মেয়ে
মেয়ে


লজ্জায় বলে না, কিন্তু জানে। বলার ইচ্ছা ছিল বলা হয়নি। কিভাবে যে বলি? না বলাই থাকে।শেষে বলতে শুনি "তোকে এত বিশ্বাস করতাম😠😠।" মেয়ে বলে "ভুল করেছি বাবা মাফ করে দাও😭।" যে বিশ্বাসটুকু করেন সময়মতো তার বীজ বপন করুন মেয়ের মনে। সহজভাবে বুঝিয়ে বলুন। বাচ্চাদের মনে জ্ঞান ঢুকানো কঠিন না। অনেক বাবা খুব কড়া। ভয়ে তটস্থ করে রাখে মেয়েকে। আর ভাবে আমার মেয়ে আমাকে যে ভয় পায় ও উল্টা পাল্টা কিছু করতেই পারে না। ঐ মেয়েদের জীবন আরো ভয়ানক, ভুল করবে কিন্তু কাউকে বলবে না, সারারাত বালিশ ভেজাবে। ভয় দেখাবেন না, মেয়েকে শেয়ার করার সাহস দিন। প্রতিবাদ করার সাহস দিন।
কিভাবে? কি বলা যায় বা লিখা যায়?
নিম্নোক্ত আইডিয়া নিন, বাড়ান বা কমান, আরো সহজ করুন।
প্রানপ্রিয় মামনি,
বাবা তোমাকে কতটুকু ভালোবাসে তা তুমি জানো। আমি জানি তুমিও আমাকে অনেক ভালোবাস। আজকে তোমার ১৩/১৪/১৫ বছর পূর্ন হলো। তোমার ১৩/১৪/১৫ তম জন্মদিনে আমি তোমার সাথে কিছু কথা বলব। তুমি এখনো বাবার ছোট আদরের বাচ্চা মেয়ে। কিন্তু তুমি হয়ত বুঝতে পারছ তুমি ধীরে ধীরে মেয়ে হয়ে উঠছ। তোমার মনটা এখন দ্রুত চেন্জ হবে। তোমার চিন্তা গুলো তোমার কাছে অনেক গ্রহনযোগ্য মনে হবে, মনে হবে এটাই ভালো। কিন্তু তুমি ভুল করে ফেলতে পারো, তোমার অজান্তের ভুলগুলো তুমি বুঝতে পারবে না। এখন হয়ত তোমার বন্ধুরা তোমাকে পছন্দ করতে শুরু করেছে। তোমার মনেও ভালো লাগে কাউকে। এটা এই সময়ে হয়। কিন্তু এই সময়ের এই আবেগটাকে তোমার কন্ট্রোল করতে হবে। তুমি নিশ্চিন্তে তোমার মনের কথা আমার কাছে বা তোমার মায়ের কাছে শেয়ার করতে পার। এখন তোমার পক্ষে একা নিজের জীবনের কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো জ্ঞান হয় নাই। তাই তোমাকে বিশ্বস্ত কারো পরামর্শেই চলতে হবে। এ ব্যাপারে তোমার বাবা মায়ের চেয়ে বিশ্বস্ত কেউ নেই। তোমার এখন লেখাপড়ার সময় তুমি যদি প্রতিষ্ঠিত হতে চাও তাহলে কখনও তোমাকে বিয়ের ব্যাপারে চাপ দেওয়া হবে না, আমি তোমাকে কথা দিলাম। তুমি যদি বিয়ে করতে চাও তাতেও কোন আপত্তি থাকবে না। সঠিক বয়স হলে তোমার বিয়ের ব্যবস্থা করা হবে। তুমি যেমন ছেলেকে চাও তোমার বাবা মা কে বলো, তারা অবশ্যই তোমার জন্য তেমন ছেলেই খুজবে। মনে রাখবে প্রতিটি বাবা মাই তার মেয়ের জন্য উপযুক্ত একজন রাজপুত্রই খোজে, যে শুধু চেহারায় নয় মনের দিক দিয়েও রাজপুত্র। তবে যখন তোমার যাচাই করার সময় হবে তখন মানে অন্তত ১৮ বছরের পর তুমি একটি ছেলেকে পছন্দ করতে পারো। তোমার পছন্দের ছেলে যদি থাকে তার সাথে কথা বলতে আমাদের আপত্তি থাকবে না। সে অবশ্যই তোমার চেয়ে ৫-৬ বছরের বড় হবে, যাতে সে শুধু তোমার বন্ধু নয় অভিভাবকও হতে পারে। তবে কখনও তার সাথে এমন কোন অনৈতিক কাজ করবে না, যাতে করে আমাদের মতের বিরুদ্ধে তাকে তোমার গ্রহন করতে হয়। কারন এরকম কিছুর পর যখন জানবে সে খারাপ তখন তোমার হাতে কিছু থাকবে না। যতদিন সে তোমাকে স্পর্শ করতে পারবে না, সে তোমার অধীন। স্পর্শ করা মাত্র তুমি তার অধীন। যতই বাহানাবাজি হোক না কেন? সম্মান ধরে রাখ। চলে গেলে সে ভন্ড। বিয়ের আগে ভালোবাসা কথায় সীমাবদ্ধ রাখো। মনে রাখবা তোমার সম্মান তোমার পরিবারের সম্মান।
এমনও হতে পারে তুমি ধোকার স্বীকার হতে পারো। আর এখন অনেক ছেলেই তোমার কাছে তাদের মনের কথা আর আবেগ দেখাবে। তারা কাঁদবে, হাত কাটবে কারন তারা বেশীভাগই আবেগী, তারা যা দেখাবে তোমার কাছে মনে হবে ভালোবাসা, আসলে তাদের মন স্থীর নয়। তারা সঠিক শিক্ষা বঞ্চিতদেন একজন হতে পারে। এসব কিছুতে তুমি ধোকার স্বীকার হতে পারো। আবার তোমারও ভালো লাগতে পারে অনেক। মনে হবে তাকে পেলে আমার জীবন সার্থক। তার জন্য এ জীবন দিয়ে দেব। সে তোমার এই দূর্বলতাকে ব্যবহার করবে, তোমাকে ধোকা দিয়ে চলে যাবে। সারাজীবন কাঁদবে তুমি। এসব কিছু তোমাকে এড়িয়ে চলতে হবে। তোমাকে হতে হবে সবার চেয়ে স্মার্ট। বিশ্বাস রাখতে হবে বাবা মায়ের প্রতি।
বিয়ের ব্যপারে সব সময় হবু শশুড় শাশুড়ির মতামতকে প্রাধান্য দিবে। ছেলে যতই ভালোবাসুক তাদের অমতে বিয়ে করো না। জীবন একদিনের না। তা না হলে স্বামীর ঘরে (সন্তান আর বাবামায়ের মধ্যে) সবসমময় তৃতীয় ব্যক্তি হয়ে থাকতে হবে। যেটা সুখকর নয়।সত্যিকার যে ভালোবাসে সে তার বাবা মাকে নিয়ে এসে তোমার হাত চাইবে।
প্রচুর ভালো বই পড়। বইকে বন্ধু বানাও। জ্ঞানের সাথে থাক। জীবনকে শিখ।