জিয়নকাঠি
জিয়নকাঠি
গনপতি হালদার।একজন অনামি কাষ্ঠ শিল্পী।বর্তমান বয়স বাহান্ন বছর।নেশা বলতে মাঝে,মাঝে বিড়ি খান।বছর কয়েক হল চোখে একটা চশ্মা এঁটেছেন।দু,একটা দাঁত খসেছে।গলায় একখানা বেলের মালা পরেন।অনেকদিন ধরেই তিনি নিরামিষ খাবার খান।শত দুঃখ,হাজার যন্ত্রণাতেও তার মুখের মায়াময় হাসিটা কিছুতেই উধাও হয় না।একটা চেক লুঙ্গি আর ফতুয়া।এই তার প্রিয় পোশাক।অনেক ছোট থেকেই বাবার সাথে কাজে লেগে পড়েছিলেন।তবু কোনরকমে টেনেটুনে মাধ্যমিকে পাশটা করেছিলেন।আর এগোননি।
বাবার হাতে কাঁপুনি ধরার পর থেকে তিনিই ছোট,ছোট নক্সাগুলো কাঠের গায়ে ফুটিয়ে তোলার দায়িত্বটা নিয়েছিলেন।
এ এক দুর্নিবার নেশা!!
..সৃষ্টির অপার সুখ!!
অনেক সময় খিদে,তেষ্টাও চলে যায়।
সময়ে দুটো খাওয়ানোর জন্যও ঘরে কেউ ছিলেন না।কারণ গনপতির মা শৈশবেই মারা গেছিলেন।জরাজীর্ণ টালির বাড়িটাই দুটো শিল্পী মানুষের বাস।
শুকনো কাঠের ছাল উনুনে ভরে চাট্টি ভাত আর আলু সেদ্ধ করতে খুব বেশি সময় ব্যয় হত না। ওই দিয়েই দুটো পেটের ক্লান্তি দূর হয়ে যেত।
এক সময় গণপতির বাবা সম্পূর্ণ সহ্যাশায়ী হয়ে উঠলেন।গণপতির হাত তখন স্বয়ং বিশ্বকর্মাকে টেক্কা দিচ্ছে।
এগজিভিসন উদ্যোক্তাদের অনবরত তাগাদা।মাল তাড়াতাড়ি চায়।প্রথম,প্রথম গণপতির শুনতে অসহ্য লাগত।সব সৃষ্টিই তার কাছে সন্তানসম।অনেক স্নেহ আর যত্নের ফসল এক একটা নিদর্শণ!..সেটাকে কেউ মাল বলে অসম্মাণ করলে কোন শিল্পীরই ভাল লাগার কথা নয়।
টাকা বড় বালাই।যার জন্য বাক স্বাধীনতাটুকুকে পর্যন্ত গলায় দড়ি নিতে হয়।
পূর্ণিমার ভরা জ্যোৎস্নায় সারারাত বরাতের মাল তৈরি করেও সেবার তিনি রুগ্ন পিতাকে বাঁচিয়ে তুলতে পারলেন না।
তার গুরু, তার জন্মদাতা, তারচেয়ে বড় একজন বিখ্যাত শিল্পীকে তিনি সেদিন হারিয়ে বড় অসহায়বোধ করছিলেন।তার অন্তরটার সাথে দু,একটা ঘুঘু আর ফিঙে ছাড়া আর জগৎ সংসারে কেউ কাঁদেনি।
..কেউ জানতেন না। যেদিন গণপতি তার মৃত পিতার খাটুলি ওঠানোর জন্য আরো তিনটে জ্যান্ত মাথা খুঁজে ফিরছিলেন।ঠিক সেই মূহুর্তে তার হাতে গড়া কাঠের নারীমুর্তিটা দিল্লীর এগজিভিসন হল থেকে তোলার জন্য দেশ,বিদেশের ব্যাবসায়ী মহলে হুড়োমুড়ি পড়ে গেছিল।
এ দেশের সবথেকে বড় ট্রাজেডি এটাই!
