পথভোলা
পথভোলা


ঘটনাটা বয়েজ হোস্টেলের বারান্দা থেকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিল শোভন। সামনের শিমুল গাছটার নিচে ফার্স্ট ইয়ারের কয়েকটি মেয়ে গোল হয়ে দাঁড়িয়ে গল্প করছিল। একটি ছেলে সাইকেল করে পাশ দিয়ে যাবার সময় মেয়েগুলোকে দেখে একটা শিস দিল। আর ওমনি ওই দলের থেকে একটা মেয়ে তীর বেগে ছুটে গিয়ে সাইকেলের কেরিয়ারটাকে ধরে দিল এক রাম ঝাঁকুনি , আর ব্যাস সেই রোমিও পপাত ধরণীতলে। আর যায় কোথায় ওই দলের সমস্ত মেয়েরা, ছেলেটিকে ঘিরে ধরে, যার হাতে যা ছিল, মানে ছাতা , জুতো, ব্যাগ ইত্যাদি দিয়ে তার ধোলাই শুরু করে দিল। ঝামেলা দেখে সামনের কলেজ গেট থেকে দারোয়ান ছুটে এসে ছেলেটিকে উদ্ধার করে। নাহলে যে কি হত কে জানে?
আর এই ঘটনাটি দেখে শোভন একেবারে ‘বোল্ড আউট’। সর্ষের তেল মাখা হাতটা বুকে বোলাতে বোলাতে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দীপাঞ্জনকে জিজ্ঞাসা করলো, “ এই মেয়েটা ক-কে রে?”
দীপাঞ্জন একবার শোভনকে ওপর থেকে নীচ অবধি দেখল। মাথার চুলে চপচপে করে নারকোল তেল মেখে এখন শোভন সারা গায়ে সর্ষের তেল মাখছে। ওদের গ্রামে নাকি স্নান করতে যাবার আগে এই ভাবে তেল মাখাই নিয়ম। পরনে একটা লাল গামছা।
“ তুই জেনে কি করবি? বেশী ছোঁকছোঁক করলে না, ও যা মেয়ে, তোর ওই গামছাটাও খুলে নিয়ে চলে যাবে।“
“ ন-না আমি ওভাবে বলিনি। তুই আগে কোনও মেয়েকে এভাবে ... মানে।“
“ বুঝেছি! ওভাবেই শুরু হয়। ও মুম্বাই থেকে এসেছে। বিরাট বড়লোকের মেয়ে। ফার্স্ট ইয়ার। সারাজীবন কনভেন্টে পড়াশোনা করেছে। যা ইংরিজি বলে না...। “
“ ও... তাই ভাবি।“ শোভন আর কথা না বাড়িয়ে বালতি মগ নিয়ে স্নান করতে চলে গেল।
শোভন আর দীপাঞ্জন হোস্টেলে রুমমেট। শোভন এসেছে বাঁকুড়ার এক প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে। আর দীপাঞ্জন মেদিনীপুরের ছেলে। দুজনে হরিহর আত্মা বন্ধু। দুজনেই ফাইন আর্ট নিয়ে পড়ছে, থার্ড ইয়ারে।
এই ঘটনা সারা কলেজে রাষ্ট্র হয়ে গেল। তারপর থেকে ছেলেরা ফার্স্ট ইয়ারের ইরাকে, একটু সমঝে চলে।
সেবার দোল উৎসবে ছেলেরা আর মেয়েরা একটা নৃত্য নাট্য করবে। নাচের দলের একটি ছেলে কল্লোল মাঠে ফুটবল খেলতে গিয়ে পা মচকে ফেলল। আর দুদিন বাদে অনুষ্ঠান। সঙ্গীত ভবনের হলেতে রিহার্সাল চলছে। কলা ভবন থেকে ছেলেরা সবাই মিলে রিহার্সাল দেখতে গেছে। সেই দলের মধ্যে শোভনও আছে। কল্লোল পায়ে ব্যান্ডেজ বেঁধে বসে আছে।
নাচের মহড়া কিছুতেই জমছে না। হঠাৎ স্টেজ থেকে নিচে লাফিয়ে পড়লো ইরা। তারপর সোজা চলে গেল ছেলেদের জটলার মধ্যে। ওকে আসতে দেখে ছেলেরা সবাই চুপ করে গেল। ইরা সোজা এসে দাঁড়ালো শোভনের সামনে,” এইযে তোমার নাম শোভন না? ফাইন আর্টস থার্ড ইয়ার। তুমি তো খুব ভালো নাচ। আমি শুনেছি। তুমি কল্লোলের যায়গায় নাচবে?”
“ আ-আমি ম-মানে...।“
“ চলে এসো। খুবই সহজ স্টেপ। তুমি অনায়াসেই তুলে নেবে। “ কথা শেষ করে ওর উত্তরের অপেক্ষা না করে ওর হাত ধরে হিড়হিড় করে টেনে ওকে নিয়ে তুলল স্টেজের ওপরে।
ঘটনাটা এতই আকস্মিক ভাবে ঘটলো যে কেউ কিছু বোঝার বা বলার আগেই শোভন স্টেজের ওপর পৌঁছে গেল।
“ পুলক তুই একটু স্টেপ গুলো শোভনকে দেখিয়ে দে।“ নির্বিকার ভাবে বলল ইরা।
নৃত্যনাট্য খুব ভালো ভাবেই হয়ে গেল। আর সেই সুত্রেই থার্ড ইয়ারের ছেলেরা দেখল যে ইরা মেয়েটাকে ওরা যতটা ভয়ঙ্কর ভেবেছিল আসলে ও ততটা ভয়ঙ্কর নয়। তবে সারা জীবন কো-এডুকেশন স্কুলে পড়া আর হোস্টেলে থাকার জন্য ওর মধ্যে ইনহিবিশনটা কম। যাকে আমরা সাদা বাংলায় বলি একটু ছেলে-ছেলে।
এরপর থেকে প্রায়ই ওকে দেখা যেত একটা ময়লা টিশার্ট আর জিনস পরে শোভনদের দলের সঙ্গে বসে সিগারেট খাচ্ছে। মেয়েদের গ্রুপে বড় একটা ওকে দেখা যেত না।
একদিন ইরাকে একা পেয়ে শোভন ধীরে ধীরে বলল ,” মেয়েদের বেশী সিগারেট খাওয়া ভালো না। পরে অসুবিধা...” ওকে কথাটা শেষ করতে দিল না ইরা।
“ এই তুই কে রে? আমার গার্জেন ? মেলা ফ্যাচ ফ্যাচ করবি না।“ বলে ওর মুখের ওপর সিগারেটের ধোঁয়াটা ছেড়ে দিল ইরা।
“তুই এরম ছন্নছাড়া হয়ে কেন থাকিস?”
“ ওসব গোছানো টোছানো ইস নট মাই কাপ অফ টি। মানে আমার দ্বারা হবে না। তোর যদি অত ইচ্ছা তুই নাহয় আমার সব জিনিষ গুছিয়ে দিস।“
“ আচ্ছা দেব।“
“ বললি কিন্তু...।“ বলে নিজের কাজে চলে গেল ইরা।
বলার সময় শোভন হয়তো ভাবেনি যে সত্যি সত্যি ইরা ওকে দিয়ে কাজ করাবে। কিন্তু এরপর থেকে প্রায়ই ইরা শোভনকে দিয়ে ওর নানা ছোটবড় কাজ করিয়ে নিত। শোভনও বিনা বাক্য ব্যায়ে ওর কাজগুলো করে দিত।
ধীরে ধীরে এমন দাঁড়ালো যে ইরা যেখানে শোভন সেখানে। সবাই কানাঘুষো করলেও কেউই সাহস করে ইরাকে কিছু জিজ্ঞাসা করতে পারেনা। আর শোভনকে জিজ্ঞাসা করলে ও একটা অদ্ভুত হাসি হেসে বলে, “ তোদের কি মনে হয়?”
সেবার বসন্ত উৎসবে শ্যামা নৃত্য নাট্য হল। ইরা শ্যামা সেজেছে। ওর নাচ দেখে সবাই মুগ্ধ। স্টেজে ওর নাচ দেখে কেউ বলবে না যে ওই কমনীয় নায়িকা অন্য সময় একেবারে টম বয়।
সেদিন নাচের শেষে গ্রিন রুমে ইরার সঙ্গে দেখা করতে এলো একটি ছেলে। তার একমাথা ঝাঁকড়া ঝাঁকড়া চুল, পরনে আধ ময়লা পাঞ্জাবি আর জিনস। পায়ে একটা স্নিকার যেটি একদিকে ক্ষয়ে গেছে। ওকে শোভন গ্রীন রুমের ভিতরে নিয়ে আসতেই ইরা হই হই করে উঠলো,” হা-ই! কখন আসলি?” তারপরই ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরল ছেলেটিকে। তারপর খানিকক্ষণ ওর সাথে গুজগুজ করে কথা বলে ওরা দুজন বেরিয়ে গেলো।
খবরটা জঙ্গলের আগুনের মত ছড়িয়ে পড়লো। সবার মধ্যে গুনগুন। কি ব্যাপার? কে ছেলেটি? পরের দিন সবার সব প্রশ্নের অবসান করে দিয়ে ইরা ছেলেটিকে ওদের সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিল।
“ মিট মাই ফিয়ান্সে রঙ্গনাথন। ওর সঙ্গে আমার আলাপ হয় তিন বছর আগে চেন্নাই ডান্স ফেস্টিভালে গিয়ে। “
সবাই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে শোভনের দিকে তাকাল। আশ্চর্য ব্যাপার ওর মধ্যে সেরম কোনও হেলদোল দেখা গেল না।
পরের দিন সবাইকে অবাক করে দিয়ে ওরা তিনজন একসাথে বেড়াতে বেরিয়ে গেল।
দীপাঞ্জনের হল ঝামেলা। সারা কলেজ ইরা আর শোভনকে কিছু জিজ্ঞাসা না করতে পেরে ওকে ধরল। কি ব্যাপার? ওরা কোথায় গেল? শোভন ওদের সাথে কেন? ইত্যাদি ইত্যাদি। বেচারা দীপাঞ্জন এর একটা প্রশ্নেরও ঠিকঠাক জবাব দিতে পারে না। তারফলে যখনই ও দেখে একদল স্টুডেন্ট ওর দিক আসছে ও গা ঢাকা দেয়।
দিন তিনেক পরে রঙ্গনাথন চলে গেলো। ইরা আবার ছেলেদের দলের সঙ্গে ঘুরতে লাগলো। ওর মুখে কেউ রঙ্গনাথনের নামটাও আর শুনতে পেলো না। শোভন আবার ইরার ফাই ফরমায়েশ খাটতে লাগলো। অবস্থা আবার আগের মত।
কিন্তু এর মধ্যে ইরা আর শোভন কলেজের স্টুডেন্টদের দেওয়া কয়েকটা বিশেষণে ভূষিত হল। যেমন ইরা পেল নাচানে, খেলোয়াড় ইত্যাদি। আর শোভন পেলো ল্যাবা, মেনিমুখো ইত্যাদি। কিন্তু তাতে ওদের খুব একটা তফাৎ হল বলে তো মনে হল না।
এরপর রঙ্গনাথন আরও বার দুয়েক এসেছিল।
ইতিমধ্যে শোভনের ফাইনাল পরীক্ষা হয়ে গেছে। ক্যাম্পাস ইন্টারভিউতে ও একটা দারুণ চাকরি পেয়ে চলে গেল আমেদাবাদ।
ইরার একটা নতুন গ্রুপ জুটে গেল। যাদের সঙ্গে ও হই হই করতো আড্ডা মারত সিগারেট খেত। এখন ইরার এই ব্যবহারটাই সকলের কাছে স্বাভাবিক মনে হয়। ওকে নিয়ে লোকে সমালোচনা করাও ছেড়ে দিল।
