Maheshwar Maji

Drama

2  

Maheshwar Maji

Drama

নিধিরাম

নিধিরাম

7 mins
1.0K


মেয়েটা অসুস্থ।আজ তিন দিন হয়ে গেল। একই রকম জ্বর।

চৌরাস্তার পাশে কালিবাবুকে দেখান হয়েছিল।ছোট,ছোট গোটা কয়েক পুরিয়া দিয়ে ছিলেন।হোমিওপ্যাথিকে কাজ একটু ধীরে,ধীরে হয়।

যখন তিন দিনেও কোন উপকার পাওয়া গেল না। তখন বাধ্য হয়ে আজকে আবার গিয়েছিল।কালিবাবু চোখ,মুখ,নাড়ী আর জীভ দেখেই হাঁ করে বলে উঠলেন,তাড়াতাড়ির হাসপাতালে ভর্তি করে দাও।এ মেয়ের লিভারে রোগ ধরেছে।

এদিকে বাড়ির অবস্থা শোচনীয়। চাল,ডাল প্রায় শেষ।চিত্রা যাহোক করে বাবুদের বাড়ি থেকে চেয়ে,চিন্তে এনে সকলের মুখে দুটো দুবেলা জুটিয়ে দিচ্ছে।

আজকাল আবার তার ধান্দাতেও উপোশ পড়েছে।

পাবলিক সবাই সচেতন।মানিব্যাগ নিয়ে ঘোরাই ছেড়ে দিয়েছেন।সরকার ক্যাশলেশ ডিজিটাইলেশন করার পর থেকে অসুবিধাটা আরো বেশি করে দেখা দিচ্ছে।

কখনো,সখনো যদি বা হাতে লাগে।তাও আবার পঞ্চাশ,একশোর বেশি না। তারমধ্যে আবার কয়েকটা দশের কয়েন।দোকানদারও নিতে চান না।

তাদের দলে শিবু বলে ছেলেটা নতুন।বয়সটাও কম।কথায়,কথায় ইংরেজি ঝাড়তে জানে।হয়তো অল্প,স্বল্প পড়াশুনো করেছে।চেহারাটা তাল পাতার সেপাহি হলে কী হবে!ব্যাটা এই বয়সে বিদ্যেটা ভালই করায়ত্ব করেছে।

ও আবার তাদের মতো, পাবলিকের টাকা,পয়সার দিকে নজর দেয় না। ওর লক্ষ্য ফোনের দিকে।আজকাল প্রায় সবার কাছে স্কীন টাচ নামী,দামী কম্পানীর সব স্মার্টফোন।

একটা হাতাতে পারলেই হাজার কয়েক তো নিশ্চিত।প্রতিদিন একটা না একটা হাতাবেই।সেগুলো আবার এজেন্ট ধরে ঠিক বেচেও দেয়।সেইজন্য তার পোশাক,আশাকও ঝা চকচকে।মুখে সিগারেট।মাথার চুল,দাড়ি সব ডিজাইন করা।প্রতিদিন সিনেমা দেখে,নাইট ক্লাবে যায় ফূর্তি করতে।

সে নিজে কতবার ভেবেছে।শিবুর মত করবে।পারে না। এতদিন ধরে যেটা শিখে এসেছে।সেটাই ভাল।একবার চেষ্টা করেও দেখেছিল।পারেনি।সেবার ফোনটা নিয়ে কোনরকমে পকেটে ঢুকিয়েছে।আর ঠিক তখনি সেটা বাজতে শুরু করে।

প্রচলিত একটা হিন্দি গান।রফি নয়,কিশোর বা লতারও নয়।কী সব গানের ভাষা।এত দ্রুত তো পপকর্ণও ফোটে না।গায়ক যেন টয়লেট পাওয়ার তাগাদায় গানটা শেষ করতে চান!

সে যাইহোক।ফোনের রিংটোনটা আর শেষমেশ কিছুতেই থামাতে পারেনি।সারা স্কীনজুড়ে কোন সুইচ পর্যন্ত নেই।সে থামাবে কী করে?

