উড়চিঠি
উড়চিঠি
— রাতুল কালকে ফ্লাইট। কত বছর পর তোকে দেখবো! আমি ইন্ডিয়া যাচ্ছি, সন্ধ্যায় দেখা হবে...
— ওঠ আগে গাড়িতে! তুই কত ভালো দেখতে হয়েছিস রায়া বিয়ের পর?
— হাহা!!! তোর বউ কেমন আছে?
— এমন তো কথা ছিলো না... আমি অন্য কাওকে বিয়ে করবো? বিকেলে চায়ের দোকানে আসিস কথা হবে।
...
— কাকা দুটো চা দেবে! পুরোনো দিনের গন্ধ টা যেন থাকে, দুজন কে কত চা দিয়েছ বলতো, আজ টাকা টা রায়া নয় আমি দেবো।
— তুই হঠাৎ?
— ...
— বাবা মা মারা যাওয়ার পর এখানে আর কেও থাকেনা তাই বিক্রি করে চলে যাব...
— আমাদের দেখা হবার আর কোনো কারন থাকবেনা রায়া।
— বিয়ে কেন করিস নি?
— তোর বাবা মা জানতে পেরে আমাদের বাড়িতে গিয়ে খারাপ খারাপ কথা বলে এসছিলো, তার কিছু দিন পর শুনি তোর বিয়ে ঠিক হয়েছে, ছেলে বাইরে থাকে।
— আরে বাবা সে যাইহোক নিজের খেয়াল রাখিস। চুল দাড়ি কাটবি পাগলের মতো থাকবিনা।
— কিন্তু তোর এই অবস্থা, তুই একা? তোর বর কে নিয়ে কেন এলি না?
— রাতুল উঠি! এই খাম টা তোর জন্যে, চিঠিটা আমি চলে গেলে পড়বি.... কাল চলে যাচ্ছি ইন্ডিয়া ছেড়ে...
কথক - রাতুল রায়া কে ছেড়ে আসার পর গাড়িতে বসে চিঠি টা খুললো, তাতে লেখা...
- আমার বিয়ের চার মাস পর আমার হাজব্যান্ড এক্সিডেন্টে মারা যায়, তার কিছু দিন পরে বাবা, আমি পুরো একা। কোন মুখ নিয়ে তোকে কিছু বলবো বল? ভেবেছি তুই বিয়ে করেছিস, যখন বললি আজ ও আমার অপেক্ষায় আছিস, তখন আমার পুরোনো ৬টা বছরের স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে উঠলো। ছোটন দার চায়ের দোকানে টাকা দিয়ে এসছি, আর তোর দেওয়া পায়ের তোড়া টা এখন যখন একটা পায় নেই আর রেখে কি করবো? তোর বউকে দিস, বিয়েটা করার অনুরোধ রইলো। যা টাকা দিয়ে এসেছি তাতে তোর সব অসুবিধা দূর হয়ে যাবে।
কথক - রাতুল চিঠি টা ফেলে দেখলো সাড়ে ছটায় ফ্লাইট, হাতে ৫০ মিনিট সময়, সে তড়িঘড়ি ড্রাভার কে গাড়ি ঘুরিয়ে এয়ারপোর্টের দিকে নিয়ে যেতে বললো...
সমাপ্ত

