Unmask a web of secrets & mystery with our new release, "The Heel" which stands at 7th place on Amazon's Hot new Releases! Grab your copy NOW!
Unmask a web of secrets & mystery with our new release, "The Heel" which stands at 7th place on Amazon's Hot new Releases! Grab your copy NOW!

Aparna Chaudhuri

Drama

3  

Aparna Chaudhuri

Drama

কুট্টুন-৬

কুট্টুন-৬

4 mins
1.1K


নির্মলা কুট্টুনদের স্কুলে একটা চাকরি পেয়েছে। সকাল বেলায় শেখরের সঙ্গেই ওরা বেরিয়ে যায়। তাকুট্টুনকে নিয়ে নির্মলা আগে ফিরে আসে। এসে ঘরের কাজকর্ম সেরে কুট্টুকে নিয়ে পড়াতে বসায়। একুট্টুন প্রি নার্সারিতে পড়ে। ‘b’ এর জায়গায় ‘d’ লেখে, ‘9’ এর জায়গায় ‘p’ লেখে। ফলে যা হবার তাই হয়। সন্ধ্যাবেলার থেকে আর ওদের বাড়ীর আশেপাশে কাক-চিল বসতে পাএইরকমই একটা সন্ধ্যায় যখন নির্মলা ‘সাউন্ড এনার্জি’ দ্বারা নিজের ছেলেকে ‘চতুষ্পদ’ থেকে ‘দ্বিপদে’ রূপান্তরিত করার আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, কলিং বেলটা বেজে উঠলো। দরজায় হাসি মুখে দাঁড়িয়ে মাধুরী ( আসলে ‘সরকার’, কিন্তু হাবে ভাবে ‘দিক্ষিত’) । মাধুরীরা পাশের ফ্ল্যাটে থাকে। বিদেশে পাশাপাশি বাঙালি পরিবার পাওয়া যায় না। কিন্তু নির্মলা এব্যাপারে ভাগ্যবতী। মাধুরীর মা, লতাবৌদি নির্মলাকে খুবই স্নেহ করেন। ওনার বাড়ীতে কিছু ভালোমন্দ রান্না হলে একবাটি নির্মলাদের বাড়ীতেও পৌঁছ“ মাধুরী! আয়...” , ঘাম মুছতে মুছতে বলল নির্মলা।“ নির্মলাদি , মা আমাকে পাঠাল। মা বলছিল , তুমি সারাদিন স্কুল করে ক্লান্ত হয়ে আসো। আর আমি তো গ্রাজুয়েশনের পর এখন কিছুদিন ফ্রি আছি। তুমি বিকালের দিক কুট্টুনকে আমাদের বাড়ী পাঠিয়ে দিও না। আমি ওর হোমওয়ার্ক গুলো করিয়ে দেব“ সে তো ভালো কথা।“


সেই শুরু। কুট্টুন স্কুলের দিনগুলো বিকালে আর রবিবার সকালে ঘণ্টা খানেক বই পত্র নিয়ে মাধুরীর কাছে পড়তে যেত। নির্মলাও একটু জিরিয়ে নিতএর কয়েকমাসের মধ্যেই মাধুরীর বিয়ের ঠিক হয়ে গেলো পল্লব বলে একটি ছেলের সঙ্গে। লতাবৌদি বললেন ,” যতদিন মাধুরী আছে ও আসুক না পড়তেনির্মলা আর ওনার মুখের ওপর কিছু বলতে পারলো না। একদিন কুট্টুন পড়ে এসে নির্মলাকে জিজ্ঞাসা করলো, “মাম্মা ফিয়াঞ্চি কি?“কি? কে বলেছে তোকে এ কথাটা?” অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলো নির্মলা।“ মাধুলী দিদি বলল, যে পল্লব দাদা ওল ফিয়াঞ্চি হয়। জানো! মাধুলী দিদি না......মোবাইল ফোনতাকে হামি দিচ্ছিল।শীতের মিষ্টি রোদ জানলা দিয়ে বিছানায় এসে পড়েছে । মাধুরী তার নতুন নেলপালিশ লাগানো হাতটা সেই রোদে মেলে দিয়ে স্বপ্ন মাখা চোখে তাকিয়ে আছে । রোদের প্রতিফলন পড়েছে তার চোখে মুখে । কতক্ষণ যে এভাবে বসে ছিল সে জানেনা । পল্লবের সাথে বিয়ে ঠিক হবার পর থেকেই তার এরকম হয় মাঝে মাঝে । কিছু সময়ের জন্য সে ভেসে যায় কল্পনার জগতে । এ জগতে কি হচ্ছে তা সে জানতে পারে না । তাই সে জানতে পারেনি যে তার ছাত্র কুট্টু, কখন এসে তার পাশে দাঁড়িয়ে এক মনে তাকে দেখছে অবাক বিস্ময়ে । কুট্টুনের বিস্ময়ভরা চোখের দিকে তাকিয়ে মাধুরী একটু হেসে জিজ্ঞাসা করলো, “ কি রে? কি দেখছিস ?”