এদিকে যার ফোন, তিনি তো পকেট হাতড়েই হট্টগোল জুড়ে দিয়েছেন।ফোন নেই পকেটে।ব্যাস...দে কেলানি..দে কেলানি।

সেবার তিন রাত হাজতবাসের পর ছাড়া পেয়েছিল।সেই তখনই থানার একজন হাবিলদার তাকে লুকিয়ে স্মার্টফোনের ফ্যাংশনগুলো অল্প মতো দেখিয়ে দিয়েছিলেন।তার এতদিনের পুরনো মাথায় ফোনের সেসব হিজিবিজি আজো ঠিকভাবে ঢোকেনি।তাই শিবুর মতো হওয়ার কোন ইচ্ছে তার আর নেই।

এখন সে বরং নতুন একটা আইডিয়া বের করেছে।বাস,ট্রেন ছেড়ে ফাঁকা ফ্ল্যাটবাড়ি অথবা বাংলোর খোঁজ করে।নানা অজুহাতে বাড়ির আশেপাশে ঘুরঘুর করে বেড়ায়।।সুযোগ পেলেই সুট করে ঢুকে পড়ে ভেতরে।বুড়ো,বুড়ি কেউ থাকলে মিথ্যে ভয় দেখিয়ে

আলমারির চাবি হাতিয়ে নগদ যা পেল, তাই নিয়ে ধা।

আগের কেসটা সোদপুরের দিকে একটা ফ্ল্যাটে ঘটেছিল।তা প্রায় একমাস হল।বিশেষ কিছু হাতে আসেনি।আলমারিও খালি পড়েছিল।মারোয়াড়ি ফ্যামিলির বাড়ি।খালি আলমারির ভেতরে রাধাকৃষ্ণের একটা পঞ্চধাতুর প্রতিমা রাখা ছিল।তার সামনে একটা একশো টাকার নোট।

তার বিবেকে বেঁধে ছিল।তাই মূর্তিটাকে প্রণাম করে প্রণামীটা তুলে জোড়হাত করে শুধু বলেছিল,ঠাকুর এটা তোমার কোন কাজে লাগবে না।তাই তুলে নিলাম।

একজন আশি বছরের বৃদ্ধ ছিলেন বাড়ির মধ্যে।তিনি হিন্দিতে বলে উঠেছিলেন,মেরে পাস কোই পৈসা নহী হ্যায়।ঘর কা হর সামান লড়কা ভেজতা হ্যায়।শালে মুঝে বোলতা হ্যায়,পৈসা কেয়া করোগে পাপা?.. চোর আকে লুট লেগা।অব ওসে কোন সমঝায়ে ?চোর কা ভী অপনি এক জিন্দেগী হ্যায়!এক কাম করো।আটা কা প্যাকেট ওঠা লো।তুম্হারে কাম আয়েগা।

এতদিন সে রাস্তার মাঝেয় এর,ওর পকেট ঝেড়ে এসেছে।তাই,জীবনে অভিজ্ঞতা বলতে পাবলিকের গালাগাল আর কেলানি ছাড়া কিছু অর্জন করেনি।আজ মাস কয়েকের বাড়ি চুরির অভিজ্ঞতাটা তার থেকে একদম আলাদা।

এদের কেউ,কেউ চোরকে যে করুণার চোখে দেখেন...সেদিনই প্রথম জেনেছিল সে।

সেবার বৃদ্ধের কথা শুনে সত্যি সত্যিই পাঁচ কেজির আটার ব্যাগটা কাঁধে তুলে বাড়ি ফিরেছিল।

চিত্রা অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করেছিল,আজকাল তাহলে গোডাউনে সিঁধ কাটতে শুরু করেছ নাকি?সেদিন দু কেজির সরষের তেলের আস্ত বোতল।আজ আবার এত দামী আটার প্যাকেট!

সে মুচকি হেসে উত্তর দিয়েছিল,ঘর মালিক নিজেই দিলেন।তাই নিয়ে এলাম।

চিত্রা ভাতের ফ্যান গালতে গিয়ে বলে উঠেছিল,আজকাল তাহলে লোকজন চোরকে দান করতে শিখে গেছেন নাকি?