সেই সব দিনের কষ্ট আজকের গণপতি ভুলে গেছেন।তার বাটালির ধার আর শিরিষ কাগজের ঘর্ষণে কত,কত আনন্দ দুহাত তুলে হেসে উঠেছে,তার হিসেব রাখেননি।শিল্পী সে সব হিসেব রাখতে জানেন না। তাই তো তার ভাঙা ঘরটা আজো সম্মানের সাথে মাথা তুলে দাড়াতে পারল না।
বরাতদাতারা মোড়ের কাছে নিজেদের গাড়িগুলো দাড় করিয়ে পায়ে হেঁটেই গণপতির রুগ্ন বাড়িতে আসতেন। তার শিল্পীসত্ত্বার দরদাম করতে।জগত সংসার সম্বন্ধে অজ্ঞ এক শিল্পীর সৃষ্টিকে এভাবেই ঠকিয়ে তারা মুঠো,মুঠো ডলারের মালিক হয়ে উঠেছিলেন।
সেদিন কয়েকটা টাকা বেশি পাওয়াতে বার কয়েক করে নোট কটা চোখের সামনে ধরে গুনছিলেন।মোট দশটা দশ টাকার নোট।হয় একশ টাকা।তার জীবনে পাওয়া প্রথম বক্সিশ।ভাল কাজের জন্য বাড়তি পাওনা।গণপতির মুখে একটা তৃপ্তির আলো ফুটে উঠল।
..ঠিক সেই সময়েই হড়াম করে কিছু একটা পড়ে যাওয়ার শব্দে সজাগ হয়ে উঠলেন।নিশ্চয়ই কুকুরগুলোর কান্ড!..ঘরটাতে তো আর দ্বিতীয় কোন মানুষ নেই। তাই গণপতির সাথে তারাও ঘরটা ভাগ করে দিন,রাত পড়ে থাকে।
আজ সেই ভেবেই টিনের ভাঙা দরজাটা ওঠাতে গিয়ে দেখলেন।একজন অপরূপা সুন্দরী নারী!.. প্রথমটাই স্বপ্ন দেখছেন ভেবে দুবার চোখদুটো পরীক্ষা করে নিলেন।তারপর নিশ্চিত হলেন।এটা স্বপ্ন নয়।সত্যি।
নারী হলেও পুরুষের পোশাক পরে রয়েছেন।মাথায় একটা বড় মত গোল টুপি। চুলগুলো সোনালী রঙের।গণপতি চোখের সামনে এমন একটি জ্যান্ত নারী প্রতিমা প্রত্যক্ষ করে বিভোর হয়ে পড়লেন।অনুরূপ,মেয়েটিও গণপতির অপার কলাময়তায় মুগ্ধ হয়ে পড়লেন।পিছনে যে গণপতি এসে হাজির হয়েছেন তার খেয়াল পড়েনি।একমনে গণপতির সৃষ্টিসত্ত্বাকে দেখছেন।
মেয়েটি একটু বাদে পিছন তাকাতে সামনে গনপতিকে দেখে একটু চমকে উঠলেন।কাঁপা গলায় ইংরেজিতে বলে উঠলেন,হু আর ইউ?গণপতির মুখে অম্লান হাসিটাই ওর ভাষা,পরিচয় সবকিছু।
তাই মেয়েটি মুহূর্তে সবকিছু জেনে ফেললেন।
গণপতি অপার বিষ্ময়ে প্রশ্ন করলেন, কি চাই এখানে?
