পুরুষ দেহব্যবসা ট্রেলার পর্ব
পুরুষ দেহব্যবসা ট্রেলার পর্ব
আমি বেশ্যা, বেশ্যাপাড়া আমার ঘর
আমাকে সবাই সেটাই ভাবে, আমার আপনপর।
চোখের কোণায় জল আমার এটাই আমার দিন,
লহমাতে হই আমি উদাসীন।
নিকস আঁধার রাত নিঝুম শেষ আমার খেলা
হারিয়ে গিয়েছে আমার ঘুমের বেলা।
“মা চারপাশে লোক, পাহারা। আমি পালাব কিভাবে? আমি পড়তে চাই মা। আমি বড় হতে চাই।”
“কথা বলবার সময় নেই। খিড়কির দরজা দিয়ে পালা তুই।”
“কিন্তু দরজার ওপাশে ওরা পাহারাতে আছে তো?”
“ওইদিকে কেউ নেই আমি দেখে এসেছি।”
“আমি চলে গেলে তোমার কি হবে মা?”
“আমার চিন্তা করিস না বাবু। ঈশ্বর আছেন তিনি সব বিচার করছেন। তুই পালিয়ে গিয়ে বড় হয়ে আমাকে নিয়ে যাস বাবা। উচ্চশিক্ষিত হয়ে বিশাল চাকরি করে মাথা উচু করে সমার সামনে দাঁড়াবি তুই। গর্বে আমার ছাতি বেড়ে যাবে। এই গ্রামের অন্ধকুসংস্কার দূর করে আগামীর দিশা দেখাবি তুই।”
“কিন্তু কিভাবে?”
“শোন বাবা। ব্যাগে কাপড় নিয়ে নে আর এইনে বিয়ের জন্য ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলেছিলাম।”
“এটা তোমার শেষ সঞ্চয় মা।”
“আমার সঞ্চয় তুই বাবু। তুই এখানে থেকে পালিয়ে কলকাতা শহরে চলে যা। ওখানে থাকার জায়গা পাবি, তোর মতন দুইচোখে স্বপ্ন দেখে এমন ছেলেদের পাবি। শিক্ষা পাবি, চাকরি পাবি। কষ্ট করলে অবশ্যই জীবনে সফল হবি বাবু।”
“কলকাতা তো অনেকদূর। কিভাবে যাবো?”
“রাতেরদিকে একটা ট্রেন আছে। মাত্র কয়েক ঘণ্টার তো ব্যাপার। যেদিন চাকরি পাবি আমি সেইদিনের আশায় থাকব বাবু।”
“আর তুমি মা!!!”
“এটা তোর বাপ-ঠাকুরদার ভিটেমাটি। এই তুলসিতলা, তোর বাবার অস্থি ছেড়ে আমি কিভাবে যাবো বলতে পারিস?”
মা ছেলের কপালে চুম্বন করে আর ছেলের কপালে কয়েকফোঁটা জল পড়ে।
“মা!!!”
“বল বাবু।”
“বাগানের গাছগুলো, পুকুরের মাছ সবার যত্ন নিও।”
বাইরে বিয়ের তোড়জোড়ের আওয়াজ। মা ছেলেকে আশীর্বাদ করে চোখের জল মোছে। জোনাকির আলোতে দেখা যাচ্ছে ছেলে বাড়ির পেছনের আলপথ দিয়ে যাচ্ছে বাড়ির চৌহদ্দি পেড়িয়ে। আচমকা বাইরে থেকে দরজা ধাক্কানোর শব্দ। ছেলেটা একবার ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে অন্ধকার ভেদ করে পালাতে থাকে। আলোআধারিতে দেখা না গেলেও অনেকটা দিক আন্দাজ করে হাইরোডের দিকে দৌড়ায় সাত্ত্বিক। হাতে বেশী সময় নেই কারণ গ্রামের লোকজন যে কোন সময়ে চলে আসবে।
সামনে অনেকটা পথ। একটু দম নেয় সাত্ত্বিক। মায়ের কথা ভেবে চোখের জল মোছে। আচমকা পেছনে পায়ের শব্দ শুনে প্রাণপণে ছুটতে থাকে সে... ‘বাবু পালা বাবু। জীবন নষ্ট করবি না’।
হাইরোডে এসে কয়েকমিনিটের মধ্যেই ঝাড়গ্রাম যাবার একটা বাস পেয়ে গেল সাত্ত্বিক।
ঝাড়গ্রামে পৌঁছে স্টেশানে এসে কলকাতার ট্রেনে উঠে বসে সে। খিদেও পেয়েছিলো বলে স্টেশানে কিছু খেয়ে নেয়। রাতের ট্রেন বলে অনেকটাই ফাঁকা।
কোথায় পালাচ্ছে গ্রামের ছেলে সাত্ত্বিক?
কি কারণ?
কি হবে সাত্ত্বিকের জীবনে?
জানতে চোখ রাখুন ‘পুরুষ দেহব্যবসা’ ধারাবাহিক
ক্রমশ
