STORYMIRROR

Romance

4  

Romance

তোমার অপেক্ষায় পুরো স্টেশন

তোমার অপেক্ষায় পুরো স্টেশন

2 mins
2


অধ্যায় ১: দেখা সেই ট্রেন স্টেশনে


রোদেলা একটা দুপুর। বর্ষাকালের ঠিক আগ মুহূর্ত।


নতুন শহরে চাকরি নিয়ে এসেছে আরিব — একটু গম্ভীর, একটু নীরব, নিজের মতো থাকা ছেলেটা।


একদিন ট্রেন স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে একটা মেয়ের দিকে চোখ পড়ে —

সে ভিজে যাচ্ছে বৃষ্টিতে, ছাতা নেই, তবু ফোনে গান শুনছে — মুখে হালকা হাসি।


আরিবের ভেতরটা কেঁপে ওঠে।


হঠাৎ মেয়েটি তাকিয়ে বলে,

"তুমি দাঁড়িয়ে আছো, অথচ আমার ছাতা হয়নি?"


ছেলেটা তাড়াহুড়ো করে নিজের ছাতা বাড়িয়ে দেয়।


মেয়েটির নাম নৈবা। অদ্ভুত নাম, অদ্ভুত চোখ।



---


অধ্যায় ২: চিঠির মতো প্রেম


আরিব আর নৈবা বন্ধুত্ব শুরু করে।

কিন্তু ওদের প্রেমটা অন্যরকম —

নৈবা বলে,

“আমি মেসেজে কথা বলি না, ফোনেও না। আমি কেবল চিঠি লিখি।”


আরিব চমকে যায়। এই যুগে কেউ চিঠি লেখে?


নৈবা প্রতি সপ্তাহে চিঠি পাঠায়।

আরিব উত্তর দেয় হাতে লেখা খামে।


চিঠিগুলোতে থাকে না কোনো সরাসরি প্রেমের কথা —

শুধু গল্প, কবিতা, আর ভেতরে লুকানো অনুভব।


একদিন চিঠির শেষে নৈবা লিখে—

"তুমি যদি একদিন চুপ করে চলে যাও, আমিও চলে যাবো। কে আগে যায়, দেখা যাক?"



---


অধ্যায় ৩: হঠাৎ থেমে যাওয়া ট্রেন


নৈবা হঠাৎ আর চিঠি লেখে না।

ফোন তো নেই-ই।


আরিব চিন্তায় পড়ে যায়।

একদিন স্টেশনে গিয়ে দেখে, সেই ছায়া নেই।


কেউ বলে,

“নৈবা তো চলে গেছে। এখন শিলিগুড়িতে থাকে, বিয়ে হয়ে গেছে নাকি।”


আরিব স্তব্ধ।


একদিন একটা শেষ চিঠি পায় —

"তোমাকে ভালোবেসেছিলাম। কিন্তু তুমি কখনো বলোনি ভালোবাসো। আমি ক্লান্ত। বিদায় চিঠি।"


আরিব এবার সত্যিই চুপ করে চলে যায় — শহর বদলে ফেলে।



---


অধ্যায় ৪: পুরনো ট্রেন, নতুন চিঠি


চার বছর পর।


স্টেশনের এক কোণায় বসে একটা মেয়ে কাঁদছে।

আরিব আবার সেখানে — বদলে যাওয়া ছেলেটা।

এখন সে চুপচাপ নয়, বরং নিজের ভেতরের কথা বলতে শেখা মানুষ।


সে মেয়েটিকে দেখে কিছুক্ষণ।

মেয়েটি তাকিয়ে বলে—

"তুমি আরিব?"


সে নৈবা।


নৈবার চোখে জল, হাতে একটা পুরনো চিঠি।

“আমি আজও সেই চিঠিগুলো রেখে দিয়েছি। এখন বুঝি, ভালোবাসা মুখে বলার অপেক্ষায় না, বুঝিয়ে দেওয়ার সাহসে লুকিয়ে থাকে।”



---


অধ্যায় ৫: শেষ ট্রেন, প্রথম শুরু


নৈবা এবার আর চিঠি লেখে না।

সে সরাসরি বলে,

“তোমাকে ভালোবাসি। যদি চাও, নতুন একটা গল্প শুরু হোক। একসাথে, হাত ধরাধরি করে।”


আরিব হাত বাড়িয়ে দেয়।

পেছনে ট্রেন চলে যায়।

সময়ের মতো — কিন্তু এবার ওরা কেউ ফিরে যাচ্ছে না।

শেষ লাইন:


“ভালোবাসা কখনো ফুরায় না। ওটা শুধু চিঠির মতো — হারিয়ে গেলেও, কেউ না কেউ খুঁজে পায় আবার।”


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance