Mind Game
Mind Game
(অনুপ্রেরণা- ২২শে শ্রাবণ, দ্বিতীয় পুরুষ, মুখোশ সহ ক্রাইম সিরিজ। প্রচ্ছদঃ অভিরূপ)
বিকেলবেলা কলকাতার পার্ক স্ট্রিটের একটা কফি শপে একটা টেবিলে দুইজন বসে কথা বলছে।
মুহিন।। কিছুই হিসেব মতন হচ্ছে না দিব্য, কিছুই নাহ।
দিব্য।। সেটাই। লাস্ট ৬/৭ মাসে চার জন খুন কিন্তু ক্রাইম ডিপার্টমেন্ট ক্লু লেস...
মুহিন।। নিজেকে ভীষণ অসহায় লাগছে...
দিব্য।। মানে তুই নিজেকে পরাজিত ধরেই নিচ্ছিস?
মুহিন।। উপায় দিব্য?
দিব্য।। মুহিন। স্পেশাল ক্রাইম ডিপার্ট্মেন্টের আমরা সব থেকে সফল দুইজন অফিসার আর...
মুহিন।। মাইণ্ড ইট, সব কেস আমাদের তিন জনের ক্রেডিট সমান ছিলো...
দিব্য।। একজন অজ্ঞাতবাসে থাকলে কি আর করবি?
মুহিন।। কেন দিব্য কেন? সিরিয়াল কিলিং কিংবা ক্রাইম অ্যানালিসিসে ভারতের সেরা মানুষ নিজেকে সব কিছুর থেকে সরিয়ে রাখবে আর আমরা... ফাক দ্য হেল...
দিব্য।। আমাদের ক্ষমতা কি কারোর দ্বারা চালিত হবে?
মুহিন।। তুই নিজেও ভালোভাবে জানিস তাও এই কথা বলছিস দিব্য।
দিব্য।। হয়ত তাই মুহিন।
মুহিনের মোবাইলে একটা মেসেজ আসে আর সে ভুরু কুঁচকে সেটা দেখে।
একটা স্বপ্ন দেখতে চেয়েছিলাম,
চেয়েছিলাম মন পবনের নাও বাইয়ে তোমার সাথে হারিয়ে যেতে...
বিলিন হয়ে চেয়েছিলাম দিগন্তরেখায়।
পা ভিজিয়ে হাঁটতে ইচ্ছে করে বালুকাবেলায়।
খাড়াই বেড়ে ধরতে ইচ্ছে করে মুঠো করে বরফের কুচি।
আঁকতে চেয়েছিলাম মনের ক্যানভাসে একটা মুখের আদল
বারবার পারিনি শেষ করতে
কোথাও ছবিটা শেষ হয়নি।
লিখতে গিয়ে কবি ছন্দ হারিয়েছে
গাইতে গিয়ে সুর হাহাকার করেছে কানাগলিতে
টিকটিক করতে অস্বীকার করেছে দেওয়াল ঘড়িটা।
কলকাতার অনতিদূরে বারাসাত-বনগাঁ রোডের ওপর একটা ভগ্নপ্রায় জমিদার বাড়ির সামনে একটা গাড়ি এসে দাঁড়ালে সেখান থেকে দুইজন মানুষ নীচে নামে। বাড়ির ভেতর থেকে উদাত্ত কণ্ঠে গান ভেসে আসছে। সূর্য পশ্চিম আকাশে প্রায় মিলিয়ে যাবে।
“তুমি কি কেবলই ছবি
শুধু পটে লিখা
ওই যে সুদূর নীহারিকা
যারা করে আছে ভিড়
আকাশের নীড়
ওই যারা দিনরাত্রি
আলো হাতে চলিয়াছে
আঁধারের যাত্রী গ্রহ তারা রবি
তুমি কি তাদের মতো সত্য নও
হায় ছবি তুমি শুধু ছবি
তুমি কি কেবলই ছবি...”
মরচে ধরা গেটে ঠেলে মানুষ দুইজন বাড়ির ভেতরে ঢোকে। প্রায়ন্ধকার সিঁড়ি দিয়ে তারা সাবধানে ওপরে ওঠে। দরজার বাইরে থেকে ভেতরের মানুষটাকে দেখা না গেলেও বোঝা যায় টেবিলে মদের বোতল আর গেলাস আর সেই মানুষটা গান গাইছে।
“নয়নসমুখে তুমি নাই
নয়নের মাঝখানে নিয়েছ যে ঠাঁই
নয়নসমুখে তুমি নাই
নয়নের মাঝখানে নিয়েছ যে ঠাঁই
আজি তাই
শ্যামলে শ্যামল তুমি নীলিমায় নীল
আমার নিখিল তোমাতে পেয়েছে
তার অন্তরের মিল
নাহি জানি কেহ নাহি জানে
তব সুর বাজে মোর গানে
কবির অন্তরে তুমি কবি
নও ছবি নও ছবি নও শুধু ছবি
তুমি কি কেবলই ছবি...”
“আরে বেহুলা একা?”
“রাসেল প্লিস...”
“আমার কাছে কি মনে করে? এনি ওয়ে চিয়ার্স... অবশ্য বললে আমি হরলিক্স কিংবা ফ্রুট জুস আনিয়ে দেবো?”
“১২০ এম.এল হার্ড রক। এই দিব্য প্লেটে এইগুলো অ্যারেঞ্জ কর না।”
“আসুন আসুন মিস্টার লখিন্দর। তাই ভাবছিলাম, কতি এসেছে কিন্তু পান্থি কই?”
“তুই বদলাবি না?”
“কি লাভ মুহিন?”
“চল আজ সারারাত আড্ডা সাথে মদ আর চেকমেট।”
“আমার রেজিগনেশান অ্যাকুসেপ্টের খুশীতে কি?”
“এটা তোর জন্য...”
মুহিনের হাত থেকে রাসেল খাম নিয়ে ভেতরের চিঠি দেখে ছিঁড়ে ফেলে।
“আমাকে কি বেশ্যা পেয়েছিস তোরা?”
“আমার জন্য ওয়ান অ্যান্ড হাফ পেগ উইথ আইস...”
“গুড ইভনিং স্যার।”
“আজ আচমকা রাসেল আমাকে স্যার বলছে? বাট আমি এই খোঁচা গায়ে মাখলাম না।”
“আমার সিদ্ধান্ত কিন্তু বদলাবে না রক্ষিতদা।”
“ক্যান উই ডিসকাস রাসেল। দাদা হিসেবে এটা অনুরোধ?”
নমস্কার শুরু করলাম নতুন ক্রাইম অ্যান্ড সাসপেন্স সিরিজ মাইন্ড গেম। লাইক, কমেন্ট করে অনুপ্রাণিত করুন।
(চলবে)