মেয়েটা এতক্ষণে জেনে গেছেন শিল্পী মানুষটি তার ভাষা কিছুই বুঝতে পারবেন না। তাই প্রথমে একবার বাইরে বেরিয়ে চারিদিকটা সন্তর্পণে দেখে নিলেন।তারপর গণপতিকে পাশে এনে বসিয়ে ভাঙা,ভাঙা বাংলায় বুঝিয়ে বললেন।
তিনি একজন বিদেশিনী।ইংল্যান্ডে বাড়ি।তার বাবা একজন মস্তবড় ব্যাবসায়ী।তিনি নানা দেশে ঘুরে বেড়ান।সুন্দর,সুন্দর শিল্পকলার খোঁজে।একবার পছন্দ হলে যত দাম দিতে হোক না কেন তিনি কিনে নেন।
গণপতির হাতে তৈরি অনেকগুলো কাঠের জিনিস তিনি নাকি কয়েক লাখ টাকা দাম দিয়ে কিনেছেন।আর সেই থেকে শিল্পীকে দেখার ইচ্ছে জেগে যায়।ব্যাবসায়ীরা কিছুতেই ধরা,ছোঁয়া দিতে চান না দেখে।তিনি চুপিসারে তাদের ফলো করে অন্য গাড়ি করে এখানে পৌঁছেছেন।
মেয়েটির নাম কিউট।তিনি অনেক করে বোঝালেন।গণপতির হাতে অদ্ভুত শিল্পীসত্ত্বা আছে। এই সব ব্যবসায়ীরা তাকে অনেক ঠকিয়েছেন।তাকে সে নিজেদের দেশে নিয়ে গিয়ে সারা বিশ্বকে তার হাতের যাদু দেখাতে চান।
তিনি আবার একমাসের ভেতরেই ফিরে আসবেন।গণপতির কাছে দরকারি কাগজগুলো নিয়ে বললেন।তিনি তার ভিসা আর পাসপোর্ট তৈরি করে খুব শীঘ্রই ফিরবেন।একথা এখন তিনি যেন কাউকে না বলেন।এই বলে কিউট চলে গেলেন।
গণপতি অনেকক্ষণ আজ কাজ থামিয়ে পুরনোদিনের কথায় হারিয়ে গেলেন।আজ প্রথম তার বাবার কথা মনে করে একটু কেঁদে উঠলেন।
অনেকদিন পর ধুনোর জায়গাটা একটু পরিস্কার করে কিছু নতুন ধুনো জ্বেলে দিয়ে খাটুলিতে শুয়ে খোলা আকাশটার দিকে তাকালেন।
একসময় প্রকৃতির নিয়মে সন্ধ্যা শেষ হয়ে অন্ধকার নেমে এল। পাখিরা কল
তান বন্ধ করে শুয়ে পড়ল।চাঁদ,তারা উঠল।কিন্তু সেই অল্প আলোয় গণপতির ঘরটা আলোকিত হল না ।কিন্তু তার চোখে আজ হাজারটা সূর্যের আলো যেন ফুটে উঠল।
কিউট মিথ্যে বলেননি।দিন কুড়ির মধ্যেয় সবকিছু তৈরি করে গণপতিকে সাথে নিয়ে চলে গেলেন।জামা,প্যান্টের মাপ আগেই নিয়েছিলেন।সেইমত নতুন পোশাকে গণপতিকে সাজিয়ে ইংল্যান্ডে তার নিজের বাংলোয় নিয়ে গেলেন।
এই গণপতির সাথে সেই গ্রামের গণপতির আজ আকাশ,জমিন পার্থক্য।আয়নার সামনে নিজের ছবিটা দেখে গণপতি নিজেই চমকে উঠলেন। এখন তার চেহারায় কোথাও এতটুকু দারিদ্রতার ভাঁজ নেই।পুরোপুরি সাহেবী মানুষ।শুধুমাত্র গায়ের রঙটাই যা একটু আলাদা।
কিউট তার বাবার তৈরি বিশাল বড় ফার্ম হাউসে গণপতিকে নিয়ে গেলেন।সেখানে বড়,বড় কাঠের গুড়ি এবং কাজ করার আধুনীক যন্ত্রপাতি রাখা আছে। গণপতির হাতের স্নায়ুগুলো উদ্দীপিত হয়ে উঠল।
কয়েকজন হেল্পারকেও পেলেন।শুরু করলেন নতুন এক কর্মযজ্ঞ।
