Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Gopa Ghosh

Romance

4.9  

Gopa Ghosh

Romance

গতিহারা

গতিহারা

9 mins
1.0K


গতি নিজেও কোনোদিন ভাবে নি তার জীবনের গতি এভাবে হারিয়ে যাবে। কুসুমের মৃত্যু এখনও কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না গতি। আর মাত্র আঠেরো দিন পরে ওদের বিয়ের দিন ঠিক হয়েছিলো। এক অজানা জ্বর এ কুসুম চলে গেলো। বছর চার প্রেম করার পর বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ওরা। গতির বাড়ির ও কোনো আপত্তি ছিল না, বরং গতির মা এই বিয়েতে বেশ খুশিই ছিলেন। কুসুম খুব সুন্দরী না হলেও একটা চটক ছিল ওর মধ্যে, যা অনেকেরই ভালো লাগতো। কথা কম বলতো কিন্তু চোখে অনেক কিছুই বুঝিয়ে দিতো, যা গতিকে চুম্বকের মতো ওর দিকে টেনে নিয়ে গেছে।

আজ কুসুম নেই, আছে শুধু ওর স্মৃতি টা।

এখনও গতি চোখ বুজলেই কুসুমের মুখটা দেখতে পায়। ওকে এতটাই ভালোবাসত যে কুসুমকে ছাড়া জীবন টা যেনো এখনও কল্পনাই করতে পারছে না। ঘরে কুসুমের একটা ফটো ও বেশ কিছুদিন আগেই টাঙিয়ে রেখেছিল। কুসুম বারণ করেছিল, বলেছিলো " ঘরে কেউ প্রেমিকার ছবি দেওআলে টাঙিয়ে রাখে না, বউ যখন হবো, তখন রেখো"

"আমি তোমাকে বউ ভাবি, লোকে কি ভাবে আমার জানার দরকার নেই"

কুসুম উত্তরের বদলে মুচকি হাসে।

সেই দিনগুলোর কথা মনে পরলে বুকটা ভেঙ্গে চুরমার হোয় যায় গতির।

কুসুমকে ভুলতে না পারলেও, জীবনটাকে আগের চেয়ে অনেক অনেক ভারী মনে হলেও গতিকে এগোতে হয়। অফিস থেকে ফিরে এখন খুব একা মনে হয় ওর। বিয়ে না হলেও ফোনে সবসময় ওর প্রতিটা জিনিসের খোঁজ রাখতো কুসুম। এখন আর খোঁজ নেওয়ার কেউ রইলো না।

গতি অফিসে বেরোনোর আগে রোজ মাকে প্রণাম করে। আজ মাকে দেখে মনে হলো শরীরটা খুব একটা ভালো নেই। গতির বাবা বেশ কয়েক বছর আগেই মারা গেছেন। মা ছাড়া ওর আর কেউ নেই।

"গতি, তোকে একটা কথা বলবো বাবা?" মা র গলায় অনুরোধের সুর।

"বলো না, এতে জিজ্ঞেস করার কি আছে?"

"কুসুম কে তুই ভুলতে পারছিস না আমি জানি, কিন্তু তোকেও ত জীবনে এগোতে হবে"

কাশিতে গলা বুজে যায় মা র।

"এসব নিয়ে এত ভেবো না মা, আর এটাও জেনো, কুসুমের জায়গা আমি আর কাউকে কোনোদিন দিতে পারবো না"

গলাটা গম্ভীর হয় যায় গতির।

বেশ কিছুদিন পরে অফিস থেকে ফিরে দেখে কুমুদ বাড়িতে এসেছে। কুমুদ হলো গতির জ্যাঠার মেয়ে। ওর থেকে বছর চারেক এর বড়ো। স্বামী সুধীন ডাক্তার। গোলাপের অসুখের সময় সুধীন প্রাণ পন চেষ্টা করেছিল বাঁচিয়ে তোলার। কিন্তু নিয়তি কে কেই বা রুখতে পারে। কুমুদ আর সুধীন গোলাপ কে খুব পছন্দ করত। বিয়ের পাকা কথা বলার সময় মায়ের সাথে ওরা ই ছিল। গোলাপের চলে যাওয়ার পর কুমুদের সাথে এটা ওর দ্বিতীয় বার দেখা। দুজনেই কিছুক্ষণ চুপ করে রইলো। আসলে কুমুদকে দেখে গতির মনে যে গোলাপের স্মৃতি গুলো দাপাদাপি শুরু করেছে সেটা কুমুদ খুব ভালো করে বুঝতে পারছিল। নিস্তব্ধতা ভাঙ্গে গতিই,

"সুধীন দা এলো না"?