----তা জানি না।তবে আমি মিথ্যে বলিনি।আগের বার তেলের বোতলটা আমিই আইডিয়া করে কিচেন থেকে উঠিয়ে নিয়ে এসেছিলাম।তবে আজকেরটা সত্যিকার দানে পেয়েছি।

বেলা বেড়ে এগারোটা হয়ে গেল। এখনো জুতের কিছু করতে পারল না। একটু বেশি দাউ মারার চক্করে শেষ পর্যন্ত কোলকাতার এই অভিজাত জায়গায় এসে পড়েছে।ভেবেছিল,কোন রকমে একবার ঢুকতে পারলে।কয়েক হাজার টাকা তো হাতে লাগবেই।

সেই মত শিবুর বাইকে বসে উল্টোডাঙার মোড়ে নেমে গেছিল।সেখান থেকে হেঁটে সল্টলেক।

হাতে একটা নারকেল কাঠির ঝাড়ু,খালি ফিনাইনের বোতল,একটা টয়লেট ব্রাশ আর মাঝারী মাপের একটা বালতি।এই নিয়ে সুসজ্জিত আবাসনগুলোর চারপাশে সে সকাল থেকে হাঁকিয়ে ফিরছে,...এ্যাই..সাফাইওয়ালা।বাথরুম,পায়খানা,নর্দমা পরিস্কার করি।

অনেক রকমভাবে বিভিন্ন সুরে কথাটা এক নাগাড়ে বলতে গিয়ে এতক্ষণে দমটাও বসে এসেছে।

সকালে নাদুর দোকানে এক ভাড় চা আর দুটো নেড়ো বিস্কুট খেয়ে মেয়েটাকে নিয়ে কালিবাবুর বাড়ি গেছিল।চেম্বার তখনও খোলেনি।গিয়েই জানতে পারল।মেয়েকে ভর্তি করতে হবে।

চিত্রা তো শোনা মাত্রই অজ্ঞান হওয়ার অবস্থা।কিছুতেই মানা শুনল না। একাই নিয়ে গেছে মেডিক্যালে ভর্তি করতে।

ঔষুধ,পত্র ছাড়া ঘরের জন্য রেশন,পানির ব্যবস্থা তো করতে হবে।

চিত্রাও হাসপাতালে মেয়েকে আগলে বসে রয়েছে।ও যদি কাজে বেরোত।যাহোক করে খাবারটা ঠিক জোগাড় করে নিয়ে আসত।এই অবস্থায়,তাকেই সেই দায়িত্বটা নিতে হয়েছে।সন্ধ্যে পর্যন্ত যেমন করেই হোক দুটো চাল,পয়সা নিয়ে বাড়ি ফিরতেই হবে।সাদা,কালো নোকিয়ার ফোনটা চিত্রা সাথেই রাখে।সেও হয়তো তার মুখ থেকে শুভ কিছু শোনার প্রতীক্ষায় আছে।একমাত্র মেয়েটাই চিত্রার সম্পূর্ণ জগত।এমনকি সেই জগতে তার নিজেরও কোন জায়গা নেই।

চিত্রা কী ভাবে, সে ঠিক জানে না।কিন্তু সে নিজে তো জানে।মেয়েটার জন্য তার হৃদয় কতখানি ব্যাকুল?

মা,মেয়ে যখন রাতের বেলায় একসাথে জড়াজড়ি করে ঘুমিয়ে পড়ে।তখন সে নিঃশব্দে ওঠে বসে।

পাশের খোলি থেকে আলোর একটা পিরামিড, ছোট্ট জানলা বেয়ে ধাক্কা খায় তাদের টিনের দেওয়ালে।

সেই আলো নিঃস্তব্ধ অন্ধকারকে একটুখানি সরিয়ে কী সুন্দর একটা মায়াবী পরিবেশ রচনা করে!

মনে হয় যেন স্বর্গ।

শুয়ে থাকা দুইজন স্বর্গের দেবী।আর এই আলোখানি যেন ভমণ্ডল জ্যোতি!