কুট্টু সরলভাবে উত্তর দিলো, “তোমাকে খুব থুন্দল দেখাচ্ছে।“

মাধুরী একটু গর্বিত ভাবে জিজ্ঞাসা করে, “ কত সুন্দর ?”

কুট্টুন আবার সরল কণ্ঠে বলে ওঠে, “ থিক একতা বেড়ালের মতো।“


কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে যে ঘটনা স্রোত বয়ে গেলো, তা কুট্টুনের কল্পনার বাইরে। মাধুরী হঠাৎ ‘ভ্যাঁ’ করে কেঁদে ফেলল। তারপর তারস্বরে চেঁচাতে লাগল, “ ও মা! ও মাসী! তোমরা শিগগির এসো, কুট্টুন আমাকে বেড়াল বলল।“ মাধুরীর বিয়ের আর সপ্তাহ খানেক বাকি। তাই বাড়ীতে কাছের আত্মীয়রা যেমন দুই মাসী, এক পিসী, জেঠিমা সবাই এসে গেছেন। কয়েক সেকেন্ড এর মধ্যেই পরিবারের সকলে ওই ঘরটায় মধ্যে জমা হয়ে গনির্মলার ডাক পড়লো । নির্মলা পৌঁছে দেখল কুট্টুন ধরা পড়া চোরের মত গুটি সুটি মেরে এক কোনে দাঁড়িয়ে। আর বাড়ীর সবাই মাধুরীকে সান্ত্বনা দিতে এবং কুটকে বকতে / বোঝাতে ব্যস্ত । নির্মলা বেগতিক দেখে বললেন, “শিগগিরই সরি বল ! “

কুট্টুন ‘সরি’ বলল। 

আর বেশী বাক্য ব্যয় না করে নির্মলাকুট্টুনের হাত ধরে হিড়হিড় করে টেনে ওকে নিয়ে চলে গেল বাড়িতে । পড়তে যাওয়া বন্ধ হল।

“ মাম্মা বেড়াল কি খালাপ?” মিনমিনে গলায় প্রশ্ন কুট্টুর।

“ না খারাপ কেন হবে?” বলল নির্মলা।

“তালে মাধুলী দিদি অত কাঁদলো কেন?”


“ মম...... দেখো বেড়াল তো একটা animal। তাই হয়তো দিদির খারাপ লেগেছে।মাধুরীর বিয়ে খুব ধুমধাম করে হয়ে গেলো । বধু বিদায়ের সময় কুট্টুনকে কোলে নিয়ে নির্মলা দাঁড়িয়ে ছিল। মাধুরী কুট্কে দেখতে পেয়ে ওকে একটু আদর করে সজল চোখে বলল, “ আর কখনো বেড়াল বলবি নাতো?”কুট্টুন মাথা নাড়লো ।

গাড়ীটা রওয়ানা হলে লতা বৌদি আর ওদের বাকি আত্মীয়দের সাথে নির্মলাও লিফটে ওঠার জন্য গিয়ে দাঁড়ালো। মাধুরীর এক বৌদি নির্মলাকে ডেকে বলল,” দিদি আপনার ছেলেটা খুব মিষ্টি। আর কি সুন্দর চোখগুলো একদম হরিণের নির্মলা হেসে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল, কিন্তু আর কিছুই বলা হল না। কুট্টুন হঠাৎ চিল চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করে দিলো। সবাই অবাক। নির্মলা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে জিজ্ঞাসা করলো ,” কি হয়েছে ? কাঁদছিস কেন?”“ ওই আন্তি তা আমাকে হলিন বলল... হলিন তো একটা animal...... আল তুমি... তুমি হাতলে...... তুমি বকলে না......ওকে থলি বলতে বল...... অ্যাঁ... অ্যাঁ... অ্যাঁ। “



Rate this content
Log in