"না রে ও মুম্বাই গেছে একটা কাজে, কাল ফিরবে"

গতি মাকে চা করতে বলে উঠতে যাবে, কুমুদ বলে ওঠে "শোন, তোকে একটা কথা বলার ছিল" গলায় অনুরোধের সুর।

"বল না, কি বলবি"

"আমার এক বন্ধুর বোনকে কিছুদিন তোদের বাড়িতে থাকতে দিবি, মানে ও এখান থেকে একটা কম্পিউটার কোর্স করেই চলে যাবে"

"এরকম করে বলছিস কেনো? এটা তো তোর ও বাড়ি, " গতি আবার বলে " তুই আসতে বলে দে, মা তো একা একা থাকে, কেউ থাকলে ভালই লাগবে মায়ের"

দিন পাঁচের মধ্যেই শিউলি কে নিয়ে কুমুদ আসে। গতির মা খুব খুশি, একজন কাউকে তো পাওয়া যাবে কথা বলার।

সেদিন অফিস থাকে ফিরে সোফায় বসা শিউলি কে দেখেই বুঝতে পারে এই সে, যার কথা কুমুদ বলেছিলো। মা ওকে কিছু বলতে যাচ্ছিল কিন্তু গতি না শোনার ভান করে ওর ঘরে ঢুকে যায়।

গতি রোজ ভাবে ভোরে উঠে মর্নি ওয়াকে যাবে কিন্তু কিছুতেই ঘুম ভাঙ্গে না। সেদিন বেশ দেরি করেই ঘুম ভাঙলো গতির। দেখলো পাশের টেবিলে চা রাখা। ওর বেড টি পানের অভ্যাস নেই, সেটা মা জানে। ফ্রেশ হয়ে দেখে অনেক বেলা হয়ে গেছে । এত বড়ো দুর্ঘটনার পর বেশ কিছুদিন ও অফিস যেতে পারেনি, সবাই কুসুমের কথা জানত তাই ছুটি নিয়ে কোনো অসুবিধা হয় নি কিন্তু এখন খুব কাজের চাপ। এসব ভাবতে ভাবতেই রান্না ঘরের দিকে চোখ পরে গতির, দেখে কালকের সেই মেয়েটা । ও নাম জানে না, সবে তো কাল এসেছে আজ আবার রান্না ঘরে কি করছে।

"আপনি কি করছেন"? এবার জিজ্ঞেস ই করে ফেলে।

শিউলি এবার ফিরে তাকায় "টিফিন তৈরি করছি আপনার"

গতি এবার একটু রেগেই বললো "ওটা মা করে, মা কোথায়?"

শিউলি মুচকি হেসে বলে "বাবা এখনও মাকে চোখে হারান দেখছি, কাকিমা মন্দিরে পুজো দিতে গেছেন, তাই আমি করছি"

গতির মায়ের উপর খুব অভিমান হলো। আমাকে একবার জানাতে পারলো না, মন্দির যাবে, আর একটা যাকে তাকে আমার টিফিন তৈরি করতে বললো।মুখে কিছু না বলে অফিসের জন্য রেডি হয়ে বেরিয়ে গেলো। শিউলি টিফিন রেডি করে ঘরে রেখে দিলেও নিল না।

রাতে অফিস থেকে ফিরেই মাকে ঘরে ডাকলো গতি কারণ বাইরের ঘরে শিউলি বসে টিভি দেখছিল। মা ব্যস্ত হয়ে ঘরে যেতেই ,......" তুমি যদি কোথাও যাও তো, এবার থেকে আমার রান্না করতে কাউকে বলে যাবে না, ঠিক আছে?"

মা বুঝলো গতির মাথা গরম। শুধু আচ্ছা বলে চুপ করে যেতেই আবার গতি বলে ওঠে " ওই মেয়েটা কতদিন থাকবে এখানে, তুমি কিছু জানো?"

শিউলি দরজার কাছে দাঁড়িয়ে এতক্ষণ সব শুনছিল। আর উত্তর না দিয়ে পারলো না

"আমার একটা নাম আছে, আপনি হয়তো জানেন না, আমার নাম শিউলি। আর কাকিমা বললে আমি আজই চলে যাবো, সেটা নিয়ে আপনার কোনো টেনশন করতে হবে না"

গতি যেন একটু অপ্রতুস্ত বোধ করলো। আর কোনো কথা না, বলে ঘরে চলে গেল।

পরে গতি ভাবলো আজ ওর এভাবে বলা ঠিক হয়নি। কুমুদ তো ওর মত নিয়ে তবেই ওকে এনেছিল। কিন্তু আজকের ঘটনার পর ও কি আর থাকতে রাজি হবে। এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পরলো। ভোরে ঘুম ভাঙলো শিউলির ডাকে

"শুনছেন, এত জোরে অ্যালাম দিয়েছেন কেনো, বন্ধ করুন, পাড়ার সবাইকে জাগানোর দায়িত্ব নিয়েছেন নাকি? এত জোরে বাজছে যে ঘুম ভেঙে গেলো আমার কি হলো শুনছেন"

গতির মেজাজ এবার চড়তে আরম্ভ করলো, "আপনি কি ধরনের মহিলা, কারো ঘরে ঢুকতে গেলে পারমিশন নিয়ে ঢুকতে হয়, এটাও জানা নেই। আর আমার ঘরে অ্যালার্ম জোরে ই বাজবে, তাতে আপনার ঘুম না হয়, সেটা আপনার ব্যাপার।"

গতির চিৎকারে মা উঠে পড়েছে।

"কি হলো, ?

মায়ের প্রশ্নে গতির রাগ আরো বেড়ে যায়

"মা, আমি কাল থেকে বাড়িতে থাকবনা,

এ আমার সহ্য র বাইরে চলে যাচ্ছে"।

মা আর কিছু বলে না। জানে ছেলে রেগে গিয়ে অনেক কিছু বলে। শিউলি কিন্তু নির্বিকার। ঘরে গিয়ে আবার শুয়ে পড়ল

রোজই কিছু না কিছু ঘটে। মা এসে সামলায়।

সেদিন অফিস থেকে ফিরতে গতির বেশ রাত হয়ে যায়। মা খুব চিন্তা করবে তাই ফোন করে, ফোনটা ধরে শিউলি। ব্যাস আর কথা না বলে ফোনটা কেটে দেয়। এরপর দু মিনিট পর পর ফোন আসতে থাকে বাড়ি থেকে। গতি বোঝে এটা শিউলির কাজ। ফোনটা সুইচ অফ করে দেয়। প্রায় রাত এগারোটা হলো বাড়ি ফিরতে গতির। মায়ের সাথে শিউলিও বাইরের দরজায় দাড়িয়ে ছিলো। গতিকে দেখেই বলে উঠলো "ফোন টা ধরতে কি কষ্ট হয়? কাকিমা কত চিন্তা করেন আপনি জানেন?"

গতি মাকে ডেকে ঘরে চলে যায়। মা যেতেই বলে "মা, আমার ফোন তুমি ধরবে, আর কারো সাথে আমি কথা বলতে চাই না"

শিউলি হাজির " আমারও দরকার না থাকলে কারো সাথে কথা বলার কোনো ইচ্ছা নেই, " এবার মা র দিকে ফিরে বলে "দেখলে তো কাকিমা, তুমি ফোন টা ধরতে বললে আর বকুনি টা আমি খেলাম"

মা মুচকি হেসে শিউলি কে ইশারা করে চুপ করতে। গতি এতদিন শিউলিকে ভালো করে দেখে নি। ফর্সা মুখে গাল যেনো রাগে বেশ লাল দেখাচ্ছে। বড় বড় চোখ দুটো আরো বড় করে বলে উঠলো

"কাকিমা তুমি কিছুতেই ছেলের দোষ দেখবে না, ঠিক আছে বাবা, সব দোষ আমারই"।

গতি ভাবে এইরকম ঝগড়ুটে মেয়েটা যার ঘরে যাবে, তার অবস্থা খারাপ। কুসুমের সাথে চার বছরের সম্পর্কে ওর মনোমালিন্য হয়েছে , কিন্তু পরক্ষণেই আবার ঠিক ও হয়ে গেছে। আসলে কুসুম ওর থেকে ছোটো হলেও অনেক ম্যাচিওর ছিল।

