SATYABRATA MAJUMDAR

Romance Tragedy

3  

SATYABRATA MAJUMDAR

Romance Tragedy

অতৃপ্ত আত্মার ডাকে—----------

অতৃপ্ত আত্মার ডাকে—----------

4 mins
131



হ্যালো, রথীন বাবু, হঠাৎ,

হঠাৎ নয়, পল্লবী, আজকে তো ফোন করতাম ই, প্রথম কথা হচ্ছে, রথীন বাবু আজ থেকে নয় আজ, শুধু রথীন,

ও আচ্ছা,আচ্ছা,( হাসতে,হাসতে), এইবার বুঝেছি, না, আসলে কি জানেন তো, হালিশহর স্টেশনে প্রথম পরিচয়, তদুপরি,আপনি নিশ্ঢয় ই আমার প্রেমিক জয়ের বাল্যকালের বন্ধু,কত আবেগ, সেই খানেই দাঁড়িয়ে তো অন্যরকম সন্মানের জায়গায় আপনি রয়েছেন —--- 


ঠিক, ঠিক, পল্লবী,  তুমি তো এখন ডিউটিতে রয়েছো, কথা বললে অসুবিধা হবে না তো? 

এখন দুপুর দুটো বাজে,হাত ধুয়ে একটু বিশ্রাম নিচ্ছিলাম, আধা ঘন্টা বিরতি আছে, কথা বলতে পারেন রথীন বাবু।

বাবু নয় শুধু রথীন,----------------

একটু সময় লাগবে মানানসই হতে,( মুচকি হেসে)।


হা,ও,  হা, নিশ্চয়ই পল্লবী দেবী, সময় অবশ্যই দিলাম।

কিন্তু আবার দেবী কেন? সেটার ও শেষ সময় হয়েছে, পল্লবী, এবার কিছু স্মৃতি কথা বলি,তার আগে পরশু দিন, আগামী রোববার, মনে আছে তো? 

নিশ্চয়ই, রথীন বাবু, একটু পরেই জয়ের সাথে কথা হবে।

খুশি হলাম, এবার বলি পল্লবী, আমি জীবনে, বিভিন্ন কর্মে, ভবঘুরে জীবনে, বিয়োগান্তক বিবাহিত জীবন, চড়াই,উৎরাই পথে বহু নারীর সঙ্গ পেয়েছি, তাদের স্মৃতি কিছু মনে থেকে হারিয়ে গিয়েছে, হয়তো তাঁরা কেউ অসম্পূর্ণ ছিল, তথাপি, আবার কারো নীরব ভালোবাসার,স্নেহ,মায়া,মমতার,প্রেম, ভালো বাসার ছবি,কন্ঠধ্বনি, বাঁশির সুরের মতো ভেসে আসে, কিন্তু পল্লবী তোমার মধ্যে প্রথম দেখাই একটা সম্পূর্ণতা খুঁজে পাই, যা বর্তমানে আমার মনকে ভীষণ ভাবে তোলপাড় করছে, আর এই মুহূর্তে এই কথাগুলি বলে আমি একটু মনের দিকে যেন হালকা হলাম।


বাপরে বাপ, এতটা প্রশংসা তো এই মূহূর্তে আশা করিনি, যদিও আমার প্রেমিক আপনার বন্ধু জয়, ঠিক আছে, আমাকে এবার কাজে ভিড়তে হবে,ভালো থাকবেন,পরে আবার কথা হবে।

অবশ্যই, তোমার ভাবনাই আমাকে মশগুল করছে বর্তমানে, টা টা।


চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ বসে থাকলো, রথীন বাবু কি বললো! পলা, ঝিমুচ্ছো নাকি তিন তলায় এক নম্বর অপারেশন থিয়েটারের সামনে যাও, হ্যা,দিদি,এখন ই যাচ্ছি।


বিকেল পাঁচটার পরে প্রেমিক জয়ের কন্ঠস্বর মোবাইলে, হ্যালো, পল্লী,(কখনো,কখনো বাঁকে) সারাদিন আর কথা হয়নি, মিট করতে পারবে, দূরে দরকার নেই, "বেলঘরিয়া" স্টেশনে চলে আসো, আধা, একঘন্টার মধ্যে, আর তুমি সন্মতি দিলেই আমি এগোবো।

