নেইল পলিশ থেকে স্কিল পলিশ:-
নেইল পলিশ থেকে স্কিল পলিশ:-
সারাদিন বাড়িতে থেকে থেকে তুষার আর চন্দ্রা অবসন্ন। স্কুল কলেজ অফিস কাছারি সব বন্ধ লকডাউনের কারণে তাই ঘর বন্দী এখন এরা দুজনও। দুজনের সংসারে আহামরি কাজ কিছু থাকেও না তেমন, চন্দ্রা এক উচ্চ্যমাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষিকা আর তুষার এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। সারাদিন বাড়িতে বসে বসে মানসিক দিক দিয়ে যখন দুজনেই ক্লান্ত তখন চন্দ্রা এক প্রস্তাব দেয় তুষার কে। তুষারও একটু বিবেচনা করে সায় দেয় চন্দ্রার প্রস্তাবে। প্রস্তাবটি ছিল এমন যে এখন যখন সকলে ঘরবন্দী তখন এমন একটা কিছু করলে হয় না যাতে নিজের সঙ্গে সঙ্গে অন্য সকলেরও একটু বিনোদন হয়। তুষার জিজ্ঞেস করেছিল কি এমন কাজ করা যায়? চন্দ্রা বলেছিল তোমার তো খুব সখ আবৃত্তি করার। চলো না দুজনে মিলে একটি আবৃত্তির ইউটিউব চ্যানেল বানাই। তুষার হেসে উড়িয়ে দিয়েছিল তখন, বলেছিল কত্ত কত্ত আবৃত্তির চ্যানেল পরে আছে ইউটিউবে। এ আর নতুন কি?
তবুও চন্দ্রার জোরাজুরিতে তুষার শেষমেশ রাজি হয়েছিল। তুষার যখন জানতে চাইলো চন্দ্রা কি করবে? সে নিজে তো নাহয় কবিতা আবৃত্তি নিয়ে আর ভিডিও তৈরি নিয়ে বেশ কিছুটা সময় অতিবাহিত করবে। কিন্তু চন্দ্রা?
চন্দ্রা হেসে জবাব দিয
়েছিল, "আমিও ভিডিও করবো। আমি দেখাবো কিভাবে নেইল আর্ট করা যেতে পারে সুচারু রূপে আর স্বল্প সময়ে। তুষারের বেশ মনঃপূত হয়েছিল চন্দ্রার এই চিন্তাধারা টা। যেমন ভাবা তেমনই কাজ। দুজনেই বড্ডো ব্যস্ত এখন ভিডিও তৈরি করা নিয়ে। তুষার খাওয়া দাওয়ার পরেই নিজের স্টাডি রুমে গিয়ে বার বার রিহার্সাল করে কবিতা গুলোর। ঘরের কাজের পরেই দুজন যার যার পছন্দের স্কিল কে ঘষামাজা করাতে নিযুক্ত। সারাদিনের খালি বসে থাকার বিরক্তিটাও কেটে যায় তাছাড়া নিজের প্রতিভা গুলোকে সকলের সঙ্গে শেয়ারও করা যায়। ইতিমধ্যেই তুষার তার বন্ধুবৃত্তে বেশ সুখ্যাতি পেয়েছে তার কবিতা আবৃত্তির দ্বারা আর চন্দ্রার এই নেইল পেইন্ট নিয়ে কারুকার্য করার সুক্ষ গুন রপ্ত করার জন্য মেয়েরা ভীষণ রকম আগ্রহী। যেখানে এতদিন এরা দুজনের সময়ই কাটতো না এখন দুজনে চরম ব্যস্ত নিজের নিজের পছন্দের কাজ গুলো নিয়ে। এই ব্যস্ততা তাদের কে সাময়িক ভাবে স্বল্প সময়ের জন্য হলেও করোনার আতংককে ভুলিয়ে রাখতে সাহায্য করছে। সত্যি, চন্দ্রা আর তুষার করোনার ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত না হয়ে বরং সাবধানে থেকে এবং সচেতন থেকে নিজের ভালো লাগার কাজ গুলোর দ্বারা জয় করে নিয়েছে বন্দীদশা কেও।