সেদিন অফিস যাওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে শিউলির ফোন। ধরবে না ভেবেও কি মনে হল, ফোনটা রিসিভ করলো গতি,

হ্যালো, আপনি তাড়াতাড়ি বাড়ি আসুন, কাকিমা বাথরুমে পরে গেছে, পায়ে খুব ব্যথা হচ্ছে"

গতি শুধু যাচ্ছি বলে ফোন রেখে দেয়। বাড়ি এসে দ্যাখে যা ভেবেছিল তাই, পা টা ভেঙেছে।

এখন মা আর চলা ফেরা করতে পারবে না, গতি সারাদিনের কাজের লোক রাখার কথা ভাবলো। পরদিন কুমুদ আর সুধীন এলো, গতি কুমূদকে কাজের লোকের কথা বলতেই, শিউলি মাঝখান থেকে বলে ওঠে, "না না কাজের লোক কাকীমাকে ঠিকমতো দেখতে পারবে না, আর ঘরের লোক থাকতে বাইরের লোক কেনো দেখবে"

গতি কূমুদের দিকে চায়, যেনো বলতে চায় "ঘরের লোকটা কে, ও তো বাইরের কেউ একজন"

কিন্তু ভাষায় ব্যক্ত করে না। কুমুদ সমাধান করে দেয়। "ঠিক আছে শিউলি ওর কম্পিউটার ক্লাসে যেদিন যাবে, সেদিন আমি থাকবো কাকিমার কাছে, ও ফিরলে চলে যাবো, এত ছ মাসের ব্যাপার, তুই এত টেনশন করিস না"

এখন গতির চা, টিফিন সব শিউলি ই করে। অফিস যাওয়ার সময় নিজেই ব্যাগে ভরে নেয় গতি। কুমুদ সপ্তাহে দুদিন আসে, সুধীন ও সময় পেলে মাকে দেখে যায়।

আজ সকাল থেকেই গতির মন খুব খারাপ।কুসুমের জন্মদিনে কত প্ল্যান করতো, কুসুমের ফটোতে মালা দিতে গিয়ে চোখ দুটো জলে ভোরে গেলো। এক দৃষ্টিতে কুসুমের ফটো র দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে নিজে নিজেই বলে উঠলো

"আর তোমাকে ছাড়া থাকতে পারছি না কুসুম, আমাকে তোমার কাছে নিয়ে নাও"

একটা শব্দ পেতে পিছনে ঘুরে দেখে শিউলি, হতে চায়ের কাপ।

"সত্যি খুব ভালোবাসতেন আপনি, "

এখন কোনো কথা গতির ভালো লাগছে না, বুক ভেঙে যাচ্ছে কুসুমকে হারানোর বেদনায় কিন্তু শিউলি থাকে না "আপনি তো ওনার স্মৃতি নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিতে পারবেন, কিন্তু কাকিমা কি করবে, ভেবেছেন কখনো?"

গতি তেমনই চুপ থাকলো। আসলে কান্নায় ওর গলা ধরে আসছিল বার বার।

শিউলির অনেক কথার ই গতি উত্তর দেয় না এখন কিন্তু আগের দিনের ওই একটা কথা ওর মনটা খুব তোলপাড় করছে কিছু দিন ধরে। তবে কি সত্যিই ও স্বার্থপর । মা কি নিয়ে থাকবে একবারও ভাবছে না। কুসুমের স্মৃতি টা একান্ত ওর , মা তাকে নিঃসন্দেহে ভালোবাসত, কিন্তু মায়ের জীবন ট ওই কুসুমের ফটো দেখে কেটে যাবে না। এটা ও একবারের জন্য ও ভাবে নি কেনো।

সেদিন অফিস থেকে ফিরে দেখে সুধীন এসেছে, মাকে দেখতে। মা কে শিউলি যেভাবে সেবা করছে, আর খুব বেশিদিন লাগবে না সেরে উঠতে, এটাও কুমুদ জানিয়ে দেয় গতিকে। গতি ও সেটা জানে কিন্তু মুখে বলে না।

