শণাক্তকরণ
শণাক্তকরণ


অবিনাশ ঝুলবারান্দায় এসে দাঁড়ালেন। বউ গত হয়েছেন বেশ কয়েক বছর। দুই ছেলেমেয়েই হস্টেলে থাকে। অফিসে বসে মাঝেমাঝেই ইন্টারনেটে নীল ছবি দেখেন। কোন সহকর্মী যেন সে কথা তুলে দিয়েছেন বড়সাহেবের কানে। বড় সাহেব তক্কে তক্কে ছিলেন। উনি বুঝতে পারেননি। গত কাল একেবারে হাতেনাতে ধরা পড়ে গেছেন। ছিঃ ছিঃ ছিঃ...
সেই থেকে মনটা একদম ভাল নেই। আজ অফিস পর্যন্ত যেতে পারেননি। ঝুলবারান্দায় দাঁড়ালে মনটা ফুরফুরে হয়ে যায়। সামনেই এই হাউসিং কমপ্লেক্সের প্রশস্ত লন। সারি সারি কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া। বাচ্চাদের জন্য দোলনা, ঢেকি, স্লিপ। বিকেল হলে বাচ
্চাদের মেলা বসে যায়। বাচ্চাগুলো কী মিষ্টি, কী সুন্দর। একদম ডলপুতুলের মতো। অবিনাশের মাঝে মধ্যেই ইচ্ছে হয়, বাচ্চাগুলোর গাল টিপে একটু আদর করে আসবেন।
দোতলার এই ঝুলবারান্দা থেকেও উনি ঠিক চিনতে পারেন, কোন বাচ্চাটা জুঁইয়ের, কোনটা বৃষ্টির, কোনটা মেঘলার। বাচ্চাগুলোর মায়েদের উনি আরও ভাল করে চেনেন। বউ মারা যেতেই উনি ভেঙে পড়েছিলেন। কিন্তু ক'দিন পরেই বুঝেছিলেন, যার বউ আছে, তার একটাই। কিন্তু যার বউ নেই, তার হাজারটা।
ওই বাচ্চাগুলোর বাবারা কি কিচ্ছু টের পায় না! ওই যে ওটা, ওটাও তো আমার, তাই না! শম্পা তো আমাকে সে রকমই বলেছিল!