Sharmistha Mukherjee

Drama Tragedy Action

3  

Sharmistha Mukherjee

Drama Tragedy Action

রাত জাগা পাখি 🦋 অন্তিম পর্ব

রাত জাগা পাখি 🦋 অন্তিম পর্ব

3 mins
376



ঘুমের ওষুধের পাতা হাতে পেয়ে পাখি একটু তীর্যক হাসি দিয়ে ভাবলো " অনেক হয়েছে শারীরিক বৃত্তি, আর না । এবার সবার শাস্তির পালা । সবাইকে মেরে নিজেকেও শেষ করে দেবো । রজতকেও আমাকে ঠকানোর শাস্তি পেতে হবে । "  

পরদিন সকালে রজতকে বললো " আজকে একটু মাংস এনে দেবে ? সবাই মিলে আজ খুব আনন্দ করবো । "এই শুনে রজত মাংস আনতে বেরিয়ে গেলে পাখি সব ঘুমের ওষুধগুলো গুঁড়ো করে মদের দুটো বোতলে মিশিয়ে রাখলো । খুব আনন্দ হচ্ছিল

 পাখির । হঠাৎ করে পাখির মাথায় চিন্তার উদ্রেক হোলো , " একজন একজন করে এই ঘুমের ওষুধ মেশানো মদ খাওয়াতে গেলেতো ধরা পড়ে যাবো । তাহলে কি করা যায় ? সবাইকে একসাথে এই মদ খাওয়াতে হবে । " অনেক ভেবে একটা বুদ্ধি বের করলো পাখি । ইতিমধ্যে রজত মাংস নিয়ে বাড়িতে ফিরলে পাখি বললো , " শোনো রজত আমরা আজকে সবাই মিলে আগে খাওয়া- দাওয়া করবো । আজকে আমিও একটু মদ খাবো । তাহলে পরে এক এক করে সবাইকে সুখ দিতে আর কোনো অসুবিধা হবে না । " পাখির কথা শুনে রজত বললো, " আরে বাঃ ! এইতো একদম পুরো পাক্কা লাইনের মাগীদের মতো কথা । এইভাবে চলতে পারলে দেখবি শালী আমাদের টাকার বন্যা হয়ে যাবে । তুই শুধু  আনন্দ দিবি আর টাকা কামাবি । " পাখি বললো, " ঠিক বলেছো, এই কাজ যখন করতেই হবে তখন ভালো করে করতে ক্ষতি কি ? " এই বলে পাখি মাংস রান্না করতে গেলো । 


সন্ধ্যাবেলা বিয়ের বেনারসি পরে, মাথায় ফুলের মালা দিয়ে ভালো করে সেজেগুজে তৈরী হয়ে নিল পাখি । মদের বোতল , গ্লাস, মাংস সব গুছিয়ে রাখলো । আজকে খুব খুব খুশি সে । এতোদিনের প্রতিনিয়ত এই ঘৃণ্য শারীরিক নির্যাতনের হাত থেকে মুক্তি পেতে চলেছে সে । 

রাত আটটা নাগাদ সবাই এসে হাজির । পাপাই , রাজেশ, মিন্টু, সন্তু ও রজত সবাই মিলে মদ- মাংসের আসর বসালো । পাখি একে একে সবার গ্লাসে মদ ঢেলে দিতে লাগলো আর নানা রকম ছলাকলা করতে লাগলো ওদের সাথে । মাঝে মাঝে নিজেও সবার গ্লাস থেকে চুমুক দেওয়ার ভান করলো যাতে কারো সন্দেহ না হয় । রাজেশ বললো, " কি পাখিরানী, আজকে কি শুধু খাওয়া-দাওয়াই হবে ? নাকি একটু সুখ ও দেবে । " পাখি হেসে বললো, " হবে হবে, সব হবে, আগে আমার একটু নেশা লাগতে দাও দেখি । তারপর তোমাদের শরীরের সব জ্বালা মিটিয়ে দেবো । এখন তো আগে মদ - মাংস ভালো করে খাও । " পাপাই বলে উঠলো " মাংসটা যা বানিয়েছো , আঃ মনটা ভরে গেল । এবার তোমাকে পেলে একেবারে দাওয়াত জমে যাবে । " সব শুনে পাখি হেসে বললো, " হ্যাঁ হ্যাঁ, আমিতো আছি তোমাদের জন্য । চিন্তা কি ? " পাখিও ওদের সাথে একটু নেশা হওয়ার ভান করতে

 থাকে । ঘন্টা খানেক পর একে একে সবাই ঢলে পড়লো ঘুমের কোলে । পাখি উঠে দাঁড়ালো । হাসতে হাসতে বললো, " না আর কোনোদিন তোমরা ঘুম থেকে উঠবে না " এই বলে সব্জি কাটার বটি দিয়ে সবাইকে প্রাণপনে কোপ মারতে শুরু করে । রক্তাক্ত রজত, রাজেশ, পাপাই, মিন্টু ও সন্তুর দেহ লুটিয়ে পড়ে থাকে ঘরের মেঝেতে । পাখি উদ্ধশ্বাসে বাড়ি থেকে ছুটে বেড়িয়ে সোজা স্থানীয় পুলিশ স্টেশনে গিয়ে হাজির হয় । পাখির সারা শরীরে তখন রক্ত মাখা । পুলিশের কাছে গিয়ে সব ঘটনা খুলে জানায় পাখি । 

আদালতের রায়ে পাখির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় । কিন্তু পাখি খুব শান্তি পায় ঐ সব নরপিশাদের নিজের হাতে শাস্তি দিতে পেরে । পাখি জীবন থেকে মুক্তি না পেলেও প্রত্যহ নরক যন্ত্রণার হাত থেকে চির মুক্তি পায় । অবসান ঘটে নরক যন্ত্রণা ভরা রাতগুলোর । 



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Drama