Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Sayandipa সায়নদীপা

Drama

3  

Sayandipa সায়নদীপা

Drama

ফ্রাস্ট্রেশন দূর করার সহজ উপায়

ফ্রাস্ট্রেশন দূর করার সহজ উপায়

7 mins
1.2K


“কি গো! বলি আমার জুসটা রেডি হলো?”


সাতসকালে জুসারের বিকট শব্দ ভেদ করে গিন্নির ততোধিক বিকট গলার স্বর এসে আঘাত করলো ক্ষেমঙ্কর বাবুর কানের পর্দায়। মিনমিনে গলায় জবার দেওয়ার চেষ্টা করলেন তিনি কিন্তু সেই জবাব বিভাবরী দেবীর কান অবধি যে পৌঁছাল না তা বোঝা গেল যখন পুনরায় নিজের বাজখাঁই গলায় হুঙ্কার ছাড়লেন তিনি, “বলি কালা টালা হয়ে গেলে নাকি?”


  কোনোমতে জুসার থেকে একটা বড় কাঁচের গ্লাসে জুসটা ঢেলেই গিন্নির উদ্দেশ্যে ছুটলেন ক্ষেমঙ্কর বাবু। সাউন্ড সিস্টেম চলছে জাস্টিন বিবারের গান আর সেই ছন্দে একটা ঢোলাঢালা গেঞ্জি আর ট্র্যাকস্যুট পরিহিতা বিভাবরী দেবী নিজের নব্বই কেজির শরীরটা দুলিয়ে দুলিয়ে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। দৃশ্যটা ক্ষেমঙ্কর বাবুর কাছে অপরিচিত কিছু নয় তবুও রোজই তিনি এই দৃশ্য দেখে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়েন আর ভিরমি খাওয়ার কথা ভাবেন কিন্তু দ্বিতীয়টা আর হয়ে ওঠেনা কোনোদিনই। 


  কসরতের চেষ্টা থামিয়ে জুসের গ্লাসটা নিয়ে বিভাবরী দেবী বললেন, “শোনো, আমি এখন সবজি কিনতে যাবো বাজারে…”


“বাজারে নাকি এপার্টমেন্টের নীচে রাধে রাধের ঠেলায়?”


“ওই একই হলো আর কি; আর ওর নাম বসন্ত সিং, রাধেরাধে নয়। আচ্ছা তুমি এসব বাজে কথা বলে সময় নষ্ট করছো কেন বলত!”


“আরে না না, তুমি বলো কি বলছিলে।”


“বলছি যে আজ একটু জম্পেশ করে লুচি আলুর দম বানাও তো দেখি।”


“লুচি আলুর দম! কিন্তু তুমি তো ডায়েটে আছো…”


“তো? এক আধ দিন খেলে কিছু হয়না।”


“কিন্তু পরশুও তো পরোটা…”


“তুমি বানাবে কিনা বলো!”


বিভাবরী দেবীর শেষ কথাটার প্রতিধ্বনিতে পিলে চমকে গেল ক্ষেমঙ্কর বাবুর। গিন্নিকে না বলার সাধ্যি তার নেই।


   বিভাবরী দেবী বেরিয়ে যাওয়ার পর একডিশ ময়দা নিয়ে সোফায় বসে টিভিটা চালালেন ক্ষেমঙ্কর বাবু। রিমোটের বোতাম টিপে চলে গেলেন তাঁর কাঙ্খিত একটি চ্যানেলে, প্রত্যেকদিন সকাল ছ’টা থেকে ন’টা এই চ্যানেলটাতে রবীন্দ্র সংগীত শোনায়। বিভাবরী দেবী বাড়িতে থাকা অবস্থায় তো চালাবার জো নেই, এই বাড়িতে সাউন্ড সিস্টেমে সারাদিন কিসব ইংরেজি গান বাজে। সেই সব গানের ধ্যিনচ্যাক তালে প্রতিমুহূর্তে ক্ষেমঙ্কর বাবুর মনে হয় এই বুঝি তাঁর হৃৎস্পন্দন বন্ধ হলো। যাইহোক প্রত্যেকদিন বিভাবরী দেবীর রাধে রাধের কাছে সবজি কিনতে যাওয়ার আধ ঘন্টা কি পঁয়তাল্লিশ মিনিট সময় টুকুই ক্ষেমঙ্কর বাবু নিজের শখের পেছনে ব্যয় করার সুযোগ পান। বিভাবরী দেবীর রাধে রাধের কাছে সবজি কেনার নামে এপার্টমেন্টের অন্যান্য মহিলাদের সাথে পি এন পিসি করার অভ্যাসটাকে আগে তীব্র ঘৃনা করতেন ক্ষেমঙ্কর বাবু কিন্তু এখন পরিস্থিতি উল্টো, এখন তিনি প্রত্যেকদিনই প্রার্থনা করেন বিভাবরীর আরেকটু দেরি…. আরেকটু দেরি…