সে বিভোরভাবে চেয়ে থাকে নিষ্পাপ দুটো শরীরের দিকে।তার এত বছরের কোন পাপই যেন ওই প্রাণীদুটোকে অল্পও ছুঁতে পারেনি।নিজেকে মনে হয় নরকের কীট।অনুশোচনায় দগ্ধ হতে থাকে তার বুকের মাঝখানটা।কখন যেন পলকদুটো ভিজে আসে।সত্যিই সে চায় না। তার পাপের কোন আঁচ এসো লাগুক ওই নিষ্পাপ দুটো শরীরে।তাই আজো অব্দি দলের কাউকে তার পরিবারের কথা বলেনি।সবাই জানে তার কোন নির্দিষ্ট থাকার জায়গা নেই।সাতকুল অন্ধকার।সে অনাথ।পুলিশের শত ঘা খেয়েও কোনদিন পরিবারের কথা মুখে আনেনি।

একটা কদম গাছের ঘন ছায়ায় কিছুক্ষণ জিরিয়ে আবার ওঠে পড়ল।

বসে থাকলে তার চলবে না। হাক শুনে একজন মাঝবয়সী মহিলা বাংলোর ওপার থেকে বলে উঠলেন, এই যে শুনছো।একবার আমার বাড়িতে এসো তো ভাই।

আওয়াজ পাওয়া মাত্রই সে ঘুরে দাঁড়াল।তারসাথে চোখদুটোর লেন্স পয়েন্ট বড় করে নিল।মহিলার গলায় একখানা সোনার হার ঝুলছে।কিছু না পেলে শেষে এটাই হাতাবে।

গদগদ কন্ঠে উত্তর দিল,অবশ্যই দিদিমণি।চলুন।যত পুরনো দাগই হোক চকচকে না করা অব্দি একটা টাকাও নেব না।এটা আমার গ্যারেন্টি।

উত্তরে মহিলাটি অল্প হেসে বলে উঠলেন,তাই নাকি!..বাঃ খুব ভাল ।কাজের প্রতি নিষ্ঠা আছে তাহলে?

----সে আর বলতে দিদিমণি।

প্রতিটা পদক্ষেপ ফেলার সাথে,সাথে চোরা চোখে সে পুরো বাঙলোবাড়িটা জরিপ করে নিল।গেট পেরিয়ে পঞ্চাশ ফুট লন।তারপর বাংলোর সদর দরজা।ডান পাশটায় সবুজ ঘাস।বাম দিকে সারি,সারি বিভিন্ন রকমের ফুলের টব।

দোতলা বাড়ি।টেরিস,ব্যালকনি সব আছে।মেঝেয় চকচকে ইটালিয়ন মার্বেল বসানো ।সে একবার নিচু হয়ে মুখটা দেখে নিল।নোংরা পায়ের দাগ পড়ছে।ছোপগুলো দেখে নিজেই লজ্জিত হয়ে পড়ল।অথচ সেদিকে ভদ্রমহিলার কোন ভ্রূক্ষেপ নেই।

তিনি আগে,আগে পথ দেখিয়ে তাকে উপরের তলায় নিয়ে যাচ্ছেন।

একবার দেওয়ালে নিজের ডান হাতটা ঘষে নিল।একদম মোমের মত মসৃণ।দেওয়াল জুড়ে অদ্ভূত রকমের সব ফটো টাঙানো আছে।কাচ,স্টিল আর দামী কাঠ দিয়ে ঘরের প্রতিটি কোণা সাজানো।

সে জীবনে প্রথম এত সুন্দর ঘর দেখল।মহিলাটি তাকে একটা সোফা দেখিয়ে বলে উঠলেন,এক মিনিট বসো।আমি তৈরি হয়ে আসছি।

সে তো অবাক।হাত দিয়ে প্রথমে সোফাটা দেখল।দাগ,টাগ লাগছে না তো?

তারপর একবুক ইতস্তত নিয়ে বসে পড়ল।চারিদিক তাকিয়ে দেখছে।দেখতে,দেখতে সে হারিয়েই গেল।ঘোর ভাঙল মহিলার ডাক পেয়ে।

উনি ট্রে ভর্তি খাবার নিয়ে তার সামনে কাচের টেবিলে নামিয়ে রাখলেন।

ফুলকো লুচি,আলুর দম,মটরের তরকারি আর পকোড়ি।তারপরে আবার দুটো সেদ্ধ ডিম আর এক গ্লাস দুধ।

সে খাবারের প্লেট থেকে চোখদুটো তুলে মহিলাটির দিকে চাইল।

কোথাও কী তার মেয়ে আর বউ-এর মধ্যে মিল খুঁজে পেল?

একদম ঠিক।ইনাকেও রাতের সেই আবছা আলোয় দেখা মা,মেয়ের মত ঠিক দেবী,দেবী বলে মনে হচ্ছে।মুখজুড়ে সেই একই রকম সরলতা!

