Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Sayandipa সায়নদীপা

Drama Tragedy

3  

Sayandipa সায়নদীপা

Drama Tragedy

আঁধারে

আঁধারে

3 mins
5.7K


আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে বৃষ্টি নেমেছে। নিকষ কালো অন্ধকারে সে বৃষ্টি চোখে দেখা যায়না, শুধু অনুভব করা যায়। দত্তদের বাড়ির রান্না সেরে বাড়ি ফিরছিল মালতি; বাম হাতে ধরা একটা সস্তাদামের টর্চ বর্ষার বাষ্পে যার আলো প্রায় নিভুনিভু, ডান হাতে ধরা একটা ছাতা যার রংটা এই সন্ধের মতোই অন্ধকার। হওয়ার দাপটে ছাতা ধরে রাখা দায়, মাঝেমাঝেই কাপড়টা উল্টে যাচ্ছে, কোনোমতে তাকে সামাল দিয়ে এগিয়ে চলছে মালতি। বিদ্যুৎ চমকালেই মনে হচ্ছে যেন চোখের সামনে একরাশ রুপোলি সুতো বেঁধে কোনো উৎসবের আয়োজন চলছে। মালতিদের পাড়ায় আজকাল সন্ধ্যে হলেই কারেন্ট থাকে না, আজ তো আবার থাকার প্রশ্নই ওঠে না। গোটা পাড়াটা শুনশান, একলা রাস্তায় হাঁটছে মালতি। খুব সন্তর্পণে আন্দাজ করে কাদা বাঁচিয়ে পা ফেলার চেষ্টা করছে। বাড়ির কাছাকাছি আসতেই সাবধানতা আরও বেড়ে যায়, এখানে একপাশে কিছু বোল্ডার ফেলা আছে, তাতে একবার ধাক্কা খেয়ে গেলে মুশকিল! বাড়ির সামনে এসে ভেজা আঁচলের খুঁটের সঙ্গে চাবি নিয়ে তালা খোলে মালতি, জলে ভেজা কাঠের দরজাটায় ক্যাঁচ করে একটা শব্দ হয়। অকারণেই চমকে ওঠে মালতি, কেমন যেন ভয় ভয় লাগে তার। ঘরের ভেতরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে টর্চের ক্ষীণ হয়ে আসা আলোর রেখাটাও হারিয়ে যায়। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে অন্ধকারে হাতড়ে হাতড়ে হ্যারিকেন খুঁজতে গিয়ে মালতির মনে পড়ে কাল কেরোসিন শেষ হয়ে গিয়েছিল। একরাশ বিরক্তি নিয়ে এবার সে খুঁজে খুঁজে লম্ফ জ্বালায়। লাল আলোর শিখাটা ঘরে বছর বারোর একটা ছেলে বেড়ালের মত সবুজ চোখ নিয়ে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার দিকে, ছেলেটার ঠোঁটের কোণ থেকে লালা ঝরছে অনবরত। মালতি তাকিয়ে থাকতে থাকতেই তার কপাল চুঁইয়ে পড়তে শুরু করে রক্ত...

************************************************************

বছর দশেক আগের কথা, সিরিয়াল দেখার নেশায় তার দায়িত্বে থাকা ছোট্ট অর্ঘ্য ঘুম থেকে উঠে কাঁদছে শুনেও উঠে দেখার প্রয়োজন মনে করেনি মালতি। যখন উঠে যায় শেষমেশ তখন থেমে গেছে কান্না, আট মাসের শিশুটা পড়েছিল পাথরের মেঝেতে। ভয়ে মালতি তাকে কোলে তুলে দেখে নিঃশ্বাস পড়ছে তখনও, আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই শরীরে। নিশ্চিন্ত হয়ে মালতি বাচ্চাটাকে আবার শুইয়ে দেয় খাটে। বাড়িতে কেউ ছিল না তাই কেউ কোনোদিনও জানতেই পারেনি এ কথা। একটু বড় হওয়ার পর অর্ঘ্যর মা বাবা আবিষ্কার করে তাদের ছেলে আর পাঁচটা বাচ্চার মত স্বাভাবিক নয়, চোখেও ভালো দেখতে পায়না সে। ডাক্তার জানান যে ছোটবেলায় মস্তিকে আঘাত লাগার ফলে এই বিপত্তি। সে যাইহোক মালতিকে কিন্তু কেউ সন্দেহ করতে পারেনা, আর ততদিনে মালতি অর্ঘ্যদের বাড়ির কাজও ছেড়ে দিয়েছে।

************************************************************

ছেলেটা হাতে ভারী কিছু একটা নিয়ে মালতির মাথাটা লক্ষ্য করে একটু একটু করে এগিয়ে আসছে, চোখে তার এক পৈশাচিক দৃষ্টি..চিৎকার করতে গিয়েও গলা দিয়ে শব্দ বের হয়না মালতির, স্থানুবৎ হয়ে বসে থাকে মালতি জানে এসব সত্যি নয়, এটা সম্পূর্ণ স্বপ্ন, ভয়ঙ্কর একটা স্বপ্ন… আজ প্রায় মাস ছয়েক ধরে সে দু’চোখের পাতা এক করলেই দেখতে পায় এই দৃশ্য। মালতি জানেনা এর শেষ কোথায়, মালতি জানেনা এর থেকে মুক্তির উপায় কি! পাড়ার লোক মালতিকে এখন পাগলি বলে ডাকে, ঠিক যেমন করে সেদিন তিন তলার ছাদ থেকে পড়ে যাওয়ার আগে অবধি পাড়ার ছেলেরা এই নামে ডেকেই উত্যক্ত করতো ছোট্ট অর্ঘ্যকে…

বি:দ্র: - এবনরম্যাল শিশুদের পাগল বলে সম্বোধন করা এবং তাদের উত্যক্ত করা কখনোই সমর্থনীয় নয়।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Drama