   বিভাবরী দেবীকে দেখে এসে ক্ষেমঙ্কর বাবুর বাবা বলেছিলেন যেন সাক্ষাৎ মা লক্ষী; সাত চড়েও রা কাড়বে না, আর শরীর স্বাস্থ্যও সংসারের কাজ সামলানোর জন্য একদম উপযোগী। কিন্তু এহেন মা লক্ষীই যে কয়েক বছরের মধ্যে জলহস্তীর আকার ধারণ করে তাঁর ছেলেকেই টিকটিকি বানিয়ে ফেলবেন তা বোধহয় ক্ষেমঙ্কর বাবুর বাবা ঘূর্ণাক্ষরেও আন্দাজ করতে পারেননি। রিটায়ার করার পর ক্ষেমঙ্কর বাবু বিভাবরী দেবীকে ফোনে তাঁর এক বান্ধবীর উদ্যেশ্যে বলতে শুনেছিলেন, “আমি ওকে বলে দিয়েছি সারাজীবন আমি তোমার সেবা করেছি, এখন তুমি রিটায়ার করেছ এবার তুমি আমার সেবা করবে।”

কথাটা শুনে ক্ষেমঙ্কর বাবু মনে মনে ভাবতে চেষ্টা করেছিলেন গিন্নির সেবার নমুনাটা; সারাজীবন স্কুলে যাওয়ার আগে ভাত, আলুসেদ্ধ, উচ্ছেসেদ্ধ , বাসী ডাল ছাড়া আর কিছু কোনোদিনও জুটেছিল বলে তাঁর মনে পড়েনি। সকাল সন্ধ্যের চা টাও দোকানে গিয়ে খেতে হত তাঁকে কারণ বিভাবরী দেবী নিজে চা খাননা তাই সেটা বানানোর কষ্টও করতেন না। এছাড়া তাঁর সেবার আরো অনেক নমুনা রয়েছে যা ক্ষেমঙ্কর বাবু স্মরণে এনে তাঁর দুঃখী মনটাকে আর ভারাক্রান্ত করতে চাননা।


  তবে আমাদের ক্ষেমঙ্কর বাবু যে নরমসরম নিরীহ প্রাণী এমনটা কিন্তু ভাবার কোনো কারণ নেই মোটেও। মনোহরপুর হাইস্কুলের বাংলার শিক্ষক ক্ষেমঙ্কর বাবু ছিলেন ছাত্র ছাত্রীদের কাছে ত্রাস। তাঁর নাম শুনলেই তাদের বুক কেঁপে উঠতো। আসলে নিজের ফ্রাস্ট্রেশন ঝাড়ার জন্য কোনো একটা জায়গা তো চাই নাকি! অনেকে আছেন কর্মস্থলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আধিপত্যজনিত ফ্রাস্ট্রেশন ঝাড়েন নিজের স্ত্রীর ওপর, আর আমাদের ক্ষেমঙ্কর বাবুর কাছে নাহয় ব্যাপারটা উল্টো কিন্তু কারণটা তো ওই একই... ফ্রাস্ট্রেশন। কোনো ছাত্রের চেহারা পছন্দ না হলে, কোনো ছাত্রী চুলে বিনুনি করতে ভুলে গেলে, কারুর একটা পায়ের মোজা অপর পায়ের মোজার থেকে ইঞ্চি দুয়েক নীচে নেমে গেল, ক্লাসের মাঝে কোনো ছাত্রের কাশির দমক উঠলে, কারুর হাত ফসকে কলমটা মাটিতে পড়ে গেলে তারাই প্রধানত হতো ক্ষেমঙ্কর বাবুর ফ্রাস্ট্রেশন ঝাড়ার লক্ষ্য মানে ইংরেজিতে যাকে বলে “ইজি প্রে”। এছাড়া পড়া বলতে না পারলে কি হতো তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে? এবার আপনারাই বলুন রিটায়ারমেন্টের পর এই মানুষটি কোথায় নিজের ফ্রাস্ট্রেশন ঝাড়বেন? একটা কোনো জায়গা তো চাই নাকি?


