খাই খাই
খাই খাই
মনকে প্রস্তুত করেই সে এসেছে কুয়োতলায়।
শান্ত,স্থির জল। বিকেলের কৃষ্ণচূড়া ভাসছে।চারপাশে কেউ নেই। কে থাকবে? এইমাত্র সে বউ আর তিন মেয়েকে গলা টিপে মেরে এসেছে।
কান্নার শব্দ? মেয়েরা বেঁচে আছে? 'না,ও কিছু না',সে ভাবল। তারপর,গলায় কলসের দড়িটা বেঁধে ঝাঁপ দিল।
জল ঠেলে হাওয়ার বুদবুদ উঠে যাচ্ছে আর সে নেমে যাচ্ছে নিচে। মেয়েগুলো সারাক্ষণ খাই খাই করত। কী করত সে? কাজ ছিল না বহুদিন। মাসের রেশনও চারদিনে শেষ।
অনেকটা নিচে একটা আমলকি গাছ । ছায়ায় বসে আছে তার যুবক বাবা। তাকে দেখেই বলল, 'আয়, এখানে মড়কের ভয় নাই।'
পাশে বসতেই,বাবা বলে চলল,' সে বচ্ছর খরায় চাষ বন্ধ। মহাজন তাগদা দিত। তোকে ফেইলে রেখে,তোর মাকে লিয়া পাইলে এলাম।'
মা একটা পেয়ারা গাছের নিচে রান্না করছিল। মুখ ঘুরিয়ে বলল,'ওইসব বইল না ত।' তারপর,এক থালা ধবধবে সাদা ভাত এনে বলল,'আয়, খাইয়ে লে ভাতটুকু।'
ভাত দেখে তার মনে পড়ল, মেয়েগুলো খাই খাই করত সারক্ষণ।