STORYMIRROR

Horror

4.5  

Horror

রাত ১২টার সময়

রাত ১২টার সময়

2 mins
9


অধ্যায় ১: ডাকঘর থেকে শুরু


সাতপুর গ্রামের প্রাচীন ডাকঘরটা ১৯৮৩ সাল থেকে বন্ধ। কিন্তু গ্রামের সবাই জানে—রাত ১২টা বাজলেই সেই বন্ধ ডাকঘরে একটা চিঠি এসে পড়ে। কেউ কখনো সেটা দেখেনি, কেউ ছুঁয়েও দেখেনি। শুধু একটা গল্প চলে আসছে — “যে কেউ সেই চিঠি খুলে পড়ে, সে আর সকালে ঘুম থেকে উঠে না…”


মৌরি, ঢাকার এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী, গবেষণার কাজে সাতপুর গ্রামে আসে। সে ভূতের কাহিনী বিশ্বাস করে না। পুরনো ইতিহাস, কুসংস্কার, আর মানুষের ভয় নিয়ে গবেষণা করে। শুনে গ্রামের বৃদ্ধ মনোহারী দা বলেন,

"তুই যদি সত্যিই সাহসী হোস, তাহলে ডাকঘরে গিয়ে রাত ১২টার চিঠিটা খুলে পড়।"


মৌরি হেসে বলে, “চিঠি আবার রাত ১২টায় আসে নাকি!”



---


অধ্যায় ২: অন্ধকারে কাগজের গন্ধ


রাত ১১:৫৫। মৌরি একা গিয়ে দাঁড়ায় সেই পরিত্যক্ত ডাকঘরের সামনে। দরজাটা নিজে থেকেই একটু ফাঁক হয়ে থাকে, যেন অপেক্ষা করছে।


ঠিক ১২টা।

একটা ঠাণ্ডা হাওয়া বইতে থাকে। হঠাৎ একটা পুরনো খাম স্লিপের নিচ থেকে বেরিয়ে পড়ে —

“চিঠি এসেছে…”


চিঠির ওপর লেখা –

"তুমি কি দেখবে অতীতকে? তবে এই চিঠি ছিঁড়ো না।"


মৌরি ধীরে ধীরে খাম খুলে পড়ে।



---


অধ্যায় ৩: সেই দিনের অন্ধকার


চিঠিতে লেখা:

"আমি সঞ্জয়। ১৯৮৩ সালের সেই ডাকপিয়ন, যে ভুল করে একটা চিঠি সময়মতো পৌঁছাতে পারেনি। সেই চিঠি ছিল একজন মায়ের শেষ বার্তা তার মৃত ছেলেকে। পরদিন মায়ের লাশ ঝুলে ছিল গাছে। আমি ক্ষমা চাইতে চাই। যদি কেউ আমার হয়ে সেই চিঠিটা পৌঁছে দেয়, তাহলে আমি মুক্ত হবো..."


মৌরি ভয় পায়। কিন্তু চিঠির নিচে আরও লেখা –

"যদি তুই চিঠিটা নিয়ে বের হোস, তবে মনে রাখিস, সেই মায়ের আত্মা তোকে অনুসরণ করবে। চিঠিটা শেষ না পৌঁছানো পর্যন্ত... তুমি একা নও।"



---


অধ্যায় ৪: মৃত্যুর আগে বার্তা


মৌরি ঠিক করে চিঠিটা পৌঁছে দেবে। কিন্তু গ্রামের কেউ “অপূর্ব সাহার” নাম শুনেছে বলে মনে পড়ে না।

এক বৃদ্ধা বলে,

“এই নামটা যাকে খুঁজছো, সে তো মরে গেছে অনেক আগেই। আর তার মা? ও তো এখনো রাত ১২টায় মাঠে হাঁটে… সাদা শাড়িতে, লাল চোখে।”


মৌরি বুঝে যায় – তাকে সেই আত্মার সামনে যেতে হবে, চিঠিটা পৌঁছে দিতে হবে।


রাতের আঁধারে মৌরি মাঠের এক কোণে এক সাদা শাড়ি পরা নারীকে দেখে। সেই নারী ধীরে ধীরে বলে,

“চিঠি এনেছো?”


মৌরি কাঁপা হাতে চিঠি বাড়িয়ে দেয়।



---


অধ্যায় ৫: ঘড়ির কাঁটা থেমে গেলো


মৌরি চেতনা হারায়।


পরদিন সকালে, ডাকঘরের সামনে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া যায়। কিন্তু আশ্চর্য, তার হাতে কোনো চিঠি নেই।


মৌরি চোখ খোলার পর শুধু একটা কথা বলে —

“সঞ্জয় মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু মা... এখনও খুঁজছে তার ছেলেকে।”



---


শেষ লাইন:


রাত ১২টা বাজে… ডাকঘরের ফাঁকা ডেস্কে আবার একটা খাম পড়ে… চিঠির গায়ে লেখা — "এইবার তোর পালা..."


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Horror