 

                     ২


“কবিগুরুর নোবেলপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে আমরা প্রখ্যাত কবি ইয়েটসের অবদান কিছুতেই বিস্মৃত হতে পারিনা। ইয়েটস কতটা মহান হৃদয়ের অধিকারী ছিলেন আজকের ঈর্ষাপরায়ন সমাজে দাঁড়িয়ে তা ভাবতেও অবাক লাগে, তিনি নিজে তখন অবধি নোবেল প্রাইজ না পাওয়া সত্ত্বেও আমাদের কবিগুরুর কাব্যগ্রন্থকে নোবেল প্রাইজের জন্য অনুমোদন করেছিলেন।”


“শ্রীমান অম্বরিশ জোয়ারদার বাবু আপনি দয়া করে গ্রূপের নিয়মাবলী পড়ুন। আপনি গ্রূপের নিয়ম বিরুদ্ধ কাজ করেছেন।”


“মানে? বুঝলাম না।”


“গ্রূপের নিয়ম অনুযায়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছাড়া অন্য কোনো কবির আলোচনা এখানে চলবে না। কিন্তু আপনি ওপর একজন কবির নাম এনে গ্রূপের নিয়ম বিরুদ্ধ কাজ করেছেন তাই আপনার মন্তব্যটি মুছে দিয়ে আপনাকে সতর্ক করা হচ্ছে এরকম কাজ ভবিষ্যতে করার থেকে যাতে বিরত থাকেন।”


“আরে মশাই আমি তো কবি গুরুর প্রসঙ্গেই ইয়েটসের কথা আনলাম।”


“আবার আপনি নিয়ম ভাঙলেন! আবার ওপর একজন কবির নাম লিখলেন! আপনাকে একমাসের জন্য গ্রূপ থেকে মিউট করা হলো।”


  মিউটের বোতামটা টিপে এক স্বর্গীয় সুখ অনুভূত হলো ক্ষেমঙ্কর বাবুর। মনে মনে জনৈক অম্বরিশ জোয়ারদারের মুখটা কল্পনা করে একপ্রকার বিশেষ আত্মপ্রসাদ অনুভব করলেন তিনি। 


     ঘটনার সূত্রপাত আজ থেকে ঠিক ছ’মাস আগে। এক প্রাক্তন সহকর্মী রাজনাথ বাবুর স্মরণ সভায় গিয়ে ক্ষেমঙ্কর বাবুর দেখা হয়ে যায় আর এক সহকর্মী অলকেশ বাবুর সঙ্গে। দীর্ঘদিনের সহকর্মী তথা কাছের বন্ধু অলকেশকে পেয়ে স্মরণ সভার পর গল্পে মেতে ওঠেন ক্ষেমঙ্কর বাবু। কথা প্রসঙ্গে অলকেশ বাবু মন্তব্য করলেন স্ত্রীর মানসিক অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়েই নাকি রাজনাথ বাবু অকালে ইহলোক ত্যাগ করলেন। কথাটা শুনে বুকটা চ্যাঁত করে উঠল আমাদের ক্ষেমঙ্কর বাবুর। তাঁর চোখ মুখের হঠাৎ পরিবর্তন দেখেই অলকেশ বাবু বোধহয় আন্দাজ করে নেন তাঁর মনের অবস্থা। এছাড়া কর্মজীবনেও ক্ষেমঙ্কর বাবুর অবস্থা সম্পর্কে কিছুটা হলেও অবহিত ছিলেন তাই বললেন, “ভায়া ফ্রাস্ট্রেশন পুষে রেখো না। একে রোজের রোজ ঝেড়ে ফেলতে শেখ নয়তো…”


“নয়তো কি?”


