সুস্থ:-
সুস্থ:-
সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠেই তড়িঘড়ি মোবাইলটা অন্ করলো অনীক। আজ উঠতে উঠতে একটু দেরি হয়ে গেল। মোবাইলটা নিয়েই সঙ্গে সঙ্গে ফোন,
- হ্যাঁ মা, ঠিক আছো তো? ফিরবে কখন? সাবধানে থেকো।
গুটি-কয়েক কথা বলার পর ফোন রেখে দেয় অনীক। অনীকের মা সুমনা দেবী একজন নার্স। কোভিড ওয়ার্ডেই কাজ করতে হয় ওনাকে। কাল রাতে নাইট ডিউটি ছিলো ওনার। বাড়ি ফেরার সময় হয়ে এসেছে তাই অনীক ফোন করলো যে কখন ফিরবেন সুমনা দেবী ডিউটি সেরে।
মায়ের সঙ্গে কথা বলা হয়ে গেলে অনীক মোবাইল ঘাটায় ব্যস্ত। শুধু করোনা নিয়ে পোষ্ট সোস্যাল মিডিয়া জুড়ে, করোনার খবর কেবল। মোবাইল ঘাটতে ঘাটতে তার চোখ আটকে গেলো একটা ছবি দেখে। ছবিতে দেখাচ্ছে আমার সুজলা সুফলা নীলাভ পৃথিবীর বুকে মাস্ক লাগানো। মনটা ভারী হয়ে যায় অনীকের। এই তো কিছুদিন আগেও স্কুল থেকে ফেরার পথে ধুলো কাদা মেখে, বনে বাঁদাড়ে ঘুরে বেড়িয়ে তবে বাড়ি আসতো অনীক। কিন্তু এখন সেটা সম্ভব হচ্ছে কই? পৃথিবী তো অসুস্থ। দমবন্ধ হয়ে পৃথিবীরই না ক্ষতি হয়ে যায়। অনীকের মাথায় কতকিছু ঘুরতে তখন। ছবিটা বড্ডো ভাবিয়ে তুলেছে তাকে। মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে অনীক যা কিছুই হয়ে যাক সে বাড়িতে থাকবে, করোনা কে উপেক্ষা করে অসচেতন থাকবে না। সে সচেতন থাকলে পৃথিবীর মঙ্গল কার্যে একটু তো যোগদান দিতে পারবে। সে স্বাস্থ্য সম্মত উপায় অবলম্বন করে চলবে। সে করোনা থেকে বাঁচার জন্য সকল রকম প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে। অনীকের মনে দৃঢ় আশ্বাস একদিন পৃথিবীর বুক থেকে দীনতা দূর হবে, দূর হবে মারণ অসুখ। অনিকের মনে দৃঢ় বিশ্বাস একদিন সকালে উঠে দেখবে আমাদের সুনীল পৃথিবী তার সবুজঘন রূপের ছটা ছড়িয়ে দিচ্ছে। বিদায় নিয়েছে রোগ, শোক, জরা। পৃথিবীর বুকে আর পৃথিবীতে বসবাসকারি সকল মানুষজনের মুখে আর মাস্ক নেই, পরিবেশ হবে তখন নির্মল, নির্মল বাতাস ভরে নেবো আমরা শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে। মনে মনে কামনা করে অনীক সুস্থ হয়ে উঠুক এই পৃথিবী, রোগমুক্ত হয়ে উঠুক এই ধরা।