Ignite the reading passion in kids this summer & "Make Reading Cool Again". Use CHILDREN40 to get exciting discounts on children's books.
Ignite the reading passion in kids this summer & "Make Reading Cool Again". Use CHILDREN40 to get exciting discounts on children's books.

Debdutta Banerjee

Drama

1.0  

Debdutta Banerjee

Drama

মন্দ মেয়ের উপাখ্যান

মন্দ মেয়ের উপাখ্যান

4 mins
17.6K


পার্ক স্ট্রিটের মাঝামাঝি ক্রসিং'এ গাড়িটা দাঁড়াতেই ফুটপাতে তিতির কে দেখতে পেয়েছিল জয়। দীর্ঘ দশ বছর পর এভাবে তিতিরকে দেখে অবাক হয়েছিল, দরজাটা খুলেই জয় বলে -" উঠে এসো। কোথায় যাবে বলো, নামিয়ে দেবো ।"

ভুত দেখার মতো চমকে উঠেছিল তিতির। দীর্ঘ দশ বছর পর জয়ের সাথে এভাবে দেখা হবে কখনো কল্পনাও ক‍রে নি। অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিল কয়েক সেকেন্ড।

-"আরে, সিগন্যাল খোলার আগে উঠে এসো।" আবার বলে জয়।

তিতির ইতস্তত করে। সিগনালের টাইম বলছে আর দশ সেকেন্ড। তিতির মাথা নাড়ে, বলে -"এগিয়ে যাও। আমি অন‍্য দিকে যাবো। "

-"উঠে এসো, ছেড়ে দেবো। " জয় আজ ওকে ছাড়বেই না।

রাস্তার সবাই তাকাচ্ছে, বাধ্য হয়ে তিতির উঠে বসে জয়ের দামি বিদেশী ঠাণ্ডা গাড়িতে। সিগন্যাল খুলে গাড়ি এগিয়ে চলে।

তিতিরের এই গাড়িতে নিজেকে বড্ড বেমানান লাগে।শস্তার ঘামে ভেজা চুড়িদার, সারা দিনের অবিন্যস্ত চুল, আড় চোখে জয়ের দিকে তাকায়। দামি জামা প্যান্ট, চোখে রিম-লেস চশমা, হঠাৎ করে তিতিরের নিজের উপর রাগ হয়। এভাবে জয় ডাকলেই ও এগিয়ে এলো কেন? ও তো না চেনার ভান করে এড়িয়ে যেতেই পারতো‌। মল্লিক বাজারের ক্রসিং আসছে, নেমে যাবে ভাবল।

জয় কে বলতেই অবাক চোখে তাকিয়ে বলল -" কোথায় যাবে বললে নামিয়ে দেবো। তবে এতদিন পর এভাবে তোমায় দেখবো ভাবি নি। যদি তোমার দেরি না হয় আমরা একসাথে কোথাও বসতে পারি।"

-" আমাদের পথ আজ আলাদা । এভাবে আমার সাথে তোমায় কেউ দেখলে তোমার বদনাম হবে। আমি সমাজের চোখে নোংরা মেয়ে। আর তোমরা উচ্চবিত্ত। এটা আমার ব‍্যবসার সময়।আমার সময়ের দাম আছে।তাই আমায় নামিয়ে দাও। এখন কোথাও যাবো না।পথেই দাঁড়াবো আবার। " পার্ক সার্কাস ক্রসিং'এ নেমে যায় তিতির।

পিছনের গাড়ির হর্নে সম্বিত ফেরে জয়ের। এলোমেলো হয়ে যায় সব। তিতিরের শেষ কথা গুলো কানে বাজে। সত্যিই কি ও এতো নিচে নেমে গেছে!!

বাইপাসের একটা বারে এসে বসে জয়।বাবা যেদিন তিতিরকে অপমান করে নোংরা কথা গুলো বলেছিল, ও পারেনি প্রতিবাদ করতে। বলতে পারেনি যে ওর টাকা দেখে তিতির এগিয়ে আসেনি। ও নিজের ভালবাসার ডালি নিয়ে দীর্ঘ দিন ঘোরার পর তিতিরের মন পেয়েছিল। কিন্তু সেদিন, বাবার পছন্দ করা মেয়েকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছিল জয়। বাবা ঐ গরীব বস্তির মেয়েকে মেনে নেয়নি নিজের হবু পুত্রবধূ হিসাবে। জয়ের আর মুখ ছিল না তিতিরের কাছে যাওয়ার। কোনোদিন খোঁজ নেয়নি ও কি করছে। পঙ্গু বাবাকে নিয়ে অসহায় মেয়েটা একা জীবন যুদ্ধে টিকে আছে কি না!! তবে কি ওকে সত্যি ঐ আদিম পেশায় যুক্ত হতে হয়েছে!! মাথাটা আর কাজ করে না।

পার্ক সার্কাস থেকে শিয়ালদার বাস ধরে তিতির। প্রাইভেট অফিসে বড্ড কাজের চাপ। যতটা পারে খাটিয়ে নেয়। বাবার চিকিৎসা চলছে। বিয়ে না করে ভালই হয়েছে। বাবাকে দেখতে পারছে। আজ যদি ঐ কথাগুলো জয় কে না বলত ও আবার কাছে আসতে চাইত। পরকীয়ায় জয়'দের বদনাম হয় না। হয় তিতিরের মতো মেয়ে ওর কাছে মন্দ হয়েই থাকুক না হয়। মন্দ মেয়ের এসব ভয় কম।

#positiveindia


Rate this content
Log in