“এই যে আমাদের রাজনাথের মতো অবস্থা হবে।”


“না না ভাই। কিছু একটা উপায় বলো না তুমি। এতো তাড়াতাড়ি ওপরে যেতে চাইনা আমি।

 আগে নাহয় স্টুডেন্টদের ওপর বের করে দিতাম যাবতীয় ফ্রাস্ট্রেশন কিন্তু এখন বড় কষ্ট পাই ভাই, ওটা ঝেড়ে ফেলার কোনো জায়গাই খুঁজে পাইনা।”


“শান্ত হও বন্ধু। আমি আছি তো, এতো ভয় কিসের! এমন জব্বর আইডিয়া দেবো না দেখবে সব ফ্রাস্ট্রেশন নিমেষে ফুড়ুৎ।”


এরপরেই অলকেশ বাবু চুপিচুপি বলেন তাঁর জম্পেশ আইডিয়াটা। আইডিয়া বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে এবার সেদিন বাড়ি ফিরে বহুকষ্টে বহু প্রচেষ্টার পর অবশেষে ক্ষেমঙ্কর বাবু মিনমিনে গলায় গিন্নিকে বলতে সক্ষম হন যে তাঁর একটা এন্ড্রয়েড ফোন চাই। তিনি ভেবেছিলেন বিভাবরী দেবী এই বুঝি তেড়ে আসবেন কিন্তু তার পরিবর্তে তাঁকে অবাক করে দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে সম্মতি জানান গিন্নি। 


   এর ঠিক এক সপ্তাহের মাথায় বিভাবরী দেবী নিজের জন্য একটা ইয়া বড়ো ট্যাব কিনে নিজের পুরোনো এন্ড্রয়েড ফোনটা দিয়ে দেন ক্ষেমঙ্কর বাবুকে। ব্যবহৃত জিনিস পেয়ে মনে মনে একটু দুঃখ পেলেও মুখে কিছুই বলেন না ক্ষেমঙ্কর বাবু; বরং মহা উৎসাহে নেমে পড়েন ময়দানে। গতবছর শীতের ছুটিতে যখন ব্যাঙ্গালোর নিবাসী তাঁদের একমাত্র পুত্র রৌনক সপরিবারে এসেছিল তখন নাতি টোপাই ফেসবুকে ক্ষেমঙ্কর বাবুর একটা একাউন্ট খুলে দিয়েছিল, আর শিখিয়ে গিয়েছিল ফেসবুক নিয়ন্ত্রণ করার যাবতীয় কলাকৌশল। সেই সাথে পরিচিত লোকেদের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে লম্বা একটা ফ্রেন্ড লিস্টও বানিয়ে দেয়। এবার এই প্রথম নিজের একাউন্টে লগ ইন করেন ক্ষেমঙ্কর বাবু। প্রোফাইল পিকচারের স্থানে জ্বলজ্বল করতে দেখেন তাঁদের সুখী দাম্পত্য জীবনকে জনসমক্ষে তুলে ধরার প্রচেষ্টা স্বরূপ এক আত্মীয়ের বিয়েতে কোট প্যান্টেলুন পরে বিভাবরী দেবীর কাঁধে হাত রেখে তোলা দেঁতো হাসিতে ভরপুর একখানা ছবি। ছবিটার দিকে একঝলক তাকিয়ে কেমন যেন ঘাবড়ে যান ক্ষেমঙ্কর বাবু, মুহূর্তের জন্য মনে হয় তাঁর নিজের ছবিটাই যেন তাঁকে ভেংচি কাটছে। যাইহোক, এরপরেই তিনি সৃষ্টি করেন তাঁর বিখ্যাত (কুখ্যাত) ফেসবুক গ্রূপ “রবীন্দ্র ভাবনা ও বাংলা সাহিত্য”। বিচিত্র সব শর্ত দিয়ে লিখে ফেলেন একখানা লম্বা গ্রূপ ডেস্ক্রিপশন; যেমন রবীন্দ্রনাথ ব্যতীত অন্য কোনো সাহিত্যিকের নূন্যতম আলোচনা চলবেনা এমনকি অন্য সাহিত্যিকদের নামও উল্লেখ করা অপরাধ বলে বিবেচিত হবে, অন্য কোনো ভাষার প্রয়োগ এখানে চলবে না ইত্যাদি ইত্যাদি।


