সময় প্রবাহমান 🧭 পর্ব ৪
সময় প্রবাহমান 🧭 পর্ব ৪
জানিস গিনি তুই যখন আমার সামনে সাগ্নিকের কথা বলতি তখন খুব কষ্ট হোতো কিন্তু তা সত্ত্বেও আমি তোকে নানাভাবে সাহায্য করছিলাম । এমনকি তোকে যখন সাগ্নিক ফিরিয়ে দিলো আর তুই পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিলি তখন একদিন সাগ্নিককে সন্ধ্যাবেলায় দেখা করতে ডেকে খুব মেরেছিলাম । তখনই সাগ্নিক আমাকে বলেছিল , " আমি পর্ণাকে ভীষণ ভালোবাসি রাজ । গিনি আমার কাছে বন্ধুর থেকেও বেশি কিন্তু আমার ভালোবাসা কখনোই নয় । আমি শুধু এটা ভেবেই অবাক হয়ে যাচ্ছি তুই গিনিকে পাগলের মতো ভালোবাসিস, তারপরেও গিনিকে আমি refuse করেছি বলে আমাকে মারলি ! বোকামি করিস না রাজ , পারলে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব নিজের মনের কথা গিনিকে বল । " এই বলে সাগ্নিক আমার হাত ধরে টেনে জড়িয়ে ধরে পিঠ চাপড়ে দিয়েই চলে যায় । আমি তোকে ভালোবাসতাম সেটা সবাই জানতো কিন্তু তুই অনেক দেরী করে আমার কাছে এলি ।But I am very very happy today, ultimately you are only mine . " তারপর গিনির দুই গাল ধরে মাথাটা তুলে চোখের জল মুছিয়ে দেয় , আলতো করে নিজের ঠোঁট দুটি নামিয়ে গিনির ঠোঁট দুটির উপর । মূহুর্তের মধ্যে আট বছর ধরে পিপাসিত দুটো হৃদয় ছাপিয়ে উঠলো ভালোবাসার খরস্রোতে ।
দীর্ঘ আট বছর পর দুজনের মেলবন্ধন দেখার লোভ সামলাতে না পেরে শাঁওলি আর প্রিয়ম হঠাৎ করে -
" প্রেমের জোয়ারে ভাসাবে দোঁহারে-- বাঁধন খুলে দাও, দাও দাও দাও।
ভুলিব ভাবনা, পিছনে চাব না,-- পাল তুলে দাও, দাও দাও দাও॥
প্রবল পবনে তরঙ্গ তুলিল, হৃদয় দুলিল, দুলিল দুলিল--
পাগল হে নাবিক, ভুলাও দিগ্বিদিক,-- পাল তুলে দাও, দাও দাও দাও॥ "
এই গানটি গাইতে গাইতে দরজা ঠেলে গিনির ঘরে ঢুকে আসে । প্রিয়ম মজা করে বলে ওঠে, " আহা! আহা! চোখদুটো জুড়িয়ে গেল তোদের দেখে, কিন্তু সব আদর কি আজকেই সেরে ফেলবি ভাই ? কিছুটা বাঁচিয়ে রাখ ফুলসজ্জার রাতের জন্য । " এই কথা শুনে গিনি লজ্জায় রাজের কাছ থেকে সরে যেতে চাইলে রাজ আরো জোরে গিনিকে জড়িয়ে ধরে । তখন শাঁওলি আর প্রিয়ম দুজনেই ছুটে গিয়ে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে থাকা রাজ ও গিনিকে জড়িয়ে ধরে । শাঁওলি বলে , " আজকে আমার যে কি আনন্দ হচ্ছে তোদের ভাষায় বোঝাতে পারবো না । আট বছর ধরে আমি তোদের দুজনকে দুজনের জন্য ছটফট করতে দেখেছি । এখন পুরো একমাস বাকী তোদের বিয়ের তাই এখন থেকে চুটিয়ে প্রেম কর । " রাজদীপ বলে , " শাঁওলি ডার্লিং ভুলে যাবেন না আমি একজন ডাক্তার তাই চুটিয়ে প্রেম করার কোনো উপায় নেই , তবে হ্যাঁ যতোটা সময় দেওয়া সম্ভব ততোটা সময় শুধু গিনিকে নিশ্চয়ই দেবো । " এই বলে রাজদীপ গিনির মুখের দিকে তাকাতেই গিনি লজ্জায় মাথা নীচু করে নেয় তখন প্রিয়ম মজা করে বলে , " এই যে গিনি ম্যাডাম আর লজ্জা পেয়ে লাভ নেই । আচ্ছা আমাদের বিয়ের পর আমরা চারজন মিলে কোথাও ঘুরতে গেলে কেমন হয় ? " শাঁওলি বলে, " প্রিয়ম একটা কাজ করলেই তো হয় , জানুয়ারীতে গিনি - রাজের বিয়ের পর ওরা তো হানিমুনে যাবে । তাহলে তখন আমরা দুজন ওদের সাথে চলে যাবো । ভয় নেই ওদের হানিমুনে কোনো সমস্যা হবে না । কিরে গিনি কি বলিস ? " গিনি আর কি বলবে কিন্তু রাজদীপ বলে," কেনো ডার্লিং, আমাদের হানিমুনে কাবাব মে
হাড্ডি হওয়ার কি দরকার ? তার চেয়ে বরং একটা কাজ করি , এখন তো আমার আর গিনির বিয়ে ঠিক হয়েই গেছে তাই গিনির বাবা - মায়ের অনুমতি নিয়ে তোদের হানিমুনে চল আমরা চারজন একসাথে আনন্দ করি । কিরে কি বলিস শাঁওলি ? " ব্যাস, শাঁওলি একেবারে চুপ আর প্রিয়ম সজোরে হেসে উঠে বলে, " কি হোলো শাঁওলি ? আমাদের রাজকে বোকা বানানোর চেষ্টা করে লাভ নেই । রাজ রাগ করিস না ভাই, আমরা কেউ কারো হানিমুনে কাবাব মে হাড্ডি হবো না । রাজ আর গিনি হানিমুন থেকে ফিরে আসলে কিছুদিন পর বরং আমরা চারজন কাছাকাছি কোথাও ঘুরতে যাবো । " এই কথা শুনে চারজনেই একসাথে সজোরে হেসে উঠলো । ওদিকে গিনির মা শাঁওলিকে ডেকে বললো , " শাঁওলি একবার এদিকে আয় তো । "

