লক্ষবীজের বেগুন
লক্ষবীজের বেগুন


'বুঝলে মৈনাক, এই লক্ষবীজের বেগুন আর খাওয়া যাচ্ছে না...'
বললেন ঘনাদা- চৌধুরী মেসোমশাই, এক মারাঠি পরিবারে নেমন্তন্ন খেয়ে ফেরার পথে। ছোট ছোট বেগুন মহারাষ্ট্রে, তাতে যদি লক্ষবীজ না থাকে পয়সা ফেরৎ।
'বেগুন তো বেগুন পাঁঠা গুলোকে দেখেছ, কেমন ভোঁতকা মুখো...কচি ঘাসই পায় না, তার মাংসের স্বাদ হবে কী করে? কলকাতা ছাড়া খাওয়ার মজা নেই হে...' খুব মনমরা হয়ে বাড়ির পথে চললেন তিনি।
কলকাতা থেকে ঘুরে এসেছেন চৌধুরী মেসো। রবিবারের জমাটী আড্ডায় হাসিমুখে হাঁড়ি ভাঙলেন তিনি।বুঝলে মৈনাক, কাশির বেগুনের বীজ এনিচি, বাড়ির পাশের ফালি জমিটায় লাগিয়ে দোব। এবার শীতে তোমাদের কাশির বেগুন ভাজা, পোড়া খাইয়ে চমকে দোব... বুইলে?'
রোজই একবার করে বেগুনের খেতের সরেজমিনে তদন্ত
করেন তিনি।
'আররে, চারা বেরিয়েছে।'
'সবাই এস, দেখবে ফুল এসেছে বেগুন গাছে।'
বেগুন ধরল, মেসোর বাড়ি সকলের নেমন্তন্ন, ভোঁতকা মুখো পাঁঠার মাংস আর ময়দার লুচি... পুরি না, পুরি দুচক্ষের বিষ।
বেগুন আর বাড়ে না, ছোট অবস্থায়ই কেমন গুটলি মেরে যাচ্ছে।
'মেসোমশাই আর বোধহয় বাড়বে না এই বেগুন, চলুন তুলে ফেলা যাক। মাসিমা, কাল আমরা বেগুন বাসন্তী খাব... আপনার হাতের।
জমায়েত সম্পূর্ণ। কিন্তু সদাহাস্যময় ঘনাদার মুখে হাসি নেই কেন?
মাসিমা একগাদা কাটা বেগুন নিয়ে বসড়... রান্নাবান্নার কোন উদ্যোগই নেই।
ছেলের দল হল্লা মচিয়ে দিল, কি হল খাব কী? ও মাসিমা!
টেবিলের কাছে পৌঁছে দেখা গেল,
আধকাটা হয়ে পড়ে আছে, কাশির বেগুন... লক্ষবীজে সজ্জিত।