এখানে তিনি সময় মত সুষম খাবার পেলেন।হাতের সামনে নক্সা তোলার সমস্ত যন্ত্রপাতি।একের পর এক জীবন্ত কলা ফুটে উঠতে লাগল তার হাতে।সেই সব নিদর্শণ পশ্চিমী দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিতে লাগল।কিছু দিনের মধ্যেয় গণপতি বিখ্যাত হয়ে উঠলেন "ইন্ডিয়ান ওডেন আর্টিষ্ট মি. গণপত্ হলদার" নামে।তার নামের জোয়ার আছড় খেল এসে সিংহল উপসাগরে।সারা দেশের মানুষ তাকে এক ঝলক দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছেন।
ইতিমধ্যে সরকারিভাবে তাকে কয়েকটা সম্মান দেওয়ার কথাও উঠছে।দেশ তাকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য তৈরি হয়ে আছে।
গণপতি এবার দেশে ফেরার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করলেন।কিউট অবশ্য সব ব্যবস্থায় করে রেখেছিলেন।
এই কদিনে গণপতি এবং কিউটের মধ্যে খুব সুন্দর একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।গনপতি এখন ভাঙা,ভাঙা ইংরেজি বলতে পারেন।এবং অর্ধেক বুঝতেও পারেন।তাই কিউটের সাথে মাঝে,মাঝেই কথাবার্তা হয়।গণপতি ঠিক বুঝতে পারেন না। আসলে এই মেয়েটাকে তিনি কি বলে ডাকবেন?
দেবী?
..মা?
..না প্রেয়সী বলে?
..আসলে যে তিনটে সত্ত্বায় মিলেমিশে আছে তার মধ্যে।
কিউটের জন্যই আজ তার নাম,যশ,প্রতিপত্তি সবকিছু।না হলে তিনিও তার পিতার মত ওই গ্রামের আধভাঙা ঘরটার মধ্যে কোনদিন অন্ধকারে হারিয়ে যেতেন।
এত আলো!এত রোসনায় সব যে ওই কিউটের জন্য।
তার হাতের কলা বেঁচে একদল সুযোগ সন্ধানী মানুষ মুনাফা আর নাম কিনছিলেন।
আজ তিনি সমস্ত বিশ্বের সাথে পরিচয় লাভ করলেন।সে তো কিউটের অপরিসীম দয়াতে।তার অপার আনুকূল্যে!
কিউটের শেষ ইচ্ছে একটা আছে। গণপতি আজ তাদের বিশাল বাংলো বাড়ির আধুনীক সুসজ্জিত ড্রয়িং রুমে ভীরু পায়ে হেলান দিয়ে নরম সোফায় বসে আছেন।
তার অন্তিম ইচ্ছে শোনার জন্য। যেমন করেই হোক মেয়েটার শেষ ইচ্ছে তিনি পূরণ করেই দেশে ফিরবেন।এটাই হবে তাকে দেওয়া সর্বোৎকৃষ্ট উপহার।
কিউট স্নান সেরে একটা গাউন জড়িয়ে নিলেন।মুখে শিউলি ফুলের সতেজতা।তাকে এমনভাবে দেখে গণপতির পঞ্চান্নের শরীরেও অদ্ভুত একটা শিহরণ খেলে গেল।পশ্চিমী আবহাওয়ার স্বাভাবিকত্ব এটা।মানিয়ে নিতে হয়।
কিউট বলে উঠলেন,আমি চাই আজ আপনার মধ্যে আর এক শিল্পীসত্ত্বার জন্ম হোক।যেটা ছাড়া আপনার শিল্পী জীবন অসম্পুর্ণ থেকে যাবে।
আপনি দেশে ফেরার আগে আমায় একখানি নগ্ননারী মূর্তি তৈরি করে দেবেন।
কথাটা শুনে গণপতির বুকটা ছ্যাত্ করে উঠল।
কিউট কথাটা বলেই ভেতরে অদৃশ্য হয়ে গেলেন।
এদিকে চিন্তার সমুদ্রে ভাসতে লাগলেন গণপতি।
দুদিন পেরিয়ে গেল।অথচ শুকনো কাঠে আর কিছুতেই রেখা ফুটছে না। কেমন হয় নারীর স্তন!..তার রেখা!..তার নিচে উন্মুক্ত নাভীর আকার!..খাঁজ..তার নিচে..তার নিচে!...শুধু শূণ্যস্থান।
তিনি তো জীবনে কোনদিন উলঙ্গ নারীকে খুটিয়ে দেখেননি।তিনি তো একজন মানুষরূপী শিল্পী।ঈশ্বর তো নন।কোন জিনিসটা একবারো না দেখে নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলবেন কি করে?