   ক্ষেমঙ্কর বাবু বরাবরই রবীন্দ্র অনুরাগী এবং তাঁর মতো বিশুদ্ধ রবীন্দ্র অনুরাগী সারা বাংলা খুঁজেও আর পাওয়া যাবেনা এই তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস। শুধু তাই নয় আধুনিক যুগের কোনো সাহিত্যিককেই তাঁর ঠিক মনে ধরেনা, এবং বিশ্ব সাহিত্যের প্রতিও তাঁর ঘোর অনীহা। এবার এই অনুরাগকে কাজে লাগিয়েই ময়দানে নেমে পড়লেন ক্ষেমঙ্কর বাবু। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙালির এক আবেগের জায়গা তাই তাঁর নামে তৈরি হওয়া গ্রূপে সাহিত্যপ্রেমী বাঙালীর ব্যাপকহারে প্রবেশ ঘটবে এ আর নতুন কথা কি! কিন্তু সেই সাথে ক্ষেমঙ্কর বাবুর গ্রূপের বিচিত্র নিয়মাবলী মানতে সদস্যদের যে গলদঘর্ম অবস্থা হবে তাও আগে থেকেই অনুমান সাপেক্ষ। যত সদস্য সংখ্যা বাড়তে থাকে ক্ষেমঙ্কর বাবুর টার্গেট পাওয়াও সমানুপাতিক হারে সোজা হতে থাকে। ওই তো গ্রূপটা খোলার কিছুদিনের মধ্যেই একটি কমবয়সী ছেলে মহা উৎসাহে গ্রূপে রবীন্দ্র সংগীতের হিন্দি অনুবাদের একটি ভিডিও আপলোড করে। ছেলেটিকে এমন কড়া ভাষায় ক্ষেমঙ্কর বাবু ধমকে দেন যে পরের দিন থেকে গ্রূপে ছেলেটির টিকিও আর দেখা যায়না। কিন্তু নো প্রবলেম… একজন যায় তো নতুন দুজন যোগ হয়। সেই থেকে ক্ষেমঙ্কর বাবুর এই বেশ চলছে। প্রত্যেকদিন বিকেলে বিভাবরী দেবীর ক্লাবে যাওয়ার সময়টাই হলো ক্ষেমঙ্কর বাবুর ফ্রাস্ট্রেশন দূর করার উপযুক্ত সময়।


   ঘড়িটার দিকে একবার তাকালেন ক্ষেমঙ্কর বাবু, ক্ষীণ টিকটিক শব্দের মাধ্যমে ঘড়িটা জানান দিলো এখন বাজে সন্ধ্যা ৭:১৫, তারমানে বিভাবরী দেবীর ফিরতে কমপক্ষে আরো পনেরো মিনিট বাকি। একটা বাঁকা হাসি খেলে গেলো ক্ষেমঙ্কর বাবুর ঠোঁটের কোণে তারপর পুনরায় চোখ রাখলেন মোবাইলের স্ক্রিনে… গ্রূপের দেওয়ালে আবার মন দিয়ে খুঁজতে শুরু করলেন আজকের দ্বিতীয় শিকার...।


শেষ।



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Drama