নিষ্পাপ দুটো চোখ।

মনে করে দু ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ল।

সেই দেখে মহিলাটি মিষ্টি হেসে বলে উঠলেন,শব্জিটা কী ঝাল লাগছে?...এক মিনিট দাঁড়াও।আমি ঠান্ডা জল নিয়ে আসছি।

মহিলাটি যেতেই সে পুরো প্লেট দু মিনিটের মধ্যেই খালি করে ফেলল।তারপর তৃপ্তির একটা লম্বা ঢেকুর তুলল।আর তখনি তার মনে পড়ে গেল।স্ত্রী আর কন্যার কথা।তারা কী সারাদিনে কিছু মুখে তুলেছে?...এ বাড়িতে তার আর চুরি করা হল না। এতবড় পাপ সে আর এ জন্মে করতে পারবে না।সে হিম্মত তার নেই।তাতে যদি মেয়েকে চোখের সামনে মরতেও দেখে।তাও আচ্ছা।

মহিলাটি একটা কাচের জগে জল এনে গ্লাসে ঢেলে তাকে দিলেন।

এবার সে বলে উঠল,এত করার কী দরকার ছিল দিদিমণি?..এবার বলুন কাজটা কী করতে হবে?অনেক হল খাওয়া, দাওয়া ।

উত্তরে মহিলাটি বলে উঠলেন, যে কাজের জন্য তোমায় ডাকলাম।সেটা এখন আর হবে না।

সে অবাক হয়ে বলে উঠল,সেকি!...কেন হবে না?

----সকালে যাওয়ার সময় দারোয়ানভাই মোটরটা চালু করে গেছে।তাই ট্যাঙ্কিটা পুরো ভর্তি।অনেকদিন পরিস্কার করা হয়নি।নিচে নোংরা জমে আছে।কথাটা আমার খেয়াল ছিল না। যাইহোক ..আগামীকাল এসো।ট্যাঙ্কিটা খালি করে রাখব।এই নাও পাঁচশো টাকা এডভান্স।ভুলো না কিন্তু ।আমি অপেক্ষা করে থাকব।

সে আবার মহিলাটির দিকে অবাক হয়ে তাকাল।এবার সত্যি সত্যিই সে প্রণাম করতে গেল।কিন্তু মহিলাটি সরে গিয়ে বলে উঠলেন, কী করছো কী ভাই?..আমি কী কৃপা করছি তোমায়?যে দেবী মনে করে প্রণাম করতে আসছো?আমি একজন সামান্য মহিলা।আমি কাজের বিনিময়ে তোমাকে টাকা দিচ্ছি।আর কাজ করলে, খেতে দেওয়া মানুষের ধর্ম।তাই আমাকে প্রণাম নয়।ধন্যবাদ জানাতে পারো।তার আগে আমি তোমাকে ধন্যবাদ জানাই।আমার কাজটা করে দেওয়ার জন্য রাজি হয়েছ বলে।কতদিন ধরে খোঁজ করছিলাম।কিন্তু কাউকে আর পাচ্ছিলাম না।তুমি আমাকে সত্যিই বাঁচালে।অনেক ধন্যবাদ ভাই।

গেট থেকে বেরিয়ে কয়েক পা চলার পর সে আবার ঘুরে দাঁড়াল।তারপর জোড়হাত করে বাড়িটার দিকে একটা প্রণাম করল।তখনি মৃদু সুরে কোথাও একটা ঘন্টাধ্বনি বেজে উঠল।

একটা ঘরও যে মন্দির হতে পারে।আজ সে প্রথম জানল।আর এই জাগ্রতদেবীকে স্মরণ করে সে মনে,মনে প্রতিজ্ঞা করল।আজ থেকে চৌর্যবৃত্তি সে চিরতরে ছেড়ে দেবে।এবার থেকে সে পরিশ্রম করে অর্থ উপার্জন করবে।যাতে স্ত্রী এবং মেয়েকে গর্বের সাথে জড়িয়ে ধরতে পারে।নিজেকে তাদের থেকে আলাদা ভাবার সাজাটা ভোগ করতে হবে না।

আজ থেকে নিধিরাম চোর না। একজন খেটেখাওয়া সাধারণ মানুষ।

      -------সমাপ্ত-----


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Drama