গতি লক্ষ্য করেছে শিউলি যতই মুখরা হোক ওর মনটা কিন্তু অত শক্ত নয়। মাঝে মাঝে ও উঁকি দিয়ে দেখে মায়ের মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে ও ঘুমের গান গাইছে, ঠিক যেমন মা বাচ্চাকে ঘুম পাড়ায় তেমন। গতির এখন এসব দেখতে ভালো লাগে। মা কে ভালোবাসে ব্যাস তার সাত খুন মাফ, এইরকম কিছুটা।

মা আস্তে আস্তে হাঁটা চলা শুরু করলেন, তবে খুব অল্প। শিউলির কি আনন্দ সেদিন। কূমুদকে ফোন করে এমন ভাবে বলছে যেনো কোনো ওর বাচ্ছা প্রথম হাঁটতে শুরু করলো। গতির খুব ভালো লাগলো।

এখন যেনো শিউলি বাড়িতে না থাকলে কেমন খালি খালি লাগে বাড়িটা। মা তো শিউলি চলে যাবে ভেবেই মন খারাপ করে ফেলে। গতি কত বোঝায়

"মা, শিউলি র তো কেরিয়ার আছে, ওর ও তো বিয়ে থা হবে না কি?"

মা এর চোখ ছল ছল করে ওঠে সেটা নজর এডায় না গতির। কিন্তু কি আর করবে ও, শিউলিকে তো সারাজীবন ওর মায়ের কাছে থাকার জন্য বলতে পারবে না, আর বললেই কি ও থাকবে, ওর ও তো নিজের জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

এর দিন সাতেকের মধ্যেই কুমুদ ফোন করে জানায় শিউলির বাবা খুব অসুস্থ, এখনই হসপিটালে অ্যাডমিট করতে হবে, ফোনে ওকে পাচ্ছে না, তাই যেনো জানিয়ে দেয়। এই প্রথম গতি জানলো শিউলির মা খুব ছোটবেলায় মারা গেছেন। বাবার কাছেই মানুষ। ঘরে একাই থাকতো, তাই হয়তঃ ওর ব্যবহারে রুড় ভাবটা একটু বেশি। কিন্তু মনটা একেবারে শিশুর মতো। যা মনে আসে টা চিন্তা ভাবনা না করেই বলে ফেলে।

শিউলি কে নিয়ে সেদিন গতি ওর বাড়িতে যায়। বাবার অবস্থা সত্যি খুবই খারাপ। সুধীন কে বলে হসপিটালে অ্যাডমিট করে।

ফেরার সময় গতি ওকে জানতে চায়

"তুমি কি আমার সাথে যাবে, না এখানেই থাকবে"?

"কি বলছেন, আমি না গেলে কাকীমাকে কে দেখবে?"

গতি আর কিছু বলে না। ওরা বাড়িতে ফেরে।

রাতে সুধীন র ফোন, শিউলির বাবা আর নেই। শিউলি কে খবরটা জানাতে গিয়ে দেখে সারাদিনের ক্লান্তিতে ও ঘুমিয়ে পড়েছে। কিন্তু এই খবরটা ট ওকে দিতেই হবে।

"শিউলি, একবার আমার ঘরে এসো তো, শিউলি,,,,,,,,"

ঘুম থেকে চমকে উঠে পড়ে শিউলি। গতি নিজের ঘরে গিয়ে শিউলির অপেক্ষা করে। শিউলি এসেই জানতে চায়

"বাবার কোনো খবর পেলেন?"

গতি মাথা নিচু করে,

"বাবা আর নেই শিউলি"

শিউলির হাত্টা নিজের হাতে নিয়ে ওকে স্বান্তনা দেয় গতি। শিউলির চোখের জল ওর চোখেও জল এনে দেয়। এটাই কি ভালোবাসা? কিন্তু গতি ট কুসুম ছাড়া কোনোদিন কাউকে ভালোবাসতে পারবেনা ভেবেছিল। তবে কি ভালোবাসা দরজা নক করে ঢোকে না শিউলির মতো।

শিউলির আর বাড়ি যাওয়া হলো না। বাড়ির বউ হয়ে কাকীমাকে মা করে নিল শিউলি। গতির জীবন আবার ফিরে পেলো গতি।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance