প্রেমের আতঙ্কে -----
প্রেমের আতঙ্কে -----
গল্পের শিরোনাম :-"প্রেমের আতঙ্কে"
গল্প কার :-ডা: সত্যবত মজুমদার
তারিখ :-০৩/০১/২০২৩
------------------------------প্রেমের আতঙ্কে
ডা: সত্যব্রত মজুমদার
তারিখ :-০৩/০১/২০২৩
------------------
শেষ- মেশ প্রেমের আতঙ্কে সরকারি চাকুরে হারাধন ওরফে হারুর জীবনটা অসহ্যকর হতে থাকলো।
একদা সরকারি চাকুরে পিতা " স্বর্গত: অবিনশ্বর দোলুই" এর মৃত্যু ঘটে অবসরের দুই বছর আগে,ফলে পাঁচ ছেলেমেয়ের সংসারেই হারু প্রথম সন্তান হওয়াতে মাধ্যমিক পাশেই চাকরির সৌভাগ্য হয়েছিল, অল্প বয়সেই।
শান্ত, বিনয়ী, সরল আবেগপ্রবণ হারুর কাঁধে দায়িত্ব পড়ল অসুস্থ মা, অবিবাহিত তিন বোন, আর হাবাগোবা ভাইকে দেখার। আর পিতার অবর্তমানে হারু একমাত্র সরকারি রোজগেরে সুচারুরূপে দায় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজের বয়সের দিকে আর খেয়াল রাখতে পারেনি, বোনেদের বিবাহ, পরবর্তীতে মার এবং অসুস্থ ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে গেছে।
সংসারের ঝড়ঝাপটার দাপটে মধুমেহ রোগে আক্রান্ত হারু ভাবতে থাকে তাঁর কি হবে শেষ জীবনে, অর্থের অভাব নেই, কিন্তু জীবনসঙ্গিনী খুঁজে নেওয়ার সাহস খুঁজে পায়না, বোনেরা সব নিজেদের সংসার জীবনে ব্যস্ত, সাথে নিত্য রোগ যন্ত্রণা, ------- এরই মাঝে হারু মধ্যবয়সী এক বিধবা নারীর প্রেমের সংস্পর্শে আসে, অফিসের এক বন্ধুর মারফত অফিসেই আলাপ পরিচয় লীলার সাথে, পঞ্চাশের কাছে বয়সী বেশ চৌখস নারী, রহস্যময়ী, হারুকে প্রেমের জোয়ারে
হাবুডুবু খাওয়াতে থাকে, বেশি বয়সের প্রেমে, হারুর মনেও বেশ উত্তেজনা, অফিসে ছুটির পর রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া, হাসি ঠাট্টা, উপভোগ্য মনে হয় হারুর কাছে, এই খেলা কিছুদিন চলার পরেই লক্ষ করে প্রেমিকা লীলার নজর মোটা মানিব্যাগের দিকে, উন্মাদনার জোয়ারে বেশ ভালো পরিমাণে পয়সা ব্যয় হতে থাকে লীলার মনের চাহিদা মেটানোর জন্য।
হারাধনের অফিসের এক সহযোগী কর্মী বন্ধু, হারাধনের বিপদটা বুঝতে পারছিলেন, লীলা সম্বন্ধে গোপনে খোঁজখবর করে জানতে পারলেন, এই মহিলা খুবই ধুরন্ধর এবং চতুর, তার আগের পক্ষের বড় বড় ছেলে মেয়ে আছে, একদিন অফিসের ফাঁকে হারুকে একান্তে ডেকে বললেন," কিছু মনে করোনা, তোমার মতো পরিস্থিতিতে অনেকেরই এইরকম হয়, তুমি লীলা থেকে দূরে সরে যাও, যত তাড়াতাড়ি পারো, না হলে এই প্রেমের খেলায় সর্বস্বান্ত হবে, হারু এই কথা শুনে বললে, আমিও কিন্তু আন্দাজ করেছিলাম, সত্যি তাই হল, তুমি কাউকে কিছু বলো না, সমাজে লজ্জার ব্যাপার, তুমি আমাকে বাঁচাতে সাহায্য করো।
এরপরই হারু সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করতে লাগলো, প্রাণপণে, লীলা ব্যাপারটা বুঝতে পেরে উন্মত্ত হয়ে উঠলো, শেষমেষ আতঙ্কে হারু অসুস্থ হয়ে পড়েছিল, ভীষণভাবে, অফিসের সহকর্মীদের সাহায্যে এই লীলার প্রেমের আতঙ্ক থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য চাকরির শেষ জীবনে শহর থেকে মফস্বলে স্থান পরিবর্তন করে কোনোক্রমে সরকারি চাকরি বাঁচাতে হয়েছিল, লোভী নারীর প্রেমের বন্ধন থেকে বাঁচতে।