ঠিক আছে জয়, এই মুহুর্তে আমি তোমার কথা রাখছি, আমার ও তোমার সঙ্গ পেতে ইচ্ছে হচ্ছে,আর তার সাথে বিশেষ কথাও আছে,এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের পিছন দিকে থেকো।

ঠিক আছে পল্লবী—---


ঠিক সময় মতো নৈহাটি লোকালে বেলঘড়িয়া স্টেশনে ছয়টার মধ্যেই নেবে পড়লো, পল্লবী, শিয়ালদহ থেকে অফিস ফেরত যাত্রীদের প্রচন্ড ভিড়, নেবেই প্ল্যাটফর্মের পিছন দিকে হাঁটতে থাকলো, জয়কে দেখা যাচ্ছেনা, ফোন করবে? মনের তোলপাড় রথীন বাবুর প্রবেশে! না, না, এই মুহূর্তে এইকথা গুলো জয়কে বলা যাবেনা, তাতে সমস্যা বাড়তে পারে, ভুল বোঝাবুঝি, দরকার নেই, হ্যালো জয়, তুমি কোথায়, এইতো শেষ প্রান্তে আছি, এগিয়ে আসো,হাত দেখাচ্ছি, ওই তো জয়, ঘেমে, নেয়ে, হাসতে, হাসতে, আজ আগেই এসে পড়েছো, এই বেঞ্চে বসো, জয় পল্লবীর ডান হাতটা ধরে বসলো শরীর ঘেঁসে, আজকে তোমাকে দারুন লাগছে পল্লবী,নীল টাইট জিন্স,আর হলুদ স্লীভলেস গেঞ্জিতে, আকর্ষণ বাড়িয়ে দিচ্ছে, (মুচকি হেসে) বয়সটা সত্যিই আজকের দিনটায় ক্রমশ: হ্রাস পাচ্ছে, এই কথার সাথে সাথেই পল্লবী জয়ের গালে ছোট্টো চিমটি কাটলো, চলো আগে চা খেয়ে নিই, তৃপ্তি কেমন আছে? ভালো বলা যায়না,‌আছে একরকম- মনেতে বড়ো অশান্তি, মায়াও লাগে, দুটি নাবালক সন্তান রয়েছে, তৃপ্তিকে নিয়ে মনেতে কোনো তৃপ্তি নেই।


না, না, আমিতো আছি, দেহের, সৌন্দর্যের মনের মাধুরী নিয়ে, এটাও একটা ভাগ্য আমার,তোমার,আধা-কপাল, এই যে তুমি এখন আমার পাশে, স্ত্রী নও, কিন্তু বর্তমানে তাঁর থেকে ও সুখকর, তদুপরি তৃপ্তিকর।

এটাই যেন বজায় থাকে জয়, আগামীকাল, পরশু, তরশু, তারপর তো বললেনা, প্রিয়া সখি আমার, না কি জানো তো, আদপে কপাল দুইজনের ই মন্দ, তাই ছন্দের ভাষায় বেশি দূর এগোতে সাহস হয়না, ও,তাই জন্য তিন ধাপেই শেষ, আমার বান্ধবি সোনা।

ঠিক আছে, এখন মনা, মনে আছে তো, পরশুদিন রথীন বাবুর দিদির বাড়ি, অবশ্যই, তুমি সময় মতো রেডি হয়ে সকাল এগারোটার মধ্যে ব্যারাকপুর জংশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের কাউন্টারের সামনে অপেক্ষা করো, তুমি কি আনবে জয়, দিদির হাতে দেওয়ার জন্য, মিষ্টি আর ফল নেবো, তুমি? আমি বন্ধুর অসুস্থ দিদির জন্য তাঁতের শাড়ি নেবো।

খুব ভালো, তাহলে আগামী রোববার — মিলন হবে ছেলেবেলার বন্ধুর দিদির বাড়ি, আনন্দপুরী।





Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance