যা বাইরে, সবাই চলে গেছে।” 

মায়ের কথায় সম্বিৎ ফিরল গং এর। একটা মশাল জ্বালিয়ে ছুটল বাইরে। সেই ফাঁকা জায়গাটায় আসতেই দেখতে পেলো অনেক লোক মশাল নিয়ে ঘিরে ফেলেছে দানোটাকে। গং ভালো করে তাকে দেখলো। উচ্চতা ওই গং দের মতোই হবে। পরনে একটা কেমন চকচকে পোশাক, ওদের মত পশুর চামড়া নয়। গং এর ভারী লোভ হলো ওর পোশাকটাকে ছুঁয়ে দেখার, কি সুন্দর ওটা। দানোটার মাথাটা আবার বিশাল বড় গোল মত, দেখেই বোঝা যাচ্ছে মাথাটা খুব শক্ত। দানোটা কিসব যেন বলার চেষ্টা করছে, কিন্তু ওর কথা গং’রা কিছুই বুঝতে পারছে না। কয়েকজন লোক গিয়ে মরা দানোটাকেই ঘিরে ধরেছে। মরা দানোটা তো আরও অদ্ভুত। ওটার গাটা খুব শক্ত, তার ওপর আবার কেমন খোপ খোপ। এ আবার কেমন দানো ভেবে পেলো না গং। এদিকে জ্যান্ত দানোটা অদ্ভুত অঙ্গভঙ্গি করে কিসব যেন বলার চেষ্টা করছে। গং ভালো করে ওর কথাগুলো বোঝার চেষ্টা করলো। তখনই কেউ ওর পিঠে খোঁচা মেরে বলল, “দানোর কথা শুনিস না, অমঙ্গল হবে।

দানোটাকে মারো…”

“মারো”... “মারো”... রব উঠলো চারিদিকে। গং’রা মশাল বাগিয়ে এগিয়ে গেলো। বোঝাই যাচ্ছিল দানোটা ভয় পেয়েছে খুব। সে এক পা দু’পা করে পেছতে লাগলো। কিন্তু আচমকাই গং’রা আক্রমণ হানার আগেই কে যেন এসে দানোটাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিলো। গং দেখলো যে ধাক্কা মেরেছে সে আর কেউ নয়, স্বয়ং দাদু। তবে আসলে দাদু দানোকে ধাক্কা মারার জন্য মারেনি , নিশ্চয় দাবানল দেখতে দেখতে ধাক্কা দিয়ে ফেলেছে। আকস্মিক দাদুর এই কাণ্ডে ওদের দলের সবাই হতভম্ব হয়ে থমকে গিয়েছিল ক্ষণিকের জন্য। ধাক্কা খেয়ে দাদু গোঁ গোঁ করে আওয়াজ করতে করতে পাক খাচ্ছিল ঠিক যেমনটা রাতে করে। দানোটা মাটিতে পড়া অবস্থাতেই দাদুকে দেখছিল ভালো করে। কয়েক মুহূর্ত এভাবে দেখার পরেই সে আচমকা লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়ালো; গং দের দলের সবাইও আবার চকিত হয়ে গেল দানোটাকে উঠতে দেখেই। কিন্তু দানোটা এবার আর ওদের সেভাবে রেয়াত করলো না, বরং ওর ওই অদ্ভুত পোশাকটার ভেতর থেকে কি একটা কিম্ভুত জিনিস বের করে আনলো। তারপর সোজা সেটা সেঁটে দিলো দাদুর চোখে। গং রা সবাই ভয়ে চিৎকার করে উঠল, এ নিশ্চয় শয়তানী কোনো জিনিস!

কিন্তু আশ্চর্য কথা ওটা পরা মাত্রই দাদুর গোঁ গোঁ শব্দ করা থেমে গেলো, অদ্ভুত দৃষ্টিতে তিনি তাকালেন সকলের দিকে। ভয় পেয়ে গংরা দাদুর কাছাকাছি আসতেই দাদু আনন্দে চিৎকার করে উঠলেন, “নিভে গেছে… নিভে গেছে… দাবানল নিভে গেছে।”


                  ★★★★★


ওই আদিম মানুষগুলোর উল্লাসের ফাঁকে ওর মহাকাশ যানটায় চড়ে টুক করে সেটা চালু করে দিলো রাজেশ। কাল ল্যান্ডিং এর সময় গন্ডগোল হওয়াতে আগুন জ্বলে গিয়েছিল ওটায়, প্রথমে ভয় পেয়ে গেলেও রাজেশ পরে বুঝতে পারে রাতের মধ্যেই যানটার সমস্যাটা সরিয়ে নেওয়া সম্ভব। কিন্তু তখনও ও ঘূর্ণাক্ষরেও টের পায়নি, তুলনামূলক এই নব গঠিত গ্রহটায় ইতি মধ্যেই প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। শুধু তাই নয় সব দেখে তো মনে হল এখন নব্য প্রস্তর যুগ চলছে। আরেকটু হলেই ওদের হাতে প্রাণটা যেত রাজেশের, কে জানে ওর মৃত্যু রহস্যের কিনারা করতে কত সময় পেরিয়ে যেতো ওর সহকর্মীদের! তবে কথায় বলে না রাখে হরি মারে কে… ওই বুড়োটা না এলে আজই রাজেশের ভবলীলা সাঙ্গ হয়ে যেত। বুড়োটাকে দেখেই ওর মনে হয় লোকটা চোখে ভালো দেখতে পাচ্ছেনা, তাই রাজেশ বুদ্ধি করে বুড়োটার চোখে ওর চশমাটা পরিয়ে দেয়। আর তাতেই কেল্লা ফতে! 


শেষ।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Drama