জামাই আদর
জামাই আদর


গরমের কাঠফাটা রোদ মাথার উপর সূর্যদেব তার ক্রোধ বর্ষন করছে। এই গরমে দিপুর ইচ্ছে ছিল না বাইরে যাওয়ার কিন্তু না গিয়েও পারা যায় না জামাইষষ্ঠী বলে কথা ।
দিপু মাছের দোকান থেকে একটা মোটামুটি আকৃতির একটা রুইমাছ নিল আজকাল যা বাজার ভাল রুই মাছ কিনতেই পপাত প মমার চ অবস্থা ইলিশ তো স্বর্গের পাশের দোকান। দিপু হাটছে আর ভাবছে বাস্তব কত রুড় ভেবেছিল আই পি এস অফিসার হবে আর এখন পুলিশের চাকরির জন্য অনিচ্ছা সত্ত্বেও বিয়ে করে জামাইষষ্ঠী খেতে যাচ্ছে।
এছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না দিপুর দিনমজুর বাপের কাছে পাচ লাখ টাকা খুব বড়
কন্যাদায়গ্রস্ত পিতাও সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছে না হলে দিপুর মত ছেলে পরের জন্মেও পেত কিনা সন্দেহ আছে
স্বশুর বাড়ির কাছে আসতেই কতকগুলি কুকুর ওর পিছু নিল হয়ত জামাই হওয়ার ইচ্ছায় ভাবসাব ভাল না দেখায় দিপু এই রোদে ধুতি গুজে দিল দৌড় গিয়ে একেবারে স্বশুর বাড়ির সদর দরজায় গিয়ে সবে একটু দাড়িয়েছে ওমনি একটা বিড়াল মে আউ মে আউ দিপু রাগ উঠে বল্ল একটু আগেই কুকুর পিছু নিয়েছিল এখন আবার তুই আস্তে চাচ্ছিস দূর হ
দূর থেকে দেখেই বিষমা(দিপুর স্বাশুড়ি) ওর স্বামিকে বলতে লাগল দেখ তোমার সাধের জামাই এয়েছেন ইলিশ আনার মুরোদ নেই এনেছেন রুই তাও চোখেই দেখা যায় না। দিপু কথা গুলি শুনতে পারল না বটে কিন্ত মুখের ভাব দেখে বুঝল তার এখানে আসা মোটেই খুব সুখিকর হয়নি অন্তত তার স্বাশুরির জন্য।
দিপুর বউ ওর জন্য মেঝেতে চট পেতে দিল আর এক গ্লাস সরবত। সরবত খেয়ে দিপু
কিছুটা স্বস্তি অনুভব করল।
অতপর ফাকা কলসি ভরতি করার জন্য শ্বাশুড়ি হাক দেওয়ায় দেবু সটান গিয়ে খাওয়ার পিড়িতে গিয়ে বসল। খাওয়ার পাতে ভাত মুগের ডাল করলা ভাজা মাছের মুড়োঘন্ট আর পটলের ডালনা খেতে খেতে বিষমা জিজ্ঞেস করল তা বাবা তোমার চাকরী হবে তো না আবার আমাদের উল্লু বানাচ্ছ ওই বাড়ির ছেলেটার মত যে সবাইকে ঠকিয়ে খায়,বিষমার কথায় দিপু বড়সড় বিষম খেলল
দিপু ভেবেছিল যে যৌতুকের টাকা দিয়ে ঘুসের টাকা টা হয়ে যাবে কারন ওদের জমিও নেই যে বিক্রি করবে অতপর....
হুশ ফিরল স্বাশুড়ির কথায় আমার হয়েছে পোড়া কপাল মেয়ের কপাল পুড়ল বলে বেকারের সাথে বিয়ে দিয়ে কি আর শান্তিতে থাকা যায় কতকরে বললাম তবুও দিলা বিয়ে এখন বোঝ ঠ্যালা....
দিপুর স্বশুর নির্বাক শ্রোতা। আওয়াজ অন্য ঘর থেকে আস্লেও সব স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে, দিপুর বউ পাখা দিয়ে হাওয়া করে যাচ্ছে। বাটিতে রাখা করলা ভাজা খেতে মনে হল একটু বেশিই তেতো ভাজা হয় ত কম হয়েছে বা কারো আধভাজা কথা ওর মনকে তেতো করেছে।
খাওয়া শেষে পাত ছেড়ে উঠতেই একটা একটাকার কয়েন ওর পকেট থেকে পড়ে মেঝেতে গড়াগড়ি খেতে লাগল যেন নিজের ভাগ্যকে পরীক্ষা করছে হেড না টেল
হাত মুখ ধুয়ে আর ভাল না লাগায় দিপু বাড়ির দিকে পা বাড়াল ওর বউ এগিয়ে দিতে এল এমন সময় পোস্টমাস্টার চিৎকার করে বলতে বলতে আসতে লাগল দিপুদা তোমার এপয়েন্টমেন্ট এসে গেছে । পিছন থেকে ওর স্বাশুড়ি মিস্টি নিয়ে আসল বাবা খাবার পাতের মিস্টি টা তো খেলে না
দিপু সৌজন্যমূলক হাসি দিয়ে চলে এল