তিনদিনের বেলায় গণপতি এসে জবাব দিলেন।তিনি পারবেন না।
কিউট হেসে উঠলেন। তারপর হাতটা ধরে গণপতিকে নিজের গাড়িতে চাপিয়ে ফার্ম হাউসে সেই অসম্পুর্ণা নারী মূর্তিটির কাছে দাড় করালেন।
গণপতির উদ্দেশ্যে বললেন,আপনি সরঞ্জাম নিয়ে কাজে লেগে পড়ুন।
তারপর কিউট একে একে নিজের সব কটা বসন ত্যাগ করে সম্পূর্ণা নিরাভরণ হয়ে গণপতির চোখের সামনে দাঁড়িয়ে পড়লেন।
গণপতির প্রথমটাই খুব ঘাম পাচ্ছিল।তারপর যেই একবার যন্ত্র হাতে কাঠ ছুঁলেন।আর ঘাম এল না। একটা অপার সৃষ্টির আনন্দে মেতে উঠলেন।
সাই,সাই করে এবড়ো,খেবড়ো কাঠকে সরিয়ে কিউটের নিরাবরণ শরীরটা হুবহু গাঁথা পড়ল।
মাত্র ঘন্টা কয়েকের ব্যবধানে গণপতি যে সৃষ্টি করে দেখালেন।সেটা আজ অব্দি কোন কাষ্ঠ শিল্পী বোধ হয় পেরে ওঠেন নি।
মূর্তির সজীবতা দেখে কিউট উৎসাহিত হয়ে পড়ল।উপহার স্বরূপ গণপতির ঠোঁটে নিজের ঠোঁটটা ডুবিয়ে দিলেন।
গণপতি অদ্ভুত এক ভাললাগার জগতে হারিয়ে যেতে,যেতে হোচট খেয়ে ফিরে এলেন।
কিউটকে নিজের থেকে সরিয়ে বলে উঠলেন,আমায় ক্ষমা করুন ম্যাম!
কিউট বুদ্ধিমতী মেয়ে।তাই আর জোর করলেন না।
তারপর দিন গণপতির বিদায়ের সুর বেজে উঠল। কিউটের বাবা একজন ইন্ডিয়ান কলিগের সাথে গণপতির দেশে ফেরার ব্যবস্থা আগেই করে রেখেছিলেন।
কিউটও এয়ারপোর্টে ছাড়তে এসেছেন।গণপতির চোখদুটো ভিজে এল।কিউট বার,বার নিজের ঠোঁটদুটো কামড়ে ধরছেন।
আসলে থর্ থর্ করে কাঁপছিল তাই।চোখের জল বাগ মানছে না। এ যে কীসের যন্ত্রণা!..বিধাতাই জানেন!..এই সম্পর্কের নাম বোধ হয় ভারতীয় অভিধানে খুঁজে পাওয়া যাবে না। এখানেই পূর্ব আর পশ্চিমের মধ্যে অন্তর।
গণপতি প্লেনের সিটে হেলান দিয়ে ভাবতে লাগলেন।কিউট ছাড়া সত্যি তার শিল্পী জীবন অসম্পূর্ণ থেকে যেত।একটা হাতড়ানো জগৎ আজ তার কাছে দিনের আলোর মত স্পষ্ট।