সেবার দোল উৎসবের পর ইরা হঠাৎ বাড়ী চলে গেল। ফিরল প্রায় দুমাস পর। ওর বাবা নিজে এসে পৌঁছে দিয়ে গেলেন। এর আগে কখনও ইরার বাবা বা মাকে কেউ দেখেনি কলেজে। কিন্তু ইরাকে দেখে সবাই চমকে গেল। একি চেহারা হয়েছে ওর! চোখের কোল বসে গেছে। কণ্ঠার হাড় বেরিয়ে এসেছে। ইরা মাথা নিচু করে মাটির দিকে তাকিয়ে হাঁটছে। ওর হাত ধরে ওর বাবা ওকে ওর হোস্টেল রুমে পৌঁছে দিলেন। তারপর ওর বাবা ওদের কলেজের প্রিন্সিপালের সাথে দেখা করে চলে গেলেন।
ইরার এই পরিবর্তনে আবার কলেজে গুঞ্জন। এতদিন যারা ইরার মুখরতায় সমালোচনা করতো তারাই ওর নিরবতায়ও সমালোচনা করতে শুরু করলো। কিন্তু ইরা যেন পাথর।
সবার কৌতূহল যখন আকাশ ছোঁয়া তখন একদিন প্রিন্সিপাল ইরার রুমমেটকে ডেকে সব কথা বলে সকলের কৌতূহল নিরসন করলেন।
রঙ্গনাথন আর ইরা একসাথে একটা নাচের স্কলারশিপ পেয়েছিল সাউথ ক্যারোলিনা গুরুকুলে। ওদের ইচ্ছা ছিল ওরা বিয়ে করে একসাথে চলে যাবে। সেই জন্য রঙ্গনাথন ওর পরিবারকে নিয়ে এসেছিল মুম্বাই, ইরাদের বাড়ীতে। দু পক্ষেরই বিয়েতে কোনও আপত্তি ছিল না। ওরা ঠিক করেছিল বিয়েতে খুব একটা ধুমধাম করবে না। একটা ছোট অনুষ্ঠান করে দুই পরিবারের কাছের লোকেরা মিলে বিয়েটা দেবে। যেদিন ওদের বিয়ের রেজিস্ট্রেশন, ওরা সবাই বেরিয়েছে। ইরা আর রঙ্গনাথন হাত ধরাধরি করে রাস্তা পার হচ্ছিল, এমন সময় একটা গাড়ী ব্রেকফেল করে সোজা এসে ধাক্কা দেয় রঙ্গনাথনকে। তারপর সব শেষ। ইরা একটুর জন্য বেঁচে যায়। এই দৃশ্য দেখার পর ইরার নার্ভাস ব্রেক ডাউন হয়। ওকে কোনোভাবেই কাঁদানো যায়না। একবার আত্মহত্যাও করতে যায় ও। ওকে মনোবিশেষজ্ঞ বলেছেন যে ও ব্যস্ত থাকলে ভালো থাকবে। তাই ওর বাবা ওকে কলেজে ফেরত নিয়ে এসেছেন।
ইরা আজকাল নিজের ঘর থেকে বাইরে বেরোয় না খুব একটা। কারুর সাথে কথা বলেনা। আগে যেমন যে কোনও কলেজের অনুষ্ঠান ওকে ছাড়া হত না। এখন ও কোনো অনুষ্ঠানেই আর উৎসাহ দেখায় না।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবাই ইরাকে ওইভাবে দেখতেই যেন অভ্যস্ত হয়ে গেল। ও হাসে না, দরকার ছাড়া কথা বলে না। নিয়মিত কলেজ যায় আর ফিরে নিজের ঘরে চলে আসে।
সময় নিজের গতিতে চলতে থাকে। ইরার এটাই কলেজে শেষ বছর। কলেজে রি-ইউনিয়ন হবে। সবাই তার রিহার্সালে ব্যস্ত। সমস্ত পুরনো স্টুডেন্টদের চিঠি পাঠানো হয়েছে।
রি-ইউনিয়নের দিন সারা কলেজে সাজোসাজো রব। পুরনো স্টুডেন্টদের হলে নিয়ে গিয়ে বসানো হল। শোভন আর ওদের ব্যাচের প্রায় সব ছেলেমেয়েই এসেছে। অনুষ্ঠান শুরু হল। রবীন্দ্রনাথের নৃত্যনাট্য শ্যামা। এবার শ্যামা সেজেছে কমলিকা বলে একটি মেয়ে। ভালই নাচছে। কিন্তু ইরার মত না। হঠাৎ পুরাতনীদের মধ্যে একজন বলে উঠলো ,” ইস এরা ইরাকে কেন নিল না!”
