শিশু
শিশু
পেশায় আমি একজন শিক্ষিকা, রোজ সকালে ট্রেন ধরে স্কুল যাই, আবার রোজ সেভাবেই ফিরি . নিত্যযাত্রী বলতে যা বোঝায় , সেটাই আমি . রোজ স্টেশন এ ওভার ব্রিজ এ ওঠার সময় একটি শিশু কে দেখি. ভিক্ষা করছে, গায়ে নোংরা জামা, চুল এলো মেলো , পায়ে চটি নেই, একদিন কাছে ডাকলাম , কি রে? তোর নাম কি? খানিক হেসে বললো পিলাকি ..পিলাকি সেটা আবার কি নাম রে? আমার কথা শুনে সে হেসেই খুন, কোথায় থাকিস? বললো ব্রিজ এর নিচের সাইকেল দোকানের পাশে. কে কে আছে তোর ঘরে? মা আর বোন. বাবা? আবার ও সে হেসে খুন ! কি রে হাসছিস যে, হাসির কথা নাকি?
উত্তর দিলো- জানি না. সেই আলাপ, তারপরথেকে রোজ ট্রেন ধরার আগে ও কে পাঁচ টাকা করে দি , গত ৮ মাস ধরে দিয়ে আসছি .
আজ আমার জন্মদিন, সেভাবে এখন পালন করা হয় না, তবে আজ ভাবলাম পিলাকি কে ৫ নয়, ১০০ টাকা দেব, বলবো চাল কিনতে ঘরের জন্য. দিলাম ও , ট্রেন ধরার আগে , নিয়ে ও হাসলো , বললো বড়ো
নোট? আমি ও কে বললাম এটা দিয়ে চাল কিনিস, মাথা নেড়ে চলে গেল.
পরের দিন আবারো দেখা, রোজকার মতো সামনে আসে দাঁড়ালো, জিজ্ঞাসা করলাম কি রে কাল চাল কিনলি? বললো না,ওতো অনেক টাকা, শুধু চাল কিনলে চলে? ৪০টাকার চাল, ২০ টাকার মুড়ি, ২০ টাকার বাতাসা কিনেছি গো, আর বাকি টাকাটা শিমুই পাগলী কে দিয়েছি, ভ্রু কুঁচকে বললাম সেটা কে? ওই যে গো ওদিকে ব্রিজের ওপরে বসে থাকে না রোজ, দেখোনি ? সাদা চুল , ও কে বাকি টাকার মুড়ি কিনে দিয়েছি, জ্বরের জন্য দুই দিন বেরোয় ই নি তো !
ট্রেন এসে গেল,পিলাকিকে রোজ কার টাকা তা দিয়ে দিলাম, ট্রেন এ উঠে একটু সময় লাগলো ধাতস্ত হতে, তারপর ভাবলাম সত্যি ওরা শিশু! ুুু