সঙ্গে সঙ্গে একজন ভলান্টিয়ারকে ডাকা হল,” অ্যাই ইরা কোথায় রে?”
“ ইরাদি ? নিজের রুমেই আছে নিশ্চয়ই , ও তো নিজের ঘর থেকে বেরোয় না ...। আসলে তোমরা তো জানো না ওর বয়ফ্রেন্ড মারা যাবার ...।“
শোভন সবটা শোনার জন্য আর অপেক্ষা না করে হল থেকে বেরিয়ে সোজা রওনা দিল মেয়েদের হোস্টেলের দিকে।
হোস্টেলের দারোয়ান শোভনকে চিনতো, তাই ভিতরে যেতে খুব একটা অসুবিধা হল না। সারা হোস্টেল নিস্তব্ধ।
ঘর অন্ধকার করে শুয়ে ছিল ইরা। শোভন দরজা ঠেলে ঘরে ঢুকে আলোটা জ্বেলে দিল। একটা বিরক্তিসূচক শব্দ করে ইরা উঠে বসতেই শোভনকে দেখতে পেল। অবাক হয়ে চেয়ে রইল ও।
“ তুই এখানে একা বসে আছিস যে?”
“ এমনি।“
“ তুই এবার অনুষ্ঠান করছিস না কেন?”
ইরা চুপ।
“ কি রে কথা বলছিস না যে? তুই কি মনে করেছিস বল তো?” শোভনের গলায় রাগ স্পষ্ট।
“তুই কিছু জানিস না...... তুই... ” এই প্রথম অঝোরে কেঁদে ফেলল ইরা।
“ আমি সব জানি......... আমি সব জানি...।“ বলতে বলতে ওর পাশে বসে ওর মাথায় হাত বোলাতে লাগলো শোভন। অনেকক্ষণ কেঁদে শান্ত হল ইরা। আসতে করে ওর কাঁধে মাথাটা রেখে বলল, “ জানিস অনেকবার ভেবেছিলাম তোকে খবর দেবো। কিন্তু ... আজকাল মাথাটা কাজ করে না...। আমার আর গুছিয়ে কিছু করা হল না রে...।“
“ তোর সবকিছু গুছিয়ে রাখার ভার তো আমি সেই কবেই নিয়ে নিয়েছি। তাইনা?” শোভনের স্বর গাঢ় শোনায় ।
“ তুই...।“ শোভনের দিকে অশ্রুভেজা চোখে তাকিয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল ইরা। কিন্তু শোভন ওকে কথা শেষ করতে দিল না।
“ ব্যাস চুপ, একদম চুপ। এবার ওঠ আমার সঙ্গে তুই হলে অনুষ্ঠান দেখতে যাবি।“
“ না... প্লিস আর একটু আমরা একা থাকি?” শোভনকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল ইরা।
“ পরীক্ষার পর আমি তোর বাড়ীতে কথা বলি? নাকি তুইই...।”
“ না তুই বল।“ লাজুক স